সারা বিশ্বে একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন সম্ভব (আমাদের হারাম দিয়ে শুরু আর হারাম দিয়ে শেষ)
প্রত্যেক বছরই পবিত্র মাহে রমজান এবং ঈদ আমাদের দেশে সৌদী আরবের ১/২ দিন পর পালন করা হয়, যা কোন জ্ঞানী বা বিবেকবান মানুষের জন্য শোভনীয় নয়। এমনকি এতে মুসলিম উম্মাহর ভ্রাতৃত্ববোধ যেমন বিনষ্ট হচ্ছে, তেমনি তা পবিত্র কোরআন-হাদিসেরও পরিপন্থী। অথচ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা সারা বিশ্বে একই দিনে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করে থাকে। যেমন খৃষ্ঠানরা ২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিনসহ অন্যান্য সকল অনুষ্ঠানাদি সারা বিশ্বে একই দিনে পালন করে থাকে। শুধু মাত্র আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতা, অজ্ঞতা ও মত বিরোধের কারণে মুসলিম ঐক্য বিনষ্টসহ মুসলমানদের মধ্যে নানা দলের শুধু সৃষ্টিই হচ্ছে না, ধর্ম-কর্ম করেও কোন সুফল পাচ্ছি না।
আমরা ভাবি বাংলাদেশের সীমানায় চাঁদ দেখা না গেলে রোজা বা ঈদ পালন করা যাবে না। অথচ দেশের ভৌগলিক সীমারেখা মানুষের সৃষ্টি। আর সারা পৃথিবীর জন্য চাঁদ তো একটিই। ধর্মের বিধান মতে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে এবং প্রাপ্ত বয়স্ক দু’জন মুসলমান সাক্ষ্য দিলে সারা পৃথিবীর সকল মুসলমান রোজা বা ঈদসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে কোন বাধা নেই।
আর ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সৌদী আরবে চাঁদ দেখাসহ তাদের রোজা, হজ্ব, ঈদ পালনের খবর সরাসরি দেখা এবং শুনার পরও তা মানছি না। আবহাওয়া খারাপ থাকলে চাঁদ কি আকাশে দেখা যাবে? চাঁদ কি শুধু দেখার জন্যই? আর চাঁদ দেখা না গেলে কি রোজা বা ঈদ পালন করা যাবে না? আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন- আমি চন্দ্র এবং সূর্যকে সৃষ্টি করেছি সময় গণনা করার জন্য। শুক্রবারে সৌদী আরবে জুম্মাহর নামাজ হয়, কিন্তু আমরা একদিন পরে শনিবারে জুম্মাহর নামাজ পড়ি না কেন? এ কেমন ধর্মান্ধতা? শুধু মাত্র রোজা এবং ঈদের বেলায় কেন সৌদী আরবের ১/২ দিন পর করতে হবে?
সৌদী আরবের সাথে বাংলাদেশ সময়ের ব্যবধান প্রায় ৩ ঘন্টা। কাজেই কিছু সময়ের ব্যবধানে একই দিনে সারা বিশ্বে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালনে বাধা কোথায়? আর এ ৩ ঘন্টা সময়ের ব্যবধানের কারণে আমরা সৌদী আরবের ১/২ দিন পর ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন কি যৌক্তিক? বিষয়টি ভেবে দেখার দাবী রাখে। রোজার দিনে পানাহার করা যেমন হারাম, তেমনি ঈদের দিনে রোজা রাখাও হারাম। কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা সৌদীতে যখন রোজা পালন করে, তখন আমরা পানাহার করি। আবার সৌদীতে যখন ঈদ পালন করে, তখন আমরা রোজা রাখি। অর্থাৎ আমরা হারাম দিয়ে শুরু করি, আর হারাম দিয়ে শেষ করি। যার ফলে ধর্ম-কর্ম করেও কোন সুফল পাচ্ছি না।
-----------০০০-----------