বৃদ্ধ বয়সে অসহায়ত্ব
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি।
বৃদ্ধ বয়সে মানুষ যে কতটা অসহায় হয়ে পড়ে তা আমরা সকলেই জানি।ছেলে-মেয়ে হাজব্যান্ড ও ওয়াইফ নিয়ে সকলেরই সুন্দর একটি পরিবার থাকে।এরপর ধীরে ধীরে ছেলেমেয়েগুলো বড় হয়ে যায়, তখন তাদেরও যার যার সংসার হয়ে যায়।যাদের ছেলে সন্তান থাকে তাদের ঘরে বউ আসে।এরপর নাতি-নাতনি দিয়ে ঘর ভরে যায়। খুব সুন্দর ভাবে কারও কারও পরিবার কাটতে থাকে। ছেলে যদি ভালো থাকে বাবা মাকে সম্মান করে, আদর যত্নে রাখে।তা দেখে বউয়েরাও যথেষ্ট সম্মান করে তাদের শ্বশুর-শাশুড়িকে।কিন্তু ছেলে যদি বাবা-মাকে পাত্তা না দেয় তাহলে সেই বাবা-মায়ের মত অসহায় পৃথিবীর কেও থাকেনা। এরপর যাদের শুধু মেয়ে সন্তান থাকে তাদের অবস্থা আরো বেশি খারাপ।কারণ মেয়েদের বিয়ে দিলে তাদের ঘর একেবারেই খালি হয়ে যায়।আর বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়ের অবস্থা তো আরো বেশি খারাপ থাকে। হ্যাঁ বন্ধুরা আমার এক বৃদ্ধ প্রতিবেশীর অবস্থা দেখে আজ এই পোস্টটি লিখতে বসলাম।
আমার এই বৃদ্ধ প্রতিবেশীর বয়স হবে আনুমানিক প্রায় ৮৫ বছর।অবশ্য এ দেশে ৮৫ থেকে ১০০ বা ১১০ বছর বয়সের মানুষ অনেক দেখা যায়।এদেশের মানুষের গড় আয়ু বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি। ঘর থেকে বের হলেই ৯০ থেকে একশ বছরের মানুষজন প্রায়ই দেখা যায় একা একা ট্রলি নিয়ে নিজের বাজার করে আস্তে আস্তে হেঁটে চলছে। তাঁদের সাথে হেল্প করার জন্য কেও থাকেনা। যাইহোক আমার প্রতিবেশীর কথা বলছিলাম। আমরা যখন প্রথম এই এলাকায় আসি তখন আমার এক নিকটতম প্রতিবেশীকে পেলাম যে তার ওয়াইফের সাথে বসবাস করছে। এরপর জানতে পারলাম তার ওয়াইফ ক্যান্সারে আক্রান্ত। কয়েক বছর পরেই ওয়াইফ মারা গেল। অসহায় পড়ে রইল সেই বৃদ্ধ লোকটি।আর ওই বৃদ্ধ লোকটির একটি মাত্র মেয়ে রয়েছে। কিন্তু মেয়েটির সাথে তেমন বেশি যোগাযোগ নেই।মেয়েটির একটি মেয়ে রয়েছে অর্থাৎ বৃদ্ধিটির নাতনি। নাতনি আমাদের এখান থেকে অল্প কিছু দূরে বসবাস করে তার পরিবার নিয়ে।প্রায় এসে তার নানাকে হেল্প করে দিয়ে যায়। রান্না বান্না সহ ঘরে অন্যান্য কাজগুলো সে এসে করে দিয়ে যায়।সপ্তাহে দুই তিন দিন আসে।প্রায়ই দেখি বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে যায় হসপিটালে থাকে। চিন্তা করে দেখুন বৃদ্ধটির কেউ নেই, তার ওয়াইফ যদি থাকত তাহলে কথা ছিল।একটি কথা বলার মানুষ পর্যন্ত নেই। এখন তিনি পুরো তার নাতনির উপর ডিপেন্ডেন্ট।
নাতনি সারাদিন থেকে কাজকর্ম করে রাতে চলে যায়। কিন্তু রাতে তো তার একাই থাকতে হয়। আসলে কতটা অসহায় হয়ে যায় মানুষ এই বৃদ্ধ বয়সে। কিন্তু সাম্প্রতি বৃদ্ধটির নাতনির ফ্যামিলিতে প্রবলেম হয়েছে। সে তার হাজবেন্ডকে ফেলে তার নানার বাসায় চলে এসেছে। নাতনির একটি ছোট্ট মেয়েও রয়েছে, তার বয়স ৬ বছর। ছোট্ট মেয়েটি বলল তার বাবা ও মায়ের সাথে ফাইট হয়েছে তার মা আর কোনদিনও সেই বাসায় যাবেনা।ছোট্ট মেয়েটি আবার সারাদিন আমার বাসায় থাকে। আমার ছোট মেয়ের সাথে খেলাধুলা করে। এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। নাতনি তার অসহায় নানার সাথে রয়েছে।নানার লুক আফটার করছে যা দেখে বেশ ভালোই লাগছে।তাকে দেখে আমার নিজের কথা ভাবছি, আমারও তো দুটি মেয়ে রয়েছে।তাদের বিয়ে হয়ে গেলে বৃদ্ধ বয়সে যদি বেঁচে থাকি তখন আমাদেরও দেখার কেউ থাকবে না।এই কথা চিন্তা করলে আসলেই খুব কষ্ট হয়। প্রতিটি মানুষেরই বৃদ্ধ বয়সে খুব কষ্ট হয়। যাইহোক আল্লাহতাআলা যার ভাগ্যে যা রেখেছেন তাই হবে।এটিই দুনিয়ার নিয়ম যা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে।
যাইহোক, বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালে লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
[

বৃদ্ধ বয়সে একাকীত্ব সত্যিই অনেক কষ্টদায়ক। আপনার প্রতিবেশীর গল্পটি হৃদয় ছুঁয়ে গেল। আমাদের সবার উচিত নিজেদের পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং তাদের পাশে থাকা কারণ একদিন আমাদেরও সেই অবস্থায় যেতে হবে।
আজ অন্য রকম বিষয়ে ব্লগ শেয়ার করেছেন আপু।ব্লগটিতে বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। জীবনটা আসলে এমন ই।কঠিন বাস্তবতা এই বৃদ্ধ বয়সেই বেশী দেখা যায়।এই সময়টাতে পরিবারের ছেলে মেয়ের উচিত তাদের দেখাশোনা করা।কারন এমন সময় আমাদের ও আসবে তখন আমরা ও অসহায় হয়ে পরবো।এতোটুকু ভাবনা যার মধ্যে আছে সে বৃদ্ধদেরকে যত্ন করবে।
সত্যি আপু যাদের শুধুমাত্র মেয়ে সন্তান রয়েছে তাদের বৃদ্ধ বয়সে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। মেয়েরা অনেক সময় স্বাবলম্বী হলেও বাবা-মায়ের দেখাশোনা করতে পারে না। শ্বশুরবাড়ির প্রেসার তাকে নিজের দায়িত্ব পালন করতে দেয় না। সবকিছু বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হয়। বৃদ্ধ বয়সের অসহায়ত্ব সত্যি অনেক কঠিন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.