চারিদিকে পিঠাপুলির ধুমধাম, আর সাথে রয়েছে আমার ছোট বেলার কিছু স্মৃতি

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago (edited)
আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি।

IMG_0454.jpeg

ফটোটি tauhida এর পোস্ট থেকে নেয়া হয়েছে।


এখন বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া , ইংল্যান্ড সব জায়গাতেই পুরোদমে শীত শুরু হয়েছে। আর শীত আসলেই মনে পড়ে যায় সেই ছেলেবেলার পিঠা খাওয়ার মুহূর্ত গুলো। শীত আসলেই যেন সব জায়গায় প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় পিঠা বানানোর। আর এই পিঠা খাওয়ার উৎসব গুলো বেশি হয় গ্রামের বাড়িগুলোতে। আগে ছোটবেলায় শীতের সিজনে আমরা সকলে মিলে নানু বাড়িতে যেতাম।শীতের পিঠা খাওয়ার দাওয়াত থাকতো।আমার নানী নানান রকমের পিঠা বানিয়ে রাখতো। তবে আমার কাছে আমার নানীর তৈরি পিঠাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো ভাপা পিঠা, সেমাই পিঠা আর দুধ চিতই পিঠা। ভাপা পিঠার সাইজগুলো ছিল অনেক বড় বড়, খুবই সুস্বাদু ছিল। সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করেই শুরু হয়ে যেত নানু বাড়িতে পিঠা খাওয়ার হই-হুল্লোড়। শুধু তাই না, নানী যখন পিঠা বানাতেন তখন প্রায়ই আমাদের বাসা ও আমার অন্যান্য খালাদের বাসায় পাঠাতেন। খুব মিস করি নানীর সেই তৈরি পিঠাগুলো। আমার নানী এখনো বেঁচে রয়েছেন কিন্তু পিঠা আর বানাতে পারেন না।এখনো নানী বাড়ি থেকে আমাদের বাসায় পিঠা পাঠানো হয়।বাড়ীতে মামীরা রয়েছেন, তারা পিঠা বানিয়ে পাঠায়।তবে মাঝে মাঝে আমার আম্মা ও পিঠা বানাতো বাসায়, এখনও বানায়। অন্য কোন পিঠা না বানালেও শীতের সিজনে ভাপা পিঠাগুলো তৈরি করে।

তবে আমার সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে ছোটবেলায় আমাদের গ্রামের বাড়িতে দেখেছি খেঁজুর গাছ থেকে রস পেড়ে এনে সাথে সাথে চুলায় জাল দিয়ে পিঠা তৈরি করা হতো। আর সেই পিঠার মধ্যে ছিল সেমাই পিঠা, আর দুধ চিতই পিঠা। টাটকা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি পিঠাগুলো মনে হয় এখনো ঠোঁটে লেগে রয়েছে।খুব মিস করি সেই দিনগুলো।

আমাদের কমিউনিটিতে প্রতিদিন দেখছি অনেকেই নানান ধরনের পিঠার রেসিপি শেয়ার করছেন। এই পিঠাগুলো দেখে আমার ছোটবেলার সেই পিঠা খাওয়ার মুহূর্ত গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। তাই আজকে এই পোস্টটি করা,আর আমার অনুভূতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা। লন্ডনে কেউ আর এভাবে পিঠা বানায় না। কারণ তাদের কারও সময় নেই পিঠা বানানোর। সকলেই মেশিনের মত চলে। আমারও ইচ্ছে ছিল ভাপা পিঠা তৈরি করার। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানে খেঁজুরের গুড় পাওয়া যায় না।হয়তো লন্ডনে গেলে গুড় পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমাদের এখান থেকে লন্ডন অনেক দূরে, সহজে যাওয়া হয় না। রিসেন্টলি হাজবেন্ডের যাওয়ার কথা রয়েছে লন্ডনে তার দরকারি কাজে। আমি আগে থেকেই বলে রেখেছি আমার জন্য যেন খেঁজুরের গুড় আর নারিকেল নিয়ে আসে।আমাদের এখানে নারিকেল পাওয়া যায়, কিন্তু সমস্যা হলো গুঁড়ের।যদিও আমি কখনো এই ভাপা পিঠা তৈরি করিনি।চেষ্টা করব সবার পিঠাগুলো দেখে তৈরি করার। মজার ব্যাপার কি জানেন? এখানে কিন্তু ফ্রোজেন ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। আমার ঘরে এখনও রয়েছে।কিন্তু সেগুলো খেতে একটুও মজা নেই। নারিকেল খুবই কম, এছাড়া গুড় দেয় না বললেই চলে।সেই ছেলে বেলার স্বাদ এই পিঠায় নেই।

ভাপা পিঠার মত চিতই পিঠা ও আমার খুবই পছন্দের। কিন্তু সেটা বানানোর কোন সিস্টেম এখানে নেই। এবার ভেবেছি যখন বাংলাদেশে যাব তখন বাংলাদেশ থেকে চিতই পিঠা বানানোর যে সাঁজ পাওয়া যায় সেগুলো কিনে আনব। চিতই পিঠা আর মাংসের ঝোল দিয়ে খেতে খুবই মজার। গতবার যখন বাংলাদেশে গিয়েছিলাম তখন অনেক খেয়েছিলাম। এই পিঠাগুলো বাংলাদেশে কিনতেও পাওয়া যায়। সেগুলোও কিন্তু খেতে দারুণ মজা।আর সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের সস। তবে আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে ধনিয়া পাতা দিয়ে যে সসটা তৈরি করে। খুবই মজার আর অনেক ঝাল খেতে।বন্ধুরা তাহলে আজ এতটুকুই ।আরও অনেক স্মৃতি রয়েছে যা একদিনে লিখে শেষ করা যাবে না।

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


[witness_vote.png](https://steemitwallet.com/~witnesses

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 6 months ago 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন চারিদিকে পিঠাপুলির ধুমধাম সেই সাথে রয়েছে আপনার ছোট বেলার কিছু স্মৃতি। আসলে শীতের সময় ভাপা পিঠা প্রায় প্রত্যেকটা বাড়িতেই তৈরি করা হয়ে থাকে। ঠিক বলেছেন আপু আপনি আসলে এই পিঠা গুলা বাংলাদেশের শীতের সময় বাজারে সন্ধ্যার পরে কিনতে পাওয়া যায়। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

আপু এখন সব জায়গাতেই শীত শুরু হয়েছে
।আর এই শীতে নানা রকমের পিঠা খাওয়ার ধুম পরে যায়।তবে যত পিঠাই খাওয়া হোক না কেন ছেলেবেলাকার সেই আমেজ এখন আর নেই।শীতের অনুভূতি গুলো খুব চমৎকার সেই ছেলেবেলার।আপনি ভাপা পিঠা করবেন গুড় আনা হলে।আর কেনা পিঠা তেমন মজা হয় না।নিজের হাতে বানানো হলে নিজের ইচ্ছে মতো গুড়,নারিকেল দিয়ে করা যায়। আপনার বানানো পিঠার রেসিপি দেখার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

শীতকাল মানেই যেনো পিঠা খাওয়ার এক অন্যরকম উৎসব। শীতকালের শুরুতেই মহল্লায় মহল্লায় পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। তবে সেখান থেকে আপনার ছোটবেলার স্মৃতি পড়ে খুবই ভালো লাগলো ‌ । ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

মজার ব্যাপার কি জানেন? এখানে কিন্তু ফ্রোজেন ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। আমার ঘরে এখনও রয়েছে।কিন্তু সেগুলো খেতে একটুও মজা নেই।

আপু ফ্রোজেন কোনো কিছুই স্বাদ লাগে না তেমন। এককথায় বলতে গেলে বিপদে পড়ে খাওয়া হয় ফ্রোজেন জিনিসগুলো। যাইহোক ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পরলে আসলেই খুব ভালো লাগে। শীতকালে মজার মজার পিঠা খেতাম এবং বিভিন্ন ভাবে মজা করতাম। এখন কেনো জানি পিঠা খেতেও ইচ্ছে করে না তেমন। মিষ্টি জাতীয় পিঠা একেবারেই খেতে ইচ্ছে করে না আমার। তবে চিতই পিঠা হাঁসের মাংস দিয়ে খেতে দারুণ লাগে। তাছাড়া আপনার মতো আমারও, ধনিয়া পাতার ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে খুব ভালো লাগে। আশা করি ভাইয়া লন্ডনে গেলে অবশ্যই গুড় নিয়ে আসবে এবং আপনার কাছ থেকে মজাদার ভাপা পিঠার রেসিপি দেখতে পাবো আমরা। পরবর্তীতে বাংলাদেশে আসলে অবশ্যই চিতই পিঠা তৈরি করার সাঁজ নিয়ে যাবেন ইংল্যান্ডে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

বর্তমানে সব জায়গায় প্রচন্ড শীত পড়েছে আর শীত পড়লে প্রত্যেকের ঘরে পড়ে যায় পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম। বিশেষ করে গ্রামের বাড়িতে একপ্রকার পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায় আর সেই সময় অনেক আনন্দ হয়। আসলে শৈশবের কথা ভোলার মত নয়। ছেলেবেলার সেই আনন্দ গুলো এখন আর নেই বললেই চলে। শীতের মুহূর্তের শৈশবের স্মৃতিগুলো অন্যরকম। আপু কেনা পিঠার চেয়ে নিজে বানানো পিঠার মজাই আলাদা। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

আপু ঠিক বলেছেন শীতকাল আসলেই যেন ছোটবেলার স্মৃতি চোখে ভেসে উঠ। নানু বাড়ির কথা তেমন বেশি মনে নেই কারণ ছোটবেলায়ই সবাই মারা গিয়েছে। কিন্তু মায়ের হাতের পিঠা পুলি না খেলে যেন শীতের সকাল শুরু হতোই না। শীতের পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা আর দুধ চিতই আমারও খুব পছন্দের। এখন মায়ের শরীর তেমন বেশি ভালো নেই তাই পিঠাও আগের মতো খাওয়া হয় না। আপু যেহেতু সেখানে তাদের হাতে তেমন সময় নেই তাই তারা ফ্রোজেন খাবারটাই বেশি বেছে নিয়েছে। তবে এই খাবার খেতে একদমই ভালো লাগে না আর টাটকা খাবারের স্বাদ ফ্রোজেন খাবারে কখনো পাওয়া যাবে না। যাই হোক আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57610.17
ETH 3118.28
USDT 1.00
SBD 2.39