মাঝরাত || @shy-fox 10% beneficiary
এমনিতেই সারাদিন কর্ম করার পরে ক্লান্ত হয়ে যাই, তারপর যখন বাড়ি ফিরি তারপরে তো আবার বিভিন্ন ভার্চুয়াল কাজ থাকে। সর্বোপরি রাত্রি তখন দেড়টা বাজে, হুট করে হিরা এসে ডাকলো এবং ডেকেই মোটামুটি হুহু করে কান্না শুরু করল। বলল তার নানুভাই নাকি হঠাৎ করে পেটে ও বুকে ব্যথা অনুভব করছে ।
এমনিতেই তো তারা গ্রামে থাকে, সেখানে এই মাঝরাতে চিকিৎসক পাওয়া খুবই দুষ্কর ব্যাপার। যাইহোক অবস্থা বেগতিক দেখে, তারা শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। আমি হিরাকে মোটামুটি মানসিকভাবে একটু স্থির করার চেষ্টা করে বললাম যে, তুমি চুপ করে থাকো ব্যাপারটা আমি দেখছি । আসলে বিপদ যখন আসে , তখন কে শোনে কার কথা । আসলে এই রকম সময় নিজেকে কোনোভাবেই কন্ট্রোল করা যায় না। যাইহোক আমি হিরার মনের অবস্থাটা বুঝতে পারছি এবং আমার শাশুড়ি এই দিকে ভীষণ অস্থিরতা শুরু করেছে ।
সঙ্গে সঙ্গে হসপিটালের জরুরী বিভাগের নাম্বারে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম যে, মেডিকেল অফিসার কে আছে, তাকে একটু ফোনটা দিন । যে ভদ্রলোক মেডিকেল অফিসার হিসাবে দায়িত্বে আছে, সে আমার মেডিকেল কলেজ থেকেই বের হয়েছে এবং মোটামুটি সে এখন আমার এলাকার সরকারী হসপিটালে কর্মরত আছে । তার সঙ্গে কথা হওয়ার পরে, তাকে আমি বললাম আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসছি, আমার এক রোগী আছে ।
এমনিতেই আমার নানা শ্বশুর বয়স্ক মানুষ । ৭০ মতো বয়স হবে । সবথেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে, এই বয়সে এসেও সে প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমাণে ভাজা চানাচুর ও চা খায় । যেটা আসলে মূলত এসিডিটির প্রধান কারণ । আসলে তারা আমাকে ফোনে যেভাবে ঘটনা বলেছিল, আমি আসলে কোনভাবেই সেটা মিলাতে পারছিলাম না । কারণ বুক ব্যথা করছে, সঙ্গে পেট ব্যথা করছে। আমার কাছে লক্ষণটা একটু এলোমেলো লাগছে । তারপরেও আমি সন্দেহ করছিলাম যে, এসিডিটির ব্যথা কিন্তু যেহেতু হসপিটালে আমি নিয়ে আসতে বলেছি, তাই আমি কোনরকমে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম মাঝরাতেই ।
কত দ্রুত যে , বাসা থেকে বের হয়েছি সেটা মনে হয় শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানে। তারপরে আবার রিক্সা ম্যানেজ করা, আবার সেই হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া । সর্বোপরি একটা ঝামেলাকর সময়ের ভিতরে পাড়ি দিতে হয়েছে ।
যাইহোক অবশেষে যখন হসপিটালে পৌঁছালাম, তারপরে যখন নানাশ্বশুর এসে পৌঁছাল, তখন তাকে দেখে মোটামুটি আমি নিজেই অনেকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছি। কারণ সে ঠান্ডার ভিতর কাঁপাকাঁপি করছে এবং সঙ্গে বলছে যে, তার বমি বমি ভাব হচ্ছে, বুক ব্যথা করছে এবং পেট ব্যথা করছে । যাইহোক মোটামুটি তাকে একটা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করে নিলাম ডাক্তারের কাছ থেকে ।
অবশেষে আমি যেটা ভেবেছিলাম, তাদের কাছ থেকে যখন পুরোপুরি বিস্তারিত ঘটনাটা শুনলাম আসলে তাদের দেওয়া তথ্য ও আমার চিন্তা-ভাবনা মোটামুটি ডাক্তারের কাছে শেয়ার করলাম । ডাক্তার মোটামুটি সব কিছু শোনার পরে, কিছু ওষুধ লিখে দিল এবং বলল যে ইনজেকশনগুলো দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন ।এসিডিটির কারণে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে, যার কারণে রোগী এরকম করছে । অতঃপর সেই মাঝরাতে আবার অনেক কষ্ট করে ওষুধের দোকান খুঁজে বের করে, সেখান থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে তারপর সেগুলো নানা শশুরকে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তারপরে কিছুটা সময় হসপিটালেই অপেক্ষা করলাম এবং দেখলাম নানাশ্বশুর কিছুটা সুস্থ বোধ করছে ।
এইদিক থেকে হিরা বারবার বাসা থেকে ফোন করেছে এবং আমি কোনোমতে ফোন ধরে বললাম যে , তোমার নানু ভাই এখন সুস্থ আছে । চিন্তা করো না, তবে তাকে আজকের রাতটা হসপিটালেই থাকতে হবে । যাইহোক আমার শাশুড়ি এবং তাদের সঙ্গে আসা লোকজন হসপিটালেই থেকে গেল । অতঃপর আমি এই মাঝরাতেই হেঁটে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম ।
সত্যি বলতে কি, আমি মনেকরি কিছু কিছু ব্যাপারগুলোতে মানুষের কোনভাবেই উদাসীন হওয়া উচিত না । বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাসের দিকগুলোতে । কারণ এই দিকটা মোটামুটি একটু খেয়াল রাখা উচিত । যাইহোক যদিও বয়স্ক মানুষ, তাই কিছু বলতে চাই না। তবে তার জন্য মাঝরাতে কিছুটা হলেও বেশ ভালোই বেগ পেতে হলো । তবে তার পাশে থাকতে পেরে, ভালোভাবে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পেরে, নিজের কাছে আলাদা একটা প্রশান্তিবোধ কাজ করছে ।।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
সম্পুর্ন পোস্ট থেকে অনেক কিছু শিক্ষণীয় আছে। আমরা খাবার খাওয়ার সময় হিসেব করে খাই না এই থেকে খাবার আমার কতটুকু ক্ষতি হতে পারে। আশাকরি ডাক্তার যেহেতু আপনার পরিচিত ছিল ভাল একটি সার্ভিস পেয়েছেন। হাসপাতালের ডাক্তার অপরিচিত হলে এমন রাত্রিবেলায় ভালো কিছু পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে । দোয়া রইল নানা ভাই এর জন্য🥰🥰🥰
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
🙏🙏🙏🥰🥰
কার কখন বিপদ আসে কেউ বলতে পারে না। হয়তো সেটা মাঝরাতেও হতে পারে। আপনি মাঝরাতে এত কষ্ট করে আপনার নানা শ্বশুরের জন্য হসপিটালে গিয়েছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। বয়স্ক মানুষ কখন কি হয়ে যায় বলা খুবই মুশকিল। তাই এখন তার খাবারের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে আশা করছি অনেকেই সচেতন হবে এবং তাদের বাসায় যারা বয়স্ক মানুষ রয়েছে তাদের প্রতি যত্নশীল হবে। ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু শিক্ষা লাভ করতে সক্ষম হই। আজকের পোস্টটির মাধ্যমেও একটি শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরেছেন। আপনি সেই সময় ছিলেন বলেই সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন। আপনার কারণে আপনার নানা শ্বশুর খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। সত্যি ভাইয়া আপনার কাজের জন্য আপনাকে সবসময় স্যালুট জানাই। আপনার প্রতি মন থেকে শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা আছে বলেই আপনাকে আমরা এত ভালোবাসি। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ভাই মাঝ রাতের এই সব বিপদ-আপদে যে না পড়েছে সে এটা কিছুতেই উপলব্ধি করতে পারবে না। আমিও বেশ কয়েকবার এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম তাই বিষয়টা আমার জানা। আর এই বিপদ আপদে যারা পাশে এসে দাঁড়ায় তারাই হলো সত্যি কারের আপনজন। তাদের কথা মানুষ বহুদিন মনে রাখে। আপনার নানা শ্বশুর যে শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ছিলেন এটা জেনে আশ্বস্ত হলাম।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আপনি না গেলেও চিকিৎসাটা হয়তো হতো।তবে আপনি যাওয়াতে যে সহায়তাটা হয়েছে বা এই মাঝরাতে যে ভরসাটা পেয়েছে। তা আপনি না গেলে কোনোদিন ও সম্ভব ও হতোনা।
সারাদিন কাজ করেও, রাতের বেলা এভাবে সাহায্য করাটা সত্যিই দারুণ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
সর্বপ্রথম নানু ভাইয়ের সুস্থতা কামনা করছি। আমি যখন আপনার লেখাগুলো পড়ছিলাম তখন আমার মনের অজান্তেই আমার নিজের নানু ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। আমার নানু ভাইয়ের বেশ বয়স হয়েছে। তিনিও এখনো ছোট মানুষের মত চানাচুর, বাদাম, তেলে ভাজা জিনিস এগুলো খেতে বেশি পছন্দ করে। আসলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মন পরিবর্তন হয়ে যায়। তারাও ছোট মানুষের মত সেই খাবারগুলো খেতে পছন্দ করে। কিন্তু শরীর সে খাবারের ইফেক্ট সহ্য করতে পারে না। অবশ্যই সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং বয়স্ক মানুষের প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হতে হবে। ছোটদের যেমন শাসন করা হয় তেমনি বয়স্কদের ভালোর জন্য তাদেরকেও খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে একটু শাসন করলে ভালো হয়। আমার নানু ভাই যখন বাজারে যায় তখন ছোট মানুষের মত চানাচুর কিনে খায় এখনো। তবে যাই হোক তিনি এখন সুস্থ আছেন এবং ভাল আছেন। হিরা মনি আপুর নানু ভাই এখন সুস্থ রয়েছেন এটা শুনে ভালো লাগলো। আশা করছি নানু ভাই খুব তাড়াতাড়ি পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন। আপনি মাঝ রাতে অনেক কষ্ট করে নানু ভাইয়ের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। সকলের জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আসলে ভাই বিপদ যখন আসে তখন মাথা ঠিক থাকে না।মানুষের জ্ঞান শূন্য হয়ে যায় মানুষ কি করে সে বুঝতে পারে না।
আর পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগল ভাইয়া আপনি মাঝ রাতে উঠে হাসপাতালে গিয়েছেন।আশা করি তিনি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে এই কামনাই করি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আমাদের খাদ্যাভ্যাস আমাদের লাইফস্টাইলআমাদের চারিদিকে পরিবেশ সবকিছুর মধ্যে আমাদের পরিবর্তন আনা উচিত। কারণ আমরা অনেকেই ভুলেই গেছি যে আমরা খাবার খেয়ে সুস্থ থাকি খাবার খেয়েই বেঁচে আছি।তাই খাবারের দিকটাতে আমাদের প্রত্যেকের আরো বেশি যত্নশীল হওয়া দরকার আপনার পোস্টটি পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো অনেক প্রশান্তি পেলাম।মাঝরাতে যেভাবে আপনি একজন বয়স্ক লোকের পাশে থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পেরেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সেইসাথে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
♥♥
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
জি ভাইয়া আমি আপনার সাথে একমত মানুষের খাদ্য অভ্যাস এর ব্যাপারটা তে অনেক বেশি সচেতন হওয়া উচিত। আমার আব্বুর সাথে একবার এমন ঘটনাই ঘটেছিল। আমরা সবাই প্রচুর অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। পরে ডাক্তার আমাদেরকে সব বুঝিয়ে বলল এবং তাকেও একরাত হসপিটালেই থাকতে হয়েছিল। তারও পেটে ব্যথা,বুকে ব্যথা ও বমি বমি ভাব হচ্ছিল। এই গুলো আসলেই অনেক বেশি এসিডিটি সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। এজন্যই আমাদের সবাইকে এইসব বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। যাই হোক এরপর থেকে আমার আব্বু অনেকটাই এই বিষয়ে সচেতন হয়েছে। আশা করছি আপনার নানু ভাই ও এই বিষয়ে জলদি সচেতন হবেন। এবং আপনার কথা বলি ভাইয়া সত্যিই আপনি মানুষের উপকার করতে পছন্দ করেন তা আপনার এই পোস্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে। এই মাঝরাতে আপনি তাদের সত্যিই অনেক উপকার করেছেন। না হলে তারা হয়তো বা আরো বেশি বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে যেত। যাক শেষমেষ নানু ভাই সুস্থতার কথা শুনে ভালো লাগলো। শুভকামনা আপনার জন্য ভাইয়া।পরিবার নিয়ে সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।