একটি নষ্ট ছেলের গল্প শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজ আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আমি আপনাদের সাথে দুইদিন আগে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম সেই গল্পের পরের অংশটুকু নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে মানুষের জীবনে নানা ধরনের ঘটনা ঘটে থেকে এ ধরনের ঘটনা এক একটি গল্প । এই বাস্তব ঘটনা নিয়ে লিখলে সুন্দরভাবে লিখে ফেলা । এইজন্য আমি মাঝে মাঝে চেষ্টা করি মানুষের বাস্তব ঘটনা নিয়ে কিছু লেখার জন্য । গত পর্বে রবিন নামের একটি ছেলের ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছিলাম । গত পর্বে শেষ করেছিলাম থানা থেকে তার মামা ও বাবা গিয়ে ছাড়িয়ে আনার পর ।
এরপর বাসায় এসে রবিনকে অনেক ভাবে বোঝানো হয় । সে বাসায় আসার পরে এমন ভাব করে যে তার মত ইনোসেন্ট ছেলে যেন এই দুনিয়াতে আর নেই এবং সে সবাইকে কথাও দেয় যে সে আর কখনো এ ধরনের কাজ কাম করবে না । এখন থেকে ভালো হয়ে যাবে এবং কোন বাজে ছেলেদের সাথে মিশবে না । কিন্তু বেশ কিছুদিন যেতে না যেতে আবার আগের মত অবস্থায় চলে আসে । বাসার সে এখন আরও বেশি পরিমাণে অশান্তি করতে থাকে । এর ভিতরে হঠাৎ করে একদিন বাসায় এসে আরও কিছু টাকা চায় । বলে যে তার মোটরসাইকেলটা বাইরে রেখে এসে কোথায় যেন গিয়েছে পুলিশ তার মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছে এবং সেটা ছাড়াতে তাকে আরো বেশ কিছু টাকা দিতে হবে ।তার বাবা সেই টাকাটা দিতে অস্বীকার করলে সে বাসায় আরো ভাঙচুর করে এবং বাবা-মার সাথে উঁচু গলায় কথা বলে । বাজে একটা সিচুয়েশন তৈরি করে তখন তার বাবা আবার বাধ্য হয়ে টাকাটা দেয় ।
মাঝে মাঝে সে বাসায় এ ধরনের টাকার জন্য অশান্তি সৃষ্টি করতে থাকে । এরপর কলেজে খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায় যে রবিন পড়ালেখার জন্য যে পরিমাণ টাকা নিয়েছিল তার কোন টাকায় সে কলেজে জমা দেয়নি । সে কোন পড়াশোনা করেনি শুধু রবিন নয় আরো কয়েকজন বন্ধু বান্ধব সবাই মিলে একই কাজ করে গিয়েছে । এখন ওর বাবা-মা শুধু আফসোস করে যাচ্ছে যে ছেলের ছেলেকে বিশ্বাস করে কোন রকম খোঁজখবর না নিয়ে শুধু টাকায় ঢেলেছি । আমরা কেন কোন খোঁজখবর রাখেনি কলেজের সাথে । ছেলেতো কলেজের বারান্দায় পর্যন্ত যায়নি এবং কোন পড়ালেখা করেনি । শুধু শুধু আমাদের এতগুলো টাকা ও নষ্ট করল এবং সাথে তার লেখাপড়াটাও হলো না সেও নষ্ট হয়ে গেল ।
এভাবে করে দিনগুলো চলছিল বাবা-মা ও দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছিল চিন্তায় চিন্তায় । সেটা দেখে রবিনের একটু অনুশোচনা হল সে তখন বাবা-মার কাছে এসে ক্ষমা চাইলে এবং বলল যে এখন থেকে কোন খারাপ কাজ করবে না । কোন একটা কাজ করার চেষ্টা করবে । রবিনের মা তখন রবিনকে ওর মামা বাড়িতে পাঠিয়ে দিলে যাতে মামার সাথে থেকে কিছু কাজ কাম করতে পারে এবং কাজকাম শেখে । রবিনও খুশি মনে তার মামা বাড়ি চলে গেল । তার মামার সাথে সে যাওয়া আসা করতে এবং আমার কাজকাম সে দেখাশুনা করত । এভাবে করে বেশ কিছু দিন ওখানে রয়ে গিয়েছিল এবং ভালোই চলছিল । তার হাতে কোনরকমে কোন টাকা পয়সা দেওয়া হচ্ছিল না । সবাই তো মনে করেছিল হয়তো বা সে ভালো হয়ে গিয়েছে ।সবাই মনে মনে একটু খুশি হয়েছিল । অনেকদিন বাসার বাইরে থেকে কাজ কামের ভিতরে মন দিয়েছে তারমানে সেসব বাজে কাজ ছেড়ে দিয়েছে । প্রায় বছর খানেক পরে সে আবার তার নিজের বাসায় ফেরত আসে । এভাবে করে কিছুদিন যাওয়ার পরে সে আবার আগের রূপে ফেরত আসে কিছুই বন্ধ করেনি । জানিনা মামা বাড়ি থাকা অবস্থায় সে কিভাবে কি করেছে ।
এখন বাবা মা শুধু চোখের পানি ফেলছে ছেলেকে নিয়ে চিন্তা করছে কি থেকে কি করলে ছেলেটাকে ভালো পথে ফিরিয়ে আনা যায় । ছেলেটা মাঝেমধ্যে এমন একটা ভাব দেখায় যে সে ভালো হয়ে গিয়েছে । আবার মাঝে মাঝে এমন সব আচরণ করে বসে আবার সবকিছু প্রকাশ পায় যে সে কোন কিছুরই ঠিক করেনি এভাবে চলছে । আসলে ছেলে মেয়ে যতই বড় হোক না কেন বাবা মার উচিত তাদেরকে কখনো একা ছেড়ে না দেওয়া । কারণ তাদের মাথায় কখন কি ধরনের ভূত চাপে সেটা কে জানে । একেবারে পড়ালেখা শেষ করে যখন নিজের পায়ে দাঁড়াবে তখনই তাদের একটা ব্যবস্থা করা উচিত । এখানকার দিনে কোন ছেলেপেলেকে বিশ্বাস করা যায় না । রবিনের বাবা-মা ছেলেকে বিশ্বাস করে কোন রকম খোঁজখবর করে নাই আজ তার ফল তারা পেয়েছে এবং হারে হারে টের পাচ্ছে ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
একদম ঠিক বলেছেন আপু ছেলেমেয়েদেরকে যতই কলেজে পাঠানো হোক না কেন বাবা মায়ের উচিত তাদের খোঁজ-খবর রাখা। তা নাহলে রবিনের মত এরকম অবস্থা হতে পারে। ছেলেরা এরকম খারাপ পথে বেশি চলে যায়। এখনকার দিনে মেয়েরাও কম নয়। রবিন তার মামা বাড়িতে এক বছর এগুলো ছাড়া কিভাবে কাটলো।যেহেতু সেগুলো ছাড়তে পারেনি। দোয়া করি রবিন যেনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাবা-মার কাছে ফিরে আসে।
এখনকার দিনে ছেলে মেয়েদের একা একা বাইরে ছাড়লে একটা টেনশনে থাকতে হয় তাই সব সময় চোখে চোখে রাখা উচিত ।
রবিনকে তার বাবা মা অনেক বেশি বিশ্বাস করতো। এবং তার পড়া লেখার জন্য সে যত টাকা দেওয়ার জন্য বলতো, তাকে তার বাবা মা তত টাকাই দিত। কিন্তু সেই ওই টাকাগুলো পড়ালেখায় কাজে না লাগিয়ে খারাপ কাজে লাগাতো। কয়েকদিন পরে পরে ভালো হওয়ার নাটক করলেও, সে পরবর্তীতে আবারো একই কাজ করতো। আসলে প্রত্যেকটা বাবা মায়ের উচিত সন্তানদেরকে দেখেশুনে রাখা। এবং তারাই কোথায় যাচ্ছে, কখন কি করছে এসব কিছু খেয়াল রাখা।
এসব ছেলেরা সহজে ভালো হয় না নাটক করে পরবর্তীতে আবার সে একই রকম আচরণ করে ।