মাদকবিরোধী অভিযান: প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

in #esteem6 years ago

বাংলাদেশে মাদক-বিরোধী বিশেষ অভিযানে স্বার্থান্বেষী মহল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর মো. একরামুল হককে হত্যা করিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা এক খোলা চিঠিতে এই অভিযোগ করেছেন।

রোববার রাতে লেখা এই চিঠিতে মি. চৌধুরী একরামুল হককে একজন ত্যাগী নেতা ও আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সঙ্গী হিসেবে বর্ণনা করেন।

"মাদক বিরোধী অভিযানকে যখন দেশের আবালবৃদ্ধবনিতা স্বাগত জানিয়েছেন ঠিক তখনই আপনার এই সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে প্রশাসনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা একাত্তরের দোসররা," চিঠিতে তিনি লেখেন, "তারা ইয়াবাবিরোধী অভিযানের দোহাই দিয়ে আপনার সন্তানকে হত্যা করেছে।"

"যার চাল চুলো নেই, থাকার জন্য বাড়ি নেই, পরিবার ও সন্তানদের লেখাপড়া চালানোর জন্য যাকে নির্ভর করতে হয় ভাইদের উপর, বন্ধুদের উপর; আওয়ামী লীগকে ভালবেসে জনগণকে সেবা করতে গিয়ে দেনার দায়ে যার সব শেষ তাকে বানানো হচ্ছে ইয়াবা গডফাদার! হায় সেলুকাস।"

তবে এসব অভিযোগের ব্যাপারে তাৎক্সণিকভাবে আইনশৃঙ্খলারাক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্য জানা যায়নি।

গত ২৬শে মে গভীর রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মিঠাপানির ছড়া এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে এক 'বন্দুকযুদ্ধে" টেকনাফের তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হন।

র‍্যাব বলছে, সেখান থেকে একটি বিদেশি রিভলবার, পাঁচটি গুলি ও ১০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

একরামুল হকের মৃত্যু সম্পর্কে র‍্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১০/১১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় তার নাম ছিল বলে র‍্যাব দাবি করেছে।

কিন্তু একরামুল হকের মৃত্যুর খবর প্রচারের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।

স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িতরা বলছেন, মি. হক মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন না। সেটা হলে তার আর্থিক অনটন থাকতো না।

টেকনাফ থানার ওসি রনজিৎ কুমার বড়ুয়া জানান, একরামুল হকের বিরুদ্ধে ইয়াবাসংক্রান্ত কোনো মামলা নেই।

অবৈধ মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে র‍্যাব-পুলিশের অভিযানে গত দু'সপ্তাহে প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছে।

কোন নিহতের সংখ্যা এখন প্রায় একশ'র কাছাকাছি। মাদক বিরোধী অভিযানে নিহত এবং গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

'এসব ক্রসফায়ার' বা 'বন্দুকযুদ্ধকে' বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এর তীব্র সমালোচনা করছে।

সরকারের পক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এই অভিযানকে সমর্থন করে বক্তব্য তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, তরুণ সমাজকে সর্বনাশা ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

এই অভিযানে দেশের মানুষ 'খুশি' হয়েছে বলেও তারা দাবি করছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 57258.35
ETH 3065.68
USDT 1.00
SBD 2.33