জেনারেল রাইটিং : দিন শেষে আপনি অপরাধী।
🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ক্রিয়েটিভ রাইটিং লিখে শেয়ার করবো। আমার পোস্টর বিষয় হলো "দিন শেষে আপনি অপরাধী "। আমাদের সমাজে এখন এই ধরনের বিষয়টা অনেক বেশি দেখা যায়। আপনি নিজের সব কিছু দিয়ে সবার জন্য করে যাবেন কিন্তু তার বিনিময়ে আপনি কোন কিছুই পাবেন না। সবাই আপনাকে ভুল বুঝে নানা রকম মতামত প্রকাশ করতে থাকবে।
আমরা অনেক সময় দেখি কেউ একজন সবার জন্য নিঃস্বার্থভাবে কিছু করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অথচ শেষ পর্যন্ত তার প্রাপ্য স্বীকৃতি বা কৃতজ্ঞতা পায় না। বরং মানুষ তার ভুল খোঁজে, অভিযোগ তোলে বা তাকে দোষারোপ করে। এটি কেন হয়? এর পেছনে মানসিক, সামাজিক ও পারিবারিক নানা কারণ রয়েছে।
১. মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে যায়
যখন কেউ নিয়মিত ভালো কিছু করতে থাকে, মানুষ সেটাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়। প্রথমবার কেউ সাহায্য করলে কৃতজ্ঞতা জানায়, দ্বিতীয়বার ধন্যবাদ দেয়, তৃতীয়বার সেটাকে তার দায়িত্ব বলে মনে করে। আর চতুর্থবার যদি সেই সাহায্য না আসে, তখন অভিযোগ করে! ধরো, তুমি প্রতিদিন বন্ধুর জন্য নোট তৈরি করে দাও। প্রথমে সে খুশি হয়, কিন্তু ধীরে ধীরে এটা তার কাছে স্বাভাবিক হয়ে যায়। একদিন তুমি যদি নিজের কাজে ব্যস্ত থাকো এবং নোট না দাও, তখন সে হয়তো অভিমান করবে বা বলবে তুমি তো বদলে গেছো এভাবেই মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে যায় কিন্তু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কমে।
২. ত্যাগকে সবাই বোঝে না
অনেক সময় আমরা যা করি, তার মূল্য অন্যরা বোঝে না। তারা শুধু ফলাফল দেখে, কিন্তু সেই ফলাফলের পেছনের পরিশ্রম ও ত্যাগ দেখতে পায় না। পরিবারের একজন ব্যক্তি সবার খেয়াল রাখে, নিজের প্রয়োজনকে ভুলে যায়। কিন্তু যদি কোনো একদিন সে নিজের জন্য কিছু চায়, তখনই তাকে স্বার্থপর বলা হয়। এই সমস্যাটা পরিবার, কর্মক্ষেত্র, এমনকি বন্ধুত্বের মধ্যেও দেখা যায়।
৩. ভুল খোঁজার প্রবণতা
কিছু মানুষ অন্যের দোষ ধরতে ভালোবাসে। কেউ শত ভালো কাজ করলেও, তারা একবারের ভুলটাকেই বড় করে দেখে। অফিসে কেউ নিয়মিত ভালো কাজ করলে সেটা স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু একদিন যদি সে ভুল করে, তখন সবাই সেটা নিয়ে আলোচনা করে।এটাই মানুষের মানসিকতা ভুল খোঁজা সহজ, প্রশংসা করা কঠিন।
৪. নিজের কথা না ভাবলে, অন্যরাও ভাববে না
যদি কেউ নিজের প্রয়োজন বা ইচ্ছাকে সবসময় অন্যের পেছনে ফেলতে থাকে, তাহলে মানুষ সেটাকে স্বাভাবিক মনে করতে শুরু করে। ফলে, সেই ব্যক্তি যখন একবার নিজের জন্য কিছু করতে চায়, তখনই সে অপরাধী হয়ে যায়! একজন মা সারা জীবন সন্তানদের জন্য ত্যাগ করে। একদিন সে নিজের জন্য কিছু করতে চাইলে সন্তানরা হয়তো বলবে এখন কেন নিজের কথা ভাবছো?
কীভাবে এই পরিস্থিতি সামলানো যায়?
প্রত্যাশার সীমা নির্ধারণ করা সবসময় অন্যকে খুশি করতে গেলে নিজের গুরুত্ব হারিয়ে যায়। তাই শুরু থেকেই ভারসাম্য রাখা দরকার। নিজের মূল্যায়ন করা অন্যরা প্রশংসা করুক বা না করুক, নিজের কাজের জন্য নিজেকে সম্মান দিতে হবে। না বলতে শেখা সবসময় সবার জন্য সবকিছু করা সম্ভব নয়। প্রয়োজনে স্পষ্টভাবে না বলা দরকার। নিজের জন্য সময় রাখা শুধু অন্যদের জন্য নয়, নিজের জন্যও কিছু করতে হবে। এতে আত্মতৃপ্তি থাকবে এবং হতাশা আসবে না।
উপসংহার
দিন শেষে আপনি অপরাধী এই অনুভূতি তখনই আসে, যখন আমরা সবকিছু করার পরও মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারি না। কিন্তু আসল সত্য হলো, সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়। তাই নিজের মূল্যায়ন নিজেকেই করতে হবে এবং নিজের প্রয়োজনকেও গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যের ভালো করা ভালো, কিন্তু নিজের ভালো রাখাটাও অপরিহার্য।
সমাপ্ত
পোস্টের বিষয় | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
---|---|
পোস্টকারী | মোঃ আশিকুর রহমান |
ডিভাইস | গ্যালাক্সি এ ১৫ |
লোকেশন | পাবনা |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ভাই আমাদের সমাজের মানুষ শুধু নিজের স্বার্থ হাসিলের ধান্দায় থাকে। আপনি মানুষের জন্য যত ভালো কাজ করুন না কেন দিনশেষে আপনি সবার কাছে অপরাধী হয়ে যাবেন আর এটা চরম বাস্তবতা। সমাজের বাস্তব কেন্দ্রিক কিছু কথা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জ্বি ভাই আপনি বেশ ভালো বলেছেন ভাই আপনার মূল্যবান অভিমত পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
একদম মনের মত কথা ছিল। যত ভালো কিছু করা হোক না কেন হাজার ভালোর মধ্যে একটু দোষ থাকলে হয়ে যেতে হয় অপরাধী। মানুষ ভালো কিছু চোখে দেখে নাই কিন্তু মন্দ জিনিস না থাকলেও খুঁজে খুঁজে খুঁটে খুঁটে বের করে খারাপ বানিয়ে ফেলে। আর এটাই কিন্তু বাস্তবতা।
জ্বি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন ভাই ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।
পরিবারে এমন কিছু মানুষ থাকে যারা নিজের জন্য না করে সবার জন্য করে যাই। বিশেষ করে তাদের ত্যাগের বিষয়গুলো সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু দিনশেষে দেখবেন সেই ব্যক্তি অপরাধ হয়ে যায়। যখন মানুষ তার সুযোগ সুবিধা আগের মত দিতে পারে না। তখন তার থেকে সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়। এক সময় দেখবেন সেই ব্যক্তি সবার কাছে অপরাধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কথাগুলো আপনি খুবই সুন্দর লিখেছেন।
ধন্যবাদ আপু আপনার প্রসংশা মুখরিত মতামত শেয়ার করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া পরিবারের মধ্যেও অনেক মানুষ থাকে যারা শুধু কাজ দেখে মনের মধ্যে কার ভালোবাসা অনুভূতি দেখেনা। মাঝে মাঝে এমন মনে হয় যাদের জন্য এত কিছু করছি তারাই যদি আমার না হয় তাহলে এগুলো করে কি লাভ। তখন নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়। যারা মানুষের ভুল খোঁজে সব সময় মানুষের দোষ ত্রুটি খেয়াল করে এই ধরনের মানুষগুলো আমার একদমই পছন্দ না। আপনি কয়েকটা পয়েন্ট লিখেছেন খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনি বেশ ভালো বলেছেন আপু আপনার মতামত পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু ভালো থাকবেন।
আপনি একজনকে অসংখ্য সাহায্য করবেন কিন্তু একবার করতে পারবেন। ব্যস ঐ একবারের জন্যই আপনি খারাপ হয়ে যাবেন। এটা প্রকৃতির নিয়ম ভাই। এবং ব্যাপার গুলো আপনি দারুণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন। দারুণ লিখেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে।।
শুকরিয়া ভাই আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।
একেবারে সুন্দর এবং বাস্তবিক একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আমরা যা কিছুই করি না কেন এবং আমরা যদি মানুষের সাহায্য করতে করতে আমাদের সমস্ত কিছু বিলিয়ে দেই তারপরও মানুষজন এই সাহায্যের কথা কখনো বুঝতে পারবে না৷ তারা এক সময় বলবে যে তাদের জন্য আমরা কি করেছি৷ সব সময় তারা এরকম করতে থাকবে৷ আজকের আপনার এই সুন্দর পোস্টটি পড়ে খুব ভালোই লাগছে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে৷
শুকরিয়া ভাই এত চমৎকার ভাবে আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।