আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-২৬
প্রিয়, পাঠকগণ,
মাঝে মাঝে ওরা আনন্দে যেন ছেলেমানুষের মতো নাচতে থাকে। সাধারণত তা হয় খবরের কাগজে বিদেশের শ্রমিকদের খবর পড়ে। ওদের চোখ থেকে যেন। খুশির ফুলকি ঝরতে থাকে। প্রাণ খুলে হেসে, পরস্পরের পিঠ চাপড়ে এক কাণ্ড করে তোলে। মা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
কেউ চ্যাঁচায়, 'শাবাশ জার্মান ভাইরা, শাবাশ!' নেশার আনন্দে যেন চ্যাঁচায়। আবার একদিন হয়তো আওয়াজ ওঠে, 'ইতালির মজদুর জিন্দাবাদ!' অচেনা দূরের বন্ধুদের কাছে এ অভিনন্দন পৌঁছয় না। ভাষাও জানা নেই। তবু ওদের মনে হয় সেখানে গিয়ে পৌঁছেছে ওদের আওয়াজ আর উচ্ছ্বাস। না-বোঝা ভাষায়ও বোঝাবুঝি হতে বাকি থাকে না।
একদিন খখল কথা তুলল, 'চল না একটা চিঠি লিখে দিই।' ওর চোখে
বিশ্বছাওয়া ভালোবাসা, 'তাহলে ওরা জানবে, এই রাশিয়াতেও ওদের বন্ধু আছে যারা একই ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে, একই লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে পথ চলছে, যারা ওদের জয়ে আনন্দিত।'
হাসিমুখে, স্বপ্নাচ্ছন্ন লোকের মতো ওরা ইংরেজ, ফরাসি, সুইডেনবাসীদের কথা বলে। যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু সব, ভালোবাসার জন। তাদের ওরা ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, একই দুঃখ আনন্দের অংশীদার সব।।
সারা দুনিয়ার শ্রমিকের একাত্মবোধ জন্ম নিল ছোট্ট ঘরখানার বন্ধ হাওয়ার মধ্যে। সবায়ের মন একসূত্রে বাঁধা পড়েছে, মা'র মনেও তার ছোঁয়াচ লাগে। মা বুঝল না, কী এই ভাবনা। তবু তার নবীন শক্তি, আশা আর আনন্দ মাকে যেন নতুন জীবন দিয়ে গেল।
একদিন খখলকে বলল মা, 'তোমরা সব কী বল তো! দুনিয়াসুদ্ধ সব্বাই তোমাদের দোস্ত- কোথায় ইহুদি, কোথায় আরমানি, আর কোথায় অস্ট্রিয়ার মানুষ। সক্কলের সুখ দুঃখই তোমাদের আপন!'
'ঠিক বলেছেন নেক্কো। একেবারে ঠিক। আমাদের সবার হাসিকান্না এ
For work I use:
মোবাইল |
realme C25s |
ফটোগ্রাফার |
@dreamlife10 |
লোকেশন |
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
মাঠে |
হয়ে গেছে। দোস্ত আর দুশমন। সারা দুনিয়ার যত শ্রমিক সবাই আমাদের বন্ধু, আর বড়লোক আর সরকারের দল আমাদের শত্রু। দুনিয়ার দিকে ভালো করে তাকালে বুঝি কত শ্রমিক আমরা আছি সারা পৃথিবীতে, আর কী শক্তি আমাদের। সে দেখে আনন্দের সীমা থাকে না, প্রাণের মধ্যে স্রেফ ছুটির হাওয়া বয়। জার্মান, ফরাসি, ইতালির মানুষ-জীবনের দিকে তাকিয়ে সকলের ওই কথাই মনে হয়। আমরা সব এক মায়ের ছেলে-সেই মা হল এই এক দুর্নিবার ভাবনা, সারা দুনিয়ার শ্রমিক ভাই ভাই। ওই আমাদের অক্ষয়-মন্ত্র। ওই মন্ত্র আমাদের বুকের বল, প্রাণের আগুন। ন্যায়ের আকাশে ওই সূর্যই জ্বলছে ঝল্মল্ করে। সেই আকাশটা কোথায়, জানেন নেক্কো? শ্রমিকের মনে, এই এইখানে। সমাজতন্ত্রী হলেই, সে নিজেকে যাই বলুক না কেন, সে আমাদের ভাই। এক ভাবনায় বাঁধা সত্যিকার ভাই। কালকের, আজকের চিরকালের ভাই।'
শিশুর মতো সরল অথচ দৃঢ় এই বিশ্বাস তাদের মধ্যে বেড়ে ওঠে; দিনে দিনে আরো তার মহিমা বাড়ে। একটা বিরাট শক্তি হয়ে ওঠে। মা যখন তাকে
চলবে..........