বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর হাত ধরে প্রাণীজগতে নতুন দুই অমেরুদণ্ডী প্রাণী

in #bangladesh6 years ago

বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর হাত ধরে এবার প্রাণীজগতে যোগ হলো আরো দুই নতুন অমেরুদণ্ডী প্রাণী। এগুলোর নামকরণ করা হয়েছে যথাক্রমে- নিউমেনিয়া নোবিপ্রবিয়া ও অ্যাররেনারুস স্মিটি।


image sources
এর মধ্যে ‘নিউমেনিয়া নোবিপ্রবিয়া’ নামটি দেশের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এর নামে নামকরণ করা হয়। আর ‘অ্যাররেনারুস স্মিটি’ নামক অমেরুদণ্ডী প্রাণীটির নামকরণ করা হয় নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত একারোলজিস্ট হ্যারি স্মিথ এর নামে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়। নতুন এ দুটি প্রাণীর সহআবিষ্কারক হলেন নোবিপ্রবি মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন। এর সঙ্গে সহগবেষক ছিলেন একারলজিস্ট ড. ভ্লাদিমির, ভারতের টাপাস, নোবিপ্রবি’র কৃতি শিক্ষার্থী মো. সাইফুল ইসলাম এবং পোল্যান্ডের ড. আন্দ্রেজেঝ। চারটি দেশের পাঁচজন গবেষকের সমন্বিত গবেষণার সাফল্য হলো সম্পূর্ণ নতুন দুটি প্রজাতির আবিস্কার।

প্রজাতি দুটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্যে গবেষণার ফলাফল যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও নিউজিল্যান্ড থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সিস্টেমেটিকস’ ও ‘এ্যকারোলজি’তে পাঠানো হয়, যা ১৫ মে তারিখে প্রকাশিত হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে।

গবেষণার বিবরণে জানানো হয়, গত বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ড. বেলাল হোসেন নোয়াখালীর বিভিন্ন পুকুর, খাল এবং নদী থেকে মাইটসের নমুনা সংগ্রহ করেন। এতে সঙ্গী হন তারই ছাত্র নোবিপ্রবি মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের মো. সাইফুল ইসলাম।

উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী হতে সংগৃহিত নমুনা প্রথমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে সনাক্ত করার পরে ফলাফলের জন্য মধ্য ইউরোপের দেশ মন্টেনিগ্রোতে গবেষক ড. ভøাদিমির এর কাছে পাঠানো হয়। ড. ভ্লাদিমির নমুনাগুলো চুড়ান্তভাবে সনাক্ত করেন ও সিদ্ধান্তে উপনীত হন।

মাইটস দেখতে কিছুটা মাকড়সার মতো, এরা প্রাণীজগতের আর্থোপোডা পর্বের একারিয়া বর্গের অন্তর্গত। ড. বেলাল ও তার গবেষকদলের আবিষ্কৃত প্রাণী দুটি উক্ত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন তাই এরাও আর্থোপোড়া পর্বের একারিয়া বর্গের অন্তর্গত প্রাণী। এদের আকার ২/৩ মিলিমিটার, দেখতে হাল্কা লাল ও হলুদ বর্ণের হয়। দুটি শুঁড় ছাড়াও এদের চার জোড়া সন্তরণ পা থাকে। এরা সাধারণত পুকুর, নদী বা খালের পানির উপরে স্তরে ভাসমান উদ্ভিদের সাথে ঝুলে থাকে। খাবার হিসেবে উদ্ভিদকণা গ্রহণ করে। তবে লার্ভা অবস্থায় এরা অন্য জলজ প্রাণীর দেহে পরজীবী হিসেবে বাস করে এবং ওই প্রাণী থেকেই খাবার সংগ্রহের কাজ করে থাকে। এরা জীবজগতের খাদ্যচক্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এ সম্পর্কে ড. বেলাল বলেন, প্রাণীজগতের প্রতিটি প্রাণীই ইকো সিস্টেমে তথা খাদ্যচক্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এদের একটির অনুপস্থিতিতে খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙে পড়ে, ফলে ইকো সিস্টেম তার স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জলরাশি অত্যন্ত জীব বৈচিত্রপূর্ণ। গবেষণার অপ্রতুলতা, মানবসৃষ্ট দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবিস্কারের আগেই অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।’

Would you like to add some points?

Then comment And also Follow Me

Sort:  

Very well describe

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.034
BTC 63900.40
ETH 3140.82
USDT 1.00
SBD 3.98