শহরের অলিগলি চেষ্টায় চেনা গেলেও, মানুষ চেনা আজও বড়ো দায়।

in Incredible Indialast year
20230703_225047_0000.png

তা.. বেশ অনেক বছর হয়ে গেল, আছি আমি কলকাতা শহরে। সময়ের সাথে সাথে কাজ এবং অন্যান্য প্রয়োজনে বাইরে বেরোবার প্রয়োজনে পরিচিত হয়েছি অনেক নিত্য নতুন পথের সাথে।

আমি অনেক অভিজ্ঞ মানুষের মুখে শুনেছি, কলকাতার সমস্ত পথ পুরোপুরি চেনা দুঃসাধ্য।
কথাটি একাংশে সঠিক, কারণ একটি জায়গায় এখানে বহুভাবে পৌঁছনো যায়, সাথে নতুন নতুন নামকরণের সাথে উন্নত করা হয়েছে বেশ কিছু জায়গা।

সেখানে যেমন তৈরি হয়েছে নতুন আবাসন তেমনি সেই আবাসনের মানুষদের প্রয়োজনে নতুন রাস্তা সহ, নির্মাণ করা হয়েছে নতুন দোকানপাট আরো বহু কিছু।

(My busy city Kolkata- আমার ব্যস্ত শহর কলকাতা)

বাড়ছে মানুষের ভীড় শহরে, সাথে গুমোট হচ্ছে পরিবেশ। হারিয়ে গেছে পুরনো নাম, নতুন নামের মোড়কে পুরনো নামে ধুলো জমতে জমতে মুছে গেছে বহু জায়গা।

কাজেই, একটি জীবনে পুরো কোলকাতা শহরকে চিনতে পারা বেশ দুঃসাধ্য।
যারা প্রতিদিন কাজের কারণে বাইরে যান, মানে অফিস বাবুরা;
তাদের নিজের বাড়ি থেকে একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্তই যাতায়াত করতে হয়।

তবে এইসকল মানুষের চাইতে যারা সেলস এর কাজ করেন বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে তাদের কাছে এই শহর অনেকের চাইতে বেশি পরিচিত।

এখন প্রশ্ন হলো উপরিউক্ত কথাগুলো আজকে হটাৎ করে কেনো বলতে বসলাম?

তার কারণ হলো, যদিও আজকাল নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে অলিগলি সহজেই চেনা সম্ভব, গুগল ম্যাপ, গাড়িতে উপস্থিত নেভিগেটর, ইত্যাদি ইত্যাদির সাহায্যে।

(ব্যস্ত শহর, ব্যস্ত জীবনযাপন, ব্যস্ততার আড়ালে হারিয়ে গেছে যা কিছু ছিল আপন)

তবে নতুন প্রযুক্তির দ্বারা আজও মানুষের মন পড়বার যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়নি।
যদি হতো তাহলে অচেনা গলির মত মানুষগুলোকেও চেনা যেত অবলীলায়।

তবে আজও আমরা নিজেরা যেরকম, সামনের মানুষটিকে সেই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করি;
কারণ আমাদের কাছে পথ চেনার মত মানুষ চেনার যন্ত্র নেই।

আগে ছেলেবেলায় ভাবতাম টেলিভিশনের অপরপ্রান্তে থাকা মানুষগুলো আমাদের দেখতে পাচ্ছে, আমরা কি করছি তারাও দেখতে পাচ্ছে।

এখন ভাবলে হাসি পায়, তবে সত্যি কি আগামী প্রযুক্তি এমন আসবে যেখানে মানুষের মন পড়া যাবে, ব্যাক্তিগত বলে কিছুই থাকবে না।

জানিনা, তবে কিছু জিনিষ আড়াল থাকাই ভালো, নইলে সৃষ্টিকর্তা কর্মের হিসেব করবেন কি করে?

সামনের মানুষের মনের কথা জেনে গেলে, অথবা মানুষ চিনে ফেলতে পারলে, ভুল এবং ঠিক শব্দ দুটো হারিয়ে যাবে।
.

IMG20221119145800.jpg
(উঁচু ইমারতের উপরে দাড়িয়ে, নিচের সবকিছুই ছোটো মনে হয়, আজ তার ছাপ পড়েছে মানুষের মনে)

মানুষের জানার ইচ্ছেশক্তি হারিয়ে যাবে, গোপনীয়তা কোথাও একধরনের আত্মমর্যাদা রক্ষার পরীক্ষা;
সভ্য সমাজের একটি অঙ্গ।

ছেলেবেলা থেকে কারোর চিঠি, ডায়রী, ফোন বিনা অনুমতিতে দেখতে নেই;
কেউ কিছু দিলেই হাত পেতে নিতে নেই, কারোর বাড়িতে গিয়ে বিনা অনুমতিতে কোনো জিনিষ ধরতে নেই, বড়দের মুখে মুখে তর্ক করতে নেই।

এমন অনেক কিছু শিক্ষা পেয়ে বেড়ে ওঠা, কাজেই অন্যের বিষয়ে কৌতূহল কখনোই তৈরি হয়নি, আর জানিনা আপনারা এটাকে সমালোচনা বলবেন কিনা!

তবে আমি যেকথা পিছনে বলি, সেটা সামনে বলার সৎ সাহস আছে।
আজকে এই এলখার পিছনে কারণ, একটা সময় অবান্তর বিতর্কে জড়িয়ে কোনো একটি কমিউনিটি আমি সহ, আমাদের একটি গোটা গ্রুপকে মিউট করে দিয়েছিল।

দু'দিন ধরে সেই জায়গার মানুষের আহ্বান পাচ্ছি দেখে, পুরনো অনেক কিছু মনে পড়ে গেলো।

যাইহোক আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য শহর, সেটা যেকোনো হোক না কেনো যদিও চিনে নেওয়া যায়, মানুষের মানসিকতা বোঝা আজও বড়ো দায়।

তবে আমি মনের আঘাত এতোটাই পেয়েছি সৎ থেকেও যে এখন অনুভূতির ৮০% মৃত।

বাইরের আঘাত দেখা যায়, তাই এগিয়ে এসে কেউ হয়তো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন কিন্তু মনের ক্ষতর চিকিৎসা নিজেকেই করতে হয়; কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসক ভেবে নতুন আঘাতকে আমরা আহ্বান জানিয়ে থাকি।

কাজেই, অবশেষে তাই গানের দুটো লাইন মনে পড়ে গেলো:- এই বেশ ভাল আছি, ভাবার সময় আছে!

আর গায়ক মান্না দে তো গান গেয়ে রেখেই গেছেন:- "এই শহর থেকে, আরো অনেকদূরে...
চলো কোথাও চলে যাই।"

কত মানুষ হারিয়ে যায় সেচ্চায়। আমারও ইচ্ছে হয় মাঝে মধ্যে।

I9Ws6mn5yoT8JYcTf1.gif

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeTntZEMjmNE2ojS3wJkRgH4FAk5wzUJTnRwSJu27LuNnR3DZNbpLAeQCyaNbnKVWTpGhovHtq.gif

Sort:  
 last year 

আপনার লেখার শীর্ষ প্রকটে,,, আপনি যে কথাগুলো লিখেছেন! সেগুলো বাস্তবতার সাথে মিল আছে! বাস্তবতার মধ্যে আমরা এমনটাই হারিয়ে যাচ্ছি! যে আমরা একটা শহরকে চিনতে পারি,,, সেটা অচেনা শহর হলে,,, মানুষকে জিজ্ঞেস করে করে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি! কিন্তু একটা মানুষকে কখনো চিনতে পারিনা।

মাঝে মাঝে আমার কাছেও ভাবতে অবাক লাগে! আপন মানুষ গুলোকে আজ পর্যন্ত চিনতে পারলাম না! এমন ভাবে অভিনয় করে যে,, তাদের সামান্য অভিনয়ে আমি তাদেরকে বিশ্বাস করে ফেলে।

বাইরের আঘাত দেখা যায়, তাই এগিয়ে এসে কেউ হয়তো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন কিন্তু মনের ক্ষতর চিকিৎসা নিজেকেই করতে হয়; কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসক ভেবে নতুন আঘাতকে আমরা আহ্বান জানিয়ে থাকি।

আপনার এই কথার সাথে আমি সহমত পোষণ করছি! বাহিরের ক্ষত দেখে হয়তো কেউ সহানুভূতি পোষণ করার জন্য,,, সেখানে মলম লাগিয়ে দেয়! কিন্তু নিজের মনের ভেতর যে ক্ষত রয়েছে! সে ক্ষত নিজেকেই পূরণ করতে হয়।

বাস্তবতাকে সামনে রেখে আপনি খুবই সুন্দর একটা টপিক আজকে আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন! যে কথাগুলো আমাদের প্রত্যেকেরই জানা খুব প্রয়োজন! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা কিছু কথা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল!. ভালো থাকবেন।

TEAM 5 CURATORS

This post has been upvoted through steemcurator08. We support quality posts anywhere and with any tags. Curated by: @irawandedy

Hello, dear We developed a real-time chat portal for steemians you can log in via the steem memo key only. p2p chat and global chat available What is steemitchat.live

Vote for Pakistani female witness @stmpak.wit

https://steemitchat.live/

Loading...

TEAM 5 CURATORS

This post has been upvoted through steemcurator08. We support quality posts anywhere and with any tags. Curated by: @irawandedy

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 59139.79
ETH 2511.97
USDT 1.00
SBD 2.41