কক্সবাজারের কাহিনি আমার সাথে
কক্সবাজারগামী এসি বাসে যাত্রী কেবল চারটি প্রাণী – আমি, আমার সমবয়সী একটি অচেনা ছেলে, একজন বয়স্ক ব্যক্তি আর বাসের ড্রাইভার। আমি বসে আছি সামনের দিকের একটা সিটে। আমার ঠিক সামনের সিটেই বসে আছে বুড়ো লোকটা, ইতিমধ্যে নাক ডেকে ঘুমানো শুরু করেছে। আর একটা সমবয়সী ছেলে বসে আছে বাসের মাঝামাঝি বিপরীত দিকের সারিতে। এইছাড়া সম্পূর্ণ বাস খালি! ভাবা যায় ব্যাপারটা? তিন জন যাত্রী নিয়ে গেলে তো বাসের তেলের খরচই উঠবে না। লোকজন কি কক্সবাজার ভ্রমণ বয়কট করলো নাকি?
অবাক হওয়ার কিছু নেই! বাসে যাত্রী নেই, তার মানে এই নয় যে বাসের টিকিট বিক্রি হয়নি! আসলে এক একান্নবর্তি ফ্যামিলি জ্ঞাতি গুষ্টি সবাই মিলে বাসে চড়ে কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। তারা বাসের তিনটা বাদে সবগুলো টিকিট কিনে ফেলেছিল। কিন্তু তাদের কোন এক আত্মীয় মারা গেছে গেছে বলে যাত্রাটা ক্যানসেল হয়েছে। আর খালি বাসে কক্সবাজার যাওয়ার রেয়ার সুযোগ মিলেছে আমাদের তিন জনের – আমি, ঐ অচেনা ছেলে আর বুড়ো লোকটার।
আচ্ছা! বার বার অচেনা ছেলে বলছি কেন? পরিচিত হয়ে নিলেই তো পারি! এত দূরের রাস্তা কি আর এভাবে নিভৃতে একা যাওয়া যায়? হাতঘড়িতে সময় দেখলাম আমি- রাত মাত্র নয়টা বাজে। এখন ঘুমানোর চেষ্টা করেও লাভ হবে না! আমি সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। মাঝখানের এক সারিতে জানালার পাশের সিটে বসে আছে আমার সমবয়সী একটি ছেলে। আমি তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম, “এক্সকিউজ মি ভাইজান। আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি”।
ছেলেটা কানে হেডফোন লাগিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিল। হঠাৎ আমার গলা শুনে চমকে উঠল। কান থেকে হেড ফোন খুলে বলল, “জি? আমাকে কিছু বলছেন?”