"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৯ || শেয়ার করো তোমার প্রিয়, শীতের পিঠার রেসিপি
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি । আর সেই পোস্টটির মাধ্যমে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৯ || শেয়ার করো তোমার প্রিয়, শীতের পিঠার রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলে এসেছি । বাংলা ব্লগ আমাদের জন্য সব সময় অনেক সুন্দর সুন্দর প্রতিযোগিতার আয়োজন করে । সব সময় চেষ্টা করি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য তবে করে উঠতে পারি না । যেগুলো আমাদের সাধ্যের বাইরে থাকে ইচ্ছা থাকলেও আমরা সেগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারি না । এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা হবে না ভেবেছিলাম কারণ আমি এখন নিজের বাসার বাইরে রয়েছি । বেশ কিছুদিন হলো আমি আর আমার বোন বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি । এখানে শুধু ঘুরতে ফিরতে সময় যে কোথা দিয়ে চলে যে টেরই পাই না । তারপরও হঠাৎ করে মনে হল যে এখানে যেহেতু এসেছি এবং এখানে পিঠা তৈরির সব ধরনের উপকরন রয়েছে তাহলে চেষ্টা করে দেখতে পারি কোন একটা পিঠা বানানোর জন্য ।
শীতের সময় যেকোনো ধরনের পিঠা খেতে ভালো লাগে । এজন্য রাত দশটার সময় হঠাৎ করে মাথায় আসল একটা পিঠা তৈরি করি তাই ঝটপট চলে গেলাম পিঠা বানানোর জন্য । সবকিছু হাতের মুঠোয় থাকার কারণে ঝটপট তৈরি করে ফেলতে পেরেছি । এ ধরনের পিঠাগুলো খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে । কিন্তু একা একা ঝামেলা মনে হয় দেখে কখনো তৈরি করা হয় না । এখানে আম্মা আছে তাই ছোটখাটো হেল্প নিতে পেরেছি এবং আমাকে আরো একটু হেল্প করেছে তানিয়া ম্যাডামের ছোট ছেলে । যেটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে । আজকে আমি নারকেলের পুর ভরা মিষ্টি কুমড়া শেপের সুন্দর একটি পিঠা তৈরি করেছি । সেটি আপনাদের সামনে পরিবেশন করে দেখাবো । নারিকেল দিয়ে যেকোনো ধরনের পিঠা তৈরি করলে সেটা খেতে খুবই টেস্ট লাগে । এজন্য আমি নারকেল দিয়ে পিঠাটা তৈরি করলাম যাতে সবাই মিলে সুন্দরভাবে মজা করে খেতে পারি এবং দেখতেও সুন্দর লাগে ।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার আগে সর্বপ্রথম ধন্যবাদ জানাই আমাদের দাদাকে বাংলা ব্লগ পরিবারে এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য । সকল এডমিন ও মডারেটরদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । যার কারণে আমরা এত সুন্দর সুন্দর প্রতিযোগিতা সব সময় অংশগ্রহণ করতে পারি । নিজে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও সবার মজার মজার রেসিপি ও ফটোগ্রাফি এবং অন্যান্য সব ধরনের প্রতিযোগিতার সুন্দর সুন্দর অংশগ্রহণ দেখতে পারি ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
নারিকেল
দুধ
চিনি
লবঙ্গ
লবন
গুড়
জর্দার রং
কার্যপ্রণালী
প্রথমে একটা কড়াইতে আমি নারিকেল নিয়ে নিয়েছি ।নারকেল গুলো কুড়ানো অবস্থায় ফ্রিজে রেডি করা ছিল এজন্য আমার কোন ঝামেলা করতে হয়নি । তারপর সেই নারকেলের ভেতরে খেজুরের গুড় দিয়ে দিয়েছি । এরপর সামান্য একটু পানি দিয়ে দিয়েছি এবং সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে বেশ কিছু সময় নেড়েচেড়ে নারিকেল ও গুড় ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছি । এরপর নাড়তে নাড়তে যখন একটি আঠালো ভাব হবে তখন চুলাটা বন্ধ করে দিয়েছি ।
এরপর নারকেলগুলো একটা প্লেটে তুলে নিয়েছি এবং হালকা একটু ঠান্ডা হলে হাত দিয়ে সুন্দরভাবে মাখিয়ে নিয়েছি । তারপর ছোট ছোট গোল গোল করে বানিয়ে নিয়েছি । তারপর একটি চুলায় করাই বসিয়ে তার ভিতরে পরিমাণ মতো দুধ দিয়ে দিয়েছি । দুধের ভেতরে একটু জর্দার রং দিয়ে দিয়েছি যাতে সুন্দর একটা মিষ্টি কুমড়ার কালার তৈরি করতে পারি ।
এরপর চিনি দিয়ে দিয়েছি এখানে চিনির পরিমাণটা আপনারা আপনাদের পছন্দ মতো দিতে পারবেন ।তারপর চুলার জ্বালটা ধরিয়ে দিয়েছি । এবার একটু লবণ দিয়ে দিয়েছি যাতে মিষ্টি টা একটু ব্যালেন্সে আসে । তারপর জ্বাল করে বলক তুলে নিয়েছি । এরপর এর ভেতরে চালের গুড়ো দিতে শুরু করেছি ।
তারপর চালের গুঁড়ো দিয়ে কোন নাড়াচাড়া না করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছি গুড়াটা সুন্দরভাবে সিদ্ধ হওয়ার জন্য । এরপর গুড়াটা সিদ্ধ হয়ে গেলে হালকা হাতে একটু নেড়ে চেড়ে নিয়েছি । তারপর চুলা থেকে নামিয়ে হাত দিয়ে সুন্দরভাবে মোথে নিয়ে একটা ডো তৈরি করে নিয়েছি । এখানে ডো যদি শক্ত হয়ে যায় তাহলে আপনারা একটু গরম দুধ ব্যবহার করে নরম করে নিতে পারেন ।
তারপর সেখান থেকে একটু একটু করে নিয়ে আমি দেখুন কয়েকটা গোল তৈরি করে নিয়েছি । এরপর এক একটা গোল্লা নিয়ে মাঝখানে টিপে টিপে চারপাশে চ্যাপ্টা করে নিয়ে মাঝখানে একটা নারিকেলের গোল্লা দিয়ে দিয়েছি । তারপর নারিকেল দিয়ে চারপাশ থেকে এনে লাগিয়ে দিয়েছি । তারপর হাত দিয়ে গোল করে নিয়ে মাঝখানে একটু চাপ দিয়ে একটু গর্ত করে নিয়েছি ।
এরপর একটা চামচের সাহায্যে একটু কেটে কেটে মিষ্টি কুমড়ার সেপ দিয়ে নিয়েছি । তারপর উপরে যেখানে গর্ত করেছিলাম সেখানে একটি লবঙ্গ বসিয়ে দিয়েছি । এভাবে করে আমি সবগুলো বানিয়ে নিয়েছি । তারপর চুলায় একটি পাতিল বসিয়ে এর ভেতরে একটি ছিদ্রযুক্ত গামলা বসিয়েছি পিঠাগুলোকে ভাব দিয়ে নেয়ার জন্য ।
এরপর পানিটা বলুক আসলে একে একে সবগুলো পিঠা ঐ ছিদ্রযুক্ত গামলার উপরে বসিয়ে দিয়েছি ।তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছি কিছু সময়ের জন্য । এরপর কতক্ষণ জ্বাল হওয়ার পরে উপর দিয়ে যখন একেবারে চকচক করবে তখন পিঠাগুলো হয়ে গিয়েছে এবং চুলাটা বন্ধ করে দিয়েছি । তারপর একটা প্লেটে সুন্দরভাবে তুলে নিয়েছি পরিবেশন করার জন্য ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে সকলেই অনেক ধরনের ইউনিক রেসিপি শেয়ার করেছে। আপনিও আজকে একদম ইউনিক একটি পিঠা রেসিপি শেয়ার করেছেন৷ এই রেসিপিটি আপনার কাছ থেকে এই প্রথম দেখতে পেলাম৷ আপনি যেভাবে এটি ডেকোরেশন করেছেন ইচ্ছে করছে এখনি এখান থেকে এটিকে নিয়ে খেয়ে ফেলি৷ আজকে যেভাবে শীত পড়ছে এই পিঠা খেলে অনেক ভালো লাগবে।
ইচ্ছা করছে তাহলে ইচ্ছাটা পূরণ করে ফেলুন প্লেট ধরে তো দেওয়াই আছে ।
ঠিক বলেছেন আপু কিছু কিছু প্রতিযোগিতায় চাইলে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকে না। এবারের প্রতিযোগিতাও অংশগ্রহণ করা হলো না। কিন্তু আপনি কালকে শীতের মধ্যে যে তোর জোর করে রেসিপিটি তৈরি করলেন আমি তো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। শেষে যে এত সুন্দর হবে বুঝতেই পারিনি। দেখে আর খেতে ইচ্ছা করছে না। মনে হচ্ছে এভাবেই সাজিয়ে রেখে দেই। এত সুন্দর লাগছে দেখতে। একটু পরে খেয়ে দেখতে হবে।
ভেবেছিলাম এবার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করব না তবে হঠাৎ করে কেন যেন মন চাইছিল তাই করেই ফেললাম ।
আমার দেখা একদম ইউনিক একটি রেসিপি এরকম ভাবে আইডিয়া নিয়ে রেসিপি তৈরি করা যায় কখনো চিন্তা করা হয়নি। শীতকালের এমন ইউনিক রেসিপি তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
শীতকালে মজার মজার উইনিক রেসিপি তৈরি করতে ভালই লাগে ।
ঠিক বলেছেন আপু এমন কিছু সময় থাকে যখন অংশগ্রহণ করতে চাইলেও আমরা পারিনা যা আমাদের সাধ্যের বাইরে থাকে। আপনার পোস্টে পড়েছিলাম আপনার বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছেন। কিন্তু তারপরও সেখান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার এই পিঠা বানাতে আপনার আম্মা আর তানিয়া ম্যাডামের ছোট ছেলে হেল্প করেছে জেনে খুশি হলাম। আপনি খুবই ইউনিক পিঠা রেসিপি শেয়ার করেছেন। আপনার এই পিঠা অনেক সুন্দর হয়েছে আর দেখেও মনে হয় যেন খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার উপস্থাপনা খুব সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ ইউনিক পিঠা রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ছিল না তবে হঠাৎ করে করে ফেলেছি । হাতের কাছে পেয়েছি তাই বানিয়ে ফেললাম জিনিসটা ।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শীতকালীন পিঠারে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য খুবই চমৎকার একটা পিঠা তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সত্য কথা বলতে আপনার তৈরি করা এই পিঠা দেখে প্রথমে আমি মনে করেছিলাম কমলালেবু।
আমার পিঠা তৈরির রেসিপিটা আপনার কাছে চমৎকার লেগেছে শুনে খুশি হলাম ।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। শীতের সময় পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। আপনার পিঠাগুলো দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। পিঠাগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। তৈরি করার ধাপ গুলো খুব সুন্দর আমাদের মাঝে দেখিয়েছেন। মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এ ধরনের মজার জিনিস দেখলে সত্যিই খেতে ইচ্ছা করে আমারও মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে ।
বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েও দারুন ভাবে এই পিঠা তৈরি করেছেন এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে সত্যিই ভালো লাগলো আপু। আপনার রেসিপি তৈরির দক্ষতা অনেক ভালো। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে খেতে দারুণ হয়েছিল।
বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি দেখেই তৈরি করা হয়েছে তা না হলে তো করাই হতো না ।
প্রথমেই অভিনন্দন প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য। সব সময় আমাদের প্রিয় এডমিন মডারেটররা অনেক সুন্দর সুন্দর প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করে, এইবার আমি অংশগ্রহণ করতে পারলাম না খুবই খারাপ লাগতেছে নিজের কাছে। আপনি দারুণ দক্ষতায় এই শীতের পিঠাটি সম্পূর্ণ করেছেন, অনেকে দারুণ ছিল দেখতে চমৎকার লাগতেছে। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল
অনেক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় তবে সব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা হয় না মাঝে মাঝে চেষ্টা করি আর কি ।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো আপু।আপনি এখন বাবার বাড়ি ঘুরে ফিরে খুব চমৎকার সময় কাটাচ্ছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনি আজ দারুন মজার একটি পিঠার রেসিপি শেয়ার করলেন। শীতের সময় সব রকমের পিঠা খেতেই ভীষণ ভালো লাগে। আপনি আজ মিষ্টি কুমড়ার শেপ দিয়ে পিঠার রেসিপি শেয়ার করলেন। আমি এভাবে ভাপা পুলি করি।আর খেতে ভীষণ মজার হয়। রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আসলে শীতের সময় সব ধরনের পিঠা খেতেই আমার কাছে অনেক ভালো লাগে তবে বানানো হয় না কখনো।
কথায় আছে না, ঢেঁকি যেখানে যায় সেখানেই বাড়া বাধেঁ। আপনিও তো দেখছি তাই। বেড়াতে যেয়েও দেখছি প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে নিয়েছেন। অবশ্য তানিয়া আপুর ছেলে না থাকলে যে আপনার কি হতো! তা যা হোক আপনার পিঠাটি দেখে তো আমার কাছে মনে হচ্ছে বাঙ্গি পিঠা। দারুন ছিল যেমন পিঠা, তেমন উপস্থাপনা। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন ওই ছোট পুচকি না থাকলে আমাদের কি হতো পিঠাই বানানো হতো না মনে হয় ।