আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-০৭

in #blog20 hours ago

আসসালামু আলাইকুম
প্রিয়, পাঠকগণ,

লম্বা দেহটা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে খানিকটা; হাড়ভাঙা খাটুনি আর স্বামীর ঠ্যাঙানিতে শরীরটা গেছে ভেঙে। একেবারে নিঃশব্দে চলাফেরা নড়াচড়াকরে একপাশে একটু কাৎ হয়ে, যেন, সর্বদাই কিসের সঙ্গে ধাক্কা খাবে এমন একটা ভয়। চওড়া লম্বাটে ফোলা ফোলা কোঁচকানো মুখ। তাতে জ্বলজ্বল করছে একজোড়া ঘন ভীরু আর্ত চোখ, বস্তির আর দশটা মেয়ের মতোই। ডান ভুরুর ওপরদিকে একটা গভীর কাটা দাগ থাকায় ভুরুটা একটু ওপর দিকে টানা। মনে হয় ডান কানটাও বাঁ কান থেকে কিছু ওপরে। তার ফলে, সর্বদাই যেন উদ্বেগের সঙ্গে কানখাড়া করে আছে এমনি একটা ভাব মুখে। ঘন কালো চুলের ফাঁকে ফাঁকে শাদার রেখা ঝিলিক দিয়েছে। সব মিলিয়ে কোমল, বিষণ্ণ, ভীরু চেহারা...

গাল বেয়ে চোখের জল গড়িয়ে পড়ে মায়ের। ছেলে আস্তে আস্তে বলল: 'কেঁদো না মা। একটু জল দাও।' 'দাঁড়া, বরফ দিয়ে জল নিয়ে আসি...'

IMG20240808180811.jpg

মা ফিরে এসে দেখল পাভেল ঘুমিয়ে পড়ছে। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ। টিনের বাটিটা কাঁপে থর্ করে বরফের টুকরোগুলো ঠুনঠুন করে বাজে। বাটিটা টেবিলের উপর নামিয়ে রেখে মা হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল আইকনগুলোর সামনে। মাতাল জীবনের কোলাহল আছড়ে পড়ছে জানালার শার্সির গায়ে। হৈমন্তী সন্ধ্যায় স্যাঁতসেঁতে আঁধারে অ্যাকর্ডিয়নের সজোর আওয়াজ। কে একজন হেঁড়ে গলায় গান ধরেছে। কুৎসিত ভাষায় খিস্তি করছে আরেকজন, শোনা যাচ্ছে মেয়েদের ক্লান্ত বিরক্ত গলা... ভাসভদের ছোট্ট বাড়িখানার

আবহাওয়া এখন আগের চেয়ে অনেক শান্ত সংঘত। অন্য বাড়িগুলোর চাইতে কেমন যেন একটু আলাদা রকম। পাড়ার একধারে ওদের বাড়ি, জলার ধার ঘেঁষে একটা উঁচু ঢালুর উপর। বাড়িখানার প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ জুড়ে রান্নাঘর, তাতে পাতলা পার্টিশন দিয়ে আলাদা করা একখানা ছোট ঘর, সেখানে থাকে মা। বাকি অংশে দুটো জানালাওলা একটা সমকোণ ঘর, এক কোণে পাভেলের বিছানা আর সামনের দিকে একটা টেবিল আর খান দুই বেঞ্চি। আসবাবের মধ্যে গোটা কয় চেয়ার, একটা ছোট্ট আয়নাওলা ড্রেসিং টেবিল, কাপড়চোপড় রাখার জন্য একটা ট্রাঙ্ক, দেয়ালে একটা ঘড়ি, আর এক কোণায় রাখা দুটো আইকন।

IMG20240808180758.jpg

For work I use:


মোবাইল
realme C25s
ফটোগ্রাফার
@dreamlife10
লোকেশন
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
মাঠে
পাভেলের চালচলনও বয়সী ছেলেদের মতোই। একটা অ্যাকর্ডিয়ন, কড়া ইস্ত্রির খড়খড়ে শার্ট, জমকালো টাই, গালশ, ছড়ি- সব কিনে এনেছে। সন্ধেবেলায় আড্ডায়- যায়, নানা-রকমের নাচ শেখে, রবিবার ভদ্‌ক্কা খেয়ে মাতাল হয়ে বাড়ি ফেরে। কিন্তু ভদ্‌ক্কা ওর সয় না। সোমবার ঘুম ভাঙে মাথা- ধরা, বুক-জ্বালা, ফ্যাকাশে মুখ আর সারা দেহে যন্ত্রণা আর অবসাদ নিয়ে। একদিন মা জিজ্ঞেস করল, 'কিরে, কাল রাত খুব ফুর্তি করলি?' মুখ বেজার করে তেতো স্বরে জবাব দিল পাভেল, 'ছিঃ, আর বলো না। এর চেয়ে মাছ ধরা ভালো। কিম্বা একটা বন্দুক কিনে শিকার করা।

চলবে..........

ধন্যবাদ জানিয়ে আজ এখানে শেষ করছি। দেখা হবে আগামী পর্বে। আল্লাহ হাফেজ।।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60569.85
ETH 2584.47
USDT 1.00
SBD 2.69