গল্প "বিশ্বাসঘাতকতা" পর্ব -২
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম বিশ্বাসঘাতকতা গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। কিছু কিছু মানুষ আছে পরিবারের জন্য সব ধরনের স্যাক্রিফাইস করতে রাজি থাকে। আবার কিছু কিছু মানুষ আছে নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখে। তার কাছে না সন্তানের কোন মূল্য আছে, না বউয়ের কোন মূল্য আছে। নিজের স্বার্থের জন্য বউ সন্তান কেউ বিসর্জন দিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। সেরকমই একজনের গল্প আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছিলাম। আশা করি আজকের পর্বটিও ভালো লাগবে।
বিশ্বাসঘাতকতা
এভাবেই তাদের দিন খুব ভালোই যাচ্ছিলো। প্রীতির ঢাকায় পড়াশোনার জন্য জুয়েল ও ছোট্ট একটা বাসা নিয়ে নেয়। যাতে দুজন একসঙ্গে থাকতে পারে। আর তাদের দুজনের যাবতীয় খরচ দুই পরিবার থেকে বহন করতে থাকে। তাদের বাসার সব ফার্নিচার প্রীতির বাসা থেকে দেয়া হয়। তাছাড়া জুয়েল মাঝেমধ্যে গিয়ে নিজের পরীক্ষাগুলো দিয়ে আসে। বেশ কিছুদিন পর তাদের একটি ফুটফুটে মেয়ে হয়। ততদিনে প্রীতির অনার্স পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে, মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে। জুয়েলেরও ডিগ্রী পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সে ঢাকায় একটি ছোটখাটো চাকরি করে। এভাবে তাদের সংসার চলছিলো।
আরো কিছুদিন যাওয়ার পর প্রীতিরও মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। তখন তারা সিদ্ধান্ত নিল যে তারা ঢাকায় না থেকে নিজেদের এলাকায় চলে যাবে। সেখানে জুয়েল একটি ওষুধের দোকান করবে। পাশাপাশি প্রীতি চাকরির জন্য চেষ্টা করবে। যেহেতু জুয়েল এবং প্রীতিদের নিজেদের বাড়ি আছে শহরে তাই জুয়েলদের বাড়িতে থাকলে তাদের খরচ কিছুটা কমে যাবে। কারণ জুয়েলের ছোট চাকরি দিয়ে সংসার চালানো বেশ কষ্ট হচ্ছিলো। পড়ালেখা শেষ এবং জুয়েলের চাকরির জন্য তাদের বাসা থেকেও খরচ দেয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলো।
তারা সবকিছু গুছিয়ে বাড়িতে চলে আসে।এখানে এসে জুয়েল আবারো আরেকটি চাকরিতে ঢুকে। ঔষুধের দোকান দিতে হলেও অনেক টাকার দরকার। এরই মাঝে প্রীতির একটি হাই স্কুলে চাকরি হয়। প্রীতির চাকরি হওয়ার পর জুয়েল নিজের চাকরির প্রতি অমনোযোগী হয়ে যায়। কিছুদিন পর প্রীতি তার কিছু জমানো টাকা দিয়ে জুয়েলকে একটা দোকান নিয়ে দেয়। জুয়েল কিছুদিন ঔষধের দোকানটা ভালোই চালাচ্ছিলো। কিছুদিন পর আর সেটাও ভালো লাগছিলো না তার। এভাবে করতে করতে দোকানটা বন্ধ করে দেয়।
তারপর মোটামুটি প্রীতির টাকা দিয়ে সংসার চলছিল। এরই মাঝে তাদের আরেকটি মেয়ে সন্তান হয়। জুয়েল তখন কিছুই করে না। কোথা থেকে যেন তার মাথায় ইলেকশন করার ভূত ঢুকে। সে ইলেকশন করার জন্য দাঁড়ায়। জুয়েল ইলেকশনে দাঁড়ালে এরই মাঝে তার একটি মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। মেয়েটির হাজবেন্ড বিদেশে থাকে। ছেলে মেয়ে আছে। জুয়েলকে আর্থিক সাহায্য করতে থাকে ইলেকশনের জন্য। প্রীতিও বিষয়টি জানে। প্রীতির সঙ্গেও মেয়েটির খুব ভালো সম্পর্ক হয়।
মেয়েটির নাম কলি। জুয়েল ইলেকশনে দাঁড়িয়ে অনেক টাকা পয়সা খরচ করে কিন্তু ইলেকশনে জিততে পারে না। এভাবে আরও বেশ কিছুদিন চলতে থাকে। ইলেকেশনে হারার পর কলি জুয়েলকে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা দিয়ে হেল্প করতে থাকে প্রীতির অগোচরে। আসলে কলির হাসবেন্ড থাকে না আর কলিও জুয়েলের প্রতি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। এভাবে চলতে চলতে কলি এবং জুয়েলের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়।
কলি আর জুয়েলের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেলে প্রীতির কি হবে? তা জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। আশা করি আজকের পর্বটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
আমার লেখা প্রথম গল্প || "বিশ্বাসঘাতকতা" এর প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন.
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
ভালই তো চলছিল ওদের দিনকাল এর ভিতর কলি কোথা থেকে আসলো । কলির হাসবেন্ড বিদেশে থাকে সেই টাকা দিয়ে ও জুয়েলকে সাহায্য সহযোগিতা করেছে । এখন টাকা দিয়ে জুয়েলকে কিনে নিয়েছে আর জুয়েলের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছে । আর জুয়েলও টাকার কাছে হেরে গিয়েছে । প্রীতি যে সারাটা জীবন ওর জন্য কষ্ট করলো সেটার কোন মূল্য নেই ।
আসলেই ভালো চলছিল ওদের দিনকাল। এই মেয়েটা এসেই ওদের জীবনটা শেষ করে দিল। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
জুয়েল আগে থেকেই অলস প্রকৃতির ছিলো। তাইতো প্রীতির চাকরি হওয়ার পরই অমনোযোগী হয়ে যায়। তারপর দোকানটাও ঠিকমতো চালাতে পারলো না। বেকার থাকা অবস্থায় জুয়েল নির্বাচন করার কথা ভাবলো কিভাবে সেটাই বুঝি না। জুয়েলের মতো ছেলেরা কারো ভালোবাসার যোগ্যই না। এসব ছেলেরা সংসারের উন্নতি করার কোনো চেষ্টাও করে না। বউয়ের টাকায় বসে বসে খাবে,আর আড্ডাবাজি করবে। শেষ পর্যন্ত পরকীয়ায়ও জড়িয়ে গেল। জুয়েল তো দেখছি সবদিক দিয়েই খারাপ। যাইহোক পরবর্তী পর্বে কি হবে সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে।
সংসারের প্রতি মনোযোগী হলে দোকানটা ঠিকই চালাতো। এভাবে জীবনটা নষ্ট করত না। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে আপু যারা অলস প্রকৃতির মানুষ, তারা অন্যের ইনকামের টাকায় বসে বসে খেতে চায়। যাইহোক ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
লে হালুয়া এটা আবার কেমন কথা গো! বেকার বসে বাড়িতে, সে নাকি আবার ইলেকশন করবে!! মাথা বাড়ি দিয়ে ফাটানো দরকার। আর কলিও বাহ্ কেমন! নিজের জামাইয়ের কষ্টে উপার্জন কেন অন্য মানুষকে দিতে হবে! কি আর বলি,, দেখি পরের পর্বে কি হয়
আমিও প্রথম যেদিন ওর ইলেকশনের কথা শুনেছিলাম সেদিন খুবই অবাক হয়েছিলাম। কথা নেই বাত্রা নেই ইলেকশনের ভূত কোথা থেকে আসলো। যাই হোক ভাইয়া ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।