আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?’
‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?’-কবি লাইন দুটো কেন লিখেছেন, তা বুঝলাম পবন সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর। সাক্ষাৎস্থল উত্তরার একটি পার্ক। ভোরে সেখানে হাঁটতে গিয়ে ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয়। বয়স হয়েছে বেশ। সত্তরের কাছাকাছি। এই বয়সে কথা বলার এত অ্যানার্জি কোথায় পান, তা জানা নেই।
ইট দিয়ে সযত্নে ‘ওয়াকিং ট্র্যাক’ নির্মাণ করা পার্কে ভোরবেলায় যাই নিজেকে সতেজ করতে। রোজ সেখানে পবন সাহেব আমাকে খুঁজে বের করবেনই এবং নানা কথা বলে মস্তিষ্ক কিছুটা বিগড়ে দেবেন। আমার দেখা সমস্ত মানুষ থেকে লোকটি একদমই আলাদা! কিন্তু কোনদিক থেকে আলাদা, তা এখনো খুঁজে বের করতে পারিনি।
সবচেয়ে বেশি বিরক্ত লাগে পবন সাহেবের ‘আগ্রহ’ দেখে। এই বয়সী একজন মানুষের এত ‘আগ্রহ’ থাকে কীভাবে? বয়স বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে মানুষের মেধাশক্তি, স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে; এই প্যাটার্ন অনুযায়ী আগ্রহশক্তিও কমার কথা। কিন্তু পবন সাহেবের আচরণ দেখে মনে হয়, এই গ্রহের সমস্ত বিষয়েই তার মস্ত আগ্রহ।
আমি যখন পার্কের মাঝখানের মাঠের সবুজের দিকে তাকিয়ে চোখ জুড়াতে থাকি, পরিসীমার গাছের পাতার রং দেখে মস্তিষ্ক শীতল করতে থাকি এবং ভোরের স্নিগ্ধ নীল আকাশ দেখে হৃদয় প্রশান্ত করতে থাকি, তখন পবন সাহেব পাশ থেকে ভ্যাজর ভ্যাজর করে বলতে থাকেন- কোন প্রজাতির পাখি ডেকে উঠল, কোন পাখি ঝগড়া করছে বা কোন বিরল পাখিটা কঁকিয়ে উঠল! তখন বলতে ইচ্ছা হয়- পাখি নিয়ে এত আগ্রহ থাকলে ট্র্যাকে না হেঁটে ডালেডালে পাখিদের সঙ্গে ওড়াউড়ি করুন না। পাখিসমাজও আনন্দিত হবে; আমিও বাঁচব।
Upvoted and followed u 👍