ছুটির দিনে গ্রামের বাড়ি এসে সবাইকে লিট্টি চোখা বানিয়ে খাওয়ালাম

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,


সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।


IMG-20250516-WA0031.jpg







আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।



গরমের ছুটিতে প্রতিবারের মতো এবারেও এসেছি গ্রামের বাড়ি। আর আমি বাড়ি এলেই আমার হাতের রান্না খাওয়ার যেন ধুম পড়ে যায়৷ অথচ প্রতিবারই ভাবি বাড়ি এসে একটু রেস্ট করব বা নিজের মতো ঘুরব। সে সব আর হয় না।

IMG-20250516-WA0034.jpg

বেশ কিছু দিন হল এসেছি। এদিক ওদিক ঘুরছিও। প্রচন্ড গরম তাই এবার বিশেষ কিছু বানাইনি৷ আজ ভাবলাম সবাইকে লিট্টি চোখা বানিয়ে খাওয়াই। লিট্টি চোখা বিহারিদের খাবার। আমি শিখেছি প্রবাসী বন্ধুদের থেকে। আর বেশ স্বাস্থ্যকর খাবারও।

সন্ধের দিকে আমার বৌদি সুন্দর করে আটা মাখল। লিট্টির আটা তে কোন ময়ান লাগে না। অল্প নুন হলেই চলে তবে আটাকে খুব ভালো করে গায়ের জোর দিয়ে মাখতে হয় যেন আটাও সাদা হয়ে আসে৷ বৌদির আটা মাখার পাশে বসে আমি পুর বানিয়ে নিলাম। আজকাল দোকানেই খুব ভালো ছোলার ছাতু পাওয়া যায়। তাই পুর বানানোও বেশ সহজ। কাঁচা পেয়াজ, রসুন, লংকা, ধনেপাতা খুব মিহি করে কেটে নিয়ে ছোলার ছাতুতে দিয়ে তাতে পরিমান মতো নুন আর অনেকটা আম সমেত আমতেল দিয়ে বেশ ভালো করে মেখে নিয়েছি। এই সব কাজে কিন্তু অনেক সময় আর ধৈর্য্য প্রয়োজন। আমরা বাড়ির পরিজনরা বসে বসে গল্প করতে করতেই এসব কাজ করে ফেলি। ফলে অনেকটা সময় কিভাবে যেন পেরিয়ে যায়৷

আমার দাদা রান্নায় বেশ পটু। আমাদের সাথে যোগ দিয়ে ও ঝট পট আলু বেগুন টমেটো পুড়ে দিল। আর আমি বসে বসে আটার লেচি কেটে তা বাটি আকারে গড়ে তাতে পুর দিয়ে মুড়ে বানিয়ে নিচ্ছিলাম লিট্টি গুলো। দাদাদের যেহেতু ওটিজি রয়েছে তাই লিট্টি বানানো খুবই সহজ। তবে দাদাকে দেখলাম হিটারে অল্প সেঁকে নিয়ে ওটিজি তে ঢুকিয়ে দিল। ২০/৩০ মিনিটেত মধ্যেই লিট্টি রেডি। আর এদিকে পোড়া সবজিগুলো একসাথে মেখে ভর্তা বানিয়ে নিলাম। এই ভর্তাই আসলে চোখা হিসেবে বিহারিরা খায়৷

IMG-20250516-WA0032.jpg

লিট্টির একটা দারুণ দিক হল গরম গরম খেতে বসে ঘি দিয়ে ভেঙে খাওয়া। আমি পাত পাত করে দিচ্ছি, আর দাদা দেখি আগেই ঘিতে ডুবিয়ে ফেলেছে! পরে হেসে ওকে বললাম, “এভাবে কিন্তু খায় না রে!”

এভাবেই একেকটা রান্না একেকটা গল্প হয়ে যায়। আমাদের দেশে প্রতিটি অঞ্চলের খাবারই যেন তার নিজস্ব ভাষায় কথা বলে। আমি আর আমার বাড়ির লোকজন তো সবরকম রান্নাই খেতে ভালোবাসি—তাই রান্নার সময়টা আমাদের কাছে হইচই আর গল্পের একেকটা অধ্যায়।

এদিকে বাচ্চারাও নিজেদের মতো খেলায় ব্যস্ত। ছুটির দিনে এমন ঘরোয়া মুহূর্তগুলোতেই যে আসল আনন্দ লুকিয়ে থাকে—তা আর আলাদা করে বলার কী আছে?

1000205476.png


1000216462.png

পোস্টের ধরণক্রিয়েটিভ রাইটিং
কলমওয়ালানীলম সামন্ত
মাধ্যমস্যামসাং এফ৫৪
লোকেশনপুণে,মহারাষ্ট্র
ব্যবহৃত অ্যাপক্যানভা, অনুলিপি


1000216466.jpg


১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে


1000192865.png


~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


1000205458.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNq11oNEiVHeYi1dFPZdD9DtfDnLSeGtLw3tXF7pNDf1KxPvxfffo2xboPm7wR8jPkKYie3LXrW.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQSBbshXsaBma59uahG3EZgK1iDXVoywUGGxx1xjvsB7gc2x2aoAvMJQKdwPc9f7Bh4cuj9tdr6.png

1000205505.png

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.035
BTC 111481.59
ETH 4376.90
SBD 0.84