💞 " দান করতে হাসপাতালে যাওয়া "
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।
আমি @shimulakter"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নানা বিষয়ের উপর পোস্ট শেয়ার করে থাকি।যদিও সময়টা কষ্টে কাটছে।তবু ও আপনাদের মাঝে আজ এলাম নতুন একটি বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করতে।আশাকরি আপনারা সবাই সঙ্গেই থাকবেন।
দান করতে হাসপাতালে যাওয়াঃ
বন্ধুরা,আজ নতুন একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে হাজির হয়ে গেলাম।মূলত আজকের পোস্টটি একটি মেডিসিনকে ঘিয়ে।হে,বন্ধুরা,এই মেডিসিনটি কিডনি রোগীদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মেডিসিন।আব্বু মারা গেছেন ২৩ শে অক্টোবর।আমি অক্টোবরের প্রথম দিকেই ধানমন্ডি লাজ ফার্মা থেকে এই মেডিসিন দুটো নিয়েছিলাম।প্রতিটির দাম ১১ হাজার ৪ শত টাকা হলেও তারা ২০০ টাকা করে ডিসকাউন্ট দিয়েছিল।আব্বুকে একটা দেয়া হয়েছিল।আর একটা দেয়া আর হয়নি।এর আগেই আব্বু আমাদের কে ছেড়ে পরপারে চলে গিয়েছেন।
একটি মেডিসিন নরমাল ফ্রিজে পরে ছিল এতোটা দিন।এই মেডিসিনটি ফেরত দিতে আমি বাসায় এসে লাজ ফার্মাতে ফেরত দিতে গিয়েছিলাম।কিন্তু তারা মেডিসিনের গায়ে আব্বুর নাম লেখার কারনে ফেরত নিবে না।হাসপাতালে সব পেসেন্টদের মেডিসিন নাম লিখে লিখে রাখাতে এই সমস্যাটা হয়েছে।আমি যদিও বলেছিলাম কোন দরিদ্র মানুষকে এই মেডিসিনটি দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা বলল যে হাসপাতালে ছিলেন সেখানে নিয়ে যেতে।দীর্ঘ চারমাস থাকাতে হাসপাতালের ডাক্তার,নার্স থেকে শুরু করে অনেক পেসেন্ট ই আমাদের চেনাজানা ভালো ই হয়েছিল।তাই আর দেরী না করে হাসপাতালে ই চলে যাব কোন অসহায় কিডনির পেসেন্ট কে এই মেডিসিনটি দিতে।
আম্মুর খুব ইচ্ছা কোন গরীব মানুষ কে খুঁজে আমি তাকে এই মেডিসিনটি দিয়ে তাকে সাহায্য করি।কিন্তু যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে ও আমি শেষ পর্যন্ত সেই হাসপাতালে যেতে পারিনি।কারন ওই হাসপাতালে এই চার মাসে এতো এতো স্মৃতি আছে বাবাকে নিয়ে।আমি নিজেকে সংযত রাখতে পারবো না।তাই বড় ভাবিকে আজ আমার বাসায় আসতে বললাম মেডিসিনটি নিয়ে ওই হাসপাতালে যেতে।ভাবী এসে আজ নিয়ে দিয়ে এসেছে কোন এক অসহায় পেসেন্ট কে।যাকে কিনা ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছে এই মেডিসিনটি আনার জন্য।ফেনী থেকে আসা সেই পেসেন্ট নিরুপায় হয়ে বসে ছিল।কারন মেডিসিনটি যে খুব দাম নেবে এটা তখন উনি জেনেছে ডাক্তারের কাছ থেকে।তাই সে চিন্তিত ছিল।কিন্তু প্রয়োজন বলে কথা। এরপর পেসেন্টের ছেলে মেডিসিনটি নাকি আনতে গিয়েছিল।ভাবী ঠিক তখন হাসপাতালে যায়।ভাবী হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার ও নার্সদের বিষয়টি জানায়।তারা তখন ওই পেসেন্ট কে বিষয়টি জানায়।ডাক্তার তখন পেসেন্টের মেয়েকে বলে তার ভাইকে এসে কথা বলার জন্য।পেসেন্ট সহ তার সাথের সবাই ভীষণ খুশী হয়ে যায়।বিষয়টি জেনে আমার ও খুব ভালো লেগেছে।এতে করে আমার আব্বুর আত্মা ও শান্তি পেয়েছে খুব বিশ্বাস করি।যদিও পেসেন্টের ছেলে কিছু টাকা দেয়ার জন্য খুব করে চাইছিলো।কিন্তু ভাবী তাদেরকে বলেছে আপনারা মেডিসিনটি দিলে আমার শ্বশুরের আত্মা শান্তি পাবে।তার জন্য এতো দূর থেকে আমি এটা দিতে এসেছি।আব্বুর সব সময় ই পরোপকারী মন মানসিকতা ছিল।পরের উপকার করে আব্বু অনেক বার নানা সমস্যায় জড়িয়ে গিয়েছিল,দেখেছি।তারপরেও এই পরোপকারী মন একটুও কমেনি কখনও।আব্বু মারা যাবার পর আব্বুর সব কাজ খুব সুন্দর ভাবেই হয়ে গেছে।কোনটাতে কোন ঝামেলায় পরতে হয়নি।একবারেই সব সুন্দর ভাবে হয়ে যাচ্ছে। বিষয় গুলোকে আমি পজিটিভ হিসেবে দেখছি আমার বাবার বিষয় এ।
আব্বুকে আমি সব সময় চেষ্টা করেছি তার পছন্দের খাবারগুলো তৈরি করে খাওয়াতে।আজ আব্বু আর আমাদের মাঝে নেই।তাই কোন খাবারই আর খাওয়াতে পারবো না।তবে সব সময় দোয়া পড়ছি আব্বুর জন্য। আর দান-সদকা ও করছি।আম্মু বলেছে,মৃত্যুর পর মা-বাবাকে ভালোবাসলে সন্তানদের উচিত সব সময় মা-বাবার জন্য দোয়া ও দান সদকা করা।আমরা ভাই-বোনরা তাই করে চলেছি আর করেও যাব প্রতিনিয়ত।আব্বুর আত্মার শান্তি কামনা করছি মন থেকে।সন্তান হয়ে আজ এতোটুকুই করতে হবে বাবার জন্য।বাবার জন্য অনেক দোয়া করি।আল্লাহ আব্বুকে বেহেশত নসিব করুন,আমিন।
আজ মনের অনুভূতি গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।আশাকরি আমার অনুভূতি গুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।আজ আর নয়।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।সবাই সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে
পোস্ট বিবরন
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ক্যামেরা | SamsungA20 |
পোস্ট তৈরি | @shimulakter |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার,আমি বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি (জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহন করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার বাবা যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। আপনি মেডিসিনটি গরিব মানুষকে দিয়ে ভীষণ ভালো কাজ করেছেন আপু। এমনভাবে সাহায্য করাই প্রত্যেক মানুষের উচিত। যারা ওষুধ কিনতে পারেন না তাদের পাশে দাঁড়ালে যদি আরো একটি প্রাণ বাঁচে সেটাই আমাদের কাছে অনেক।
আপু সন্তান হিসেবে আমাদের এতটুকু অবশ্যই করা উচিত। দোয়া করি আপনার আব্বু ওপারে ভালো থাকবে। আর ঔষধটি দরিদ্র লোককে দিয়ে অনেক ভালো করেছেন।ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
X-promotion
খুব ভালো লাগলো যে আংকেলের ঔষধ টি দান করে দিয়েছেন। সত্যি আংকেলের আত্না শান্তি পাবে।বেশ ভালো লাগলো পোস্ট টি।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।