ও আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।আশা করছি সবাই পরিবারকে নিয়ে সুস্থ ভাবে দিন যাপন করছেন।আমিও আপনাদের দোয়ায় ও সৃষ্টিকর্তার রহমতে বেশ ভালো আছি।

আমি আজ আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতার আয়োজনে "শেয়ার করো তোমার ঘুড়ি বানানোর দক্ষতা"।যখন প্রতিযোগিতা ঘোষণা করা হয় তখনই চিন্তা করে রেখেছি ঘুড়িটি দ্রুত বানিয়ে ফেলবো কিন্তু সময় ও ব্যস্ততার কারণে বানানো হয়নি।আজ যখন সকালে ঘুম থেকে উঠলাম তখন ভাবলাম যে ঘুড়িটা বানাবো কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি।প্রচন্ড মাইগ্রেনের ব্যথা উঠলো তারপরও ভাবলাম যে না আজ আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ আমাকে করতেই হবে। তারপরও চেষ্টা করেছি সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।কারণ আমি অনেক বেশি অসুস্থ না থাকলে চেষ্টা করি সব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।

ঘুড়ি কখনো বানানো হয়নি তবে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দারুণ একটি আইডিয়া হয়েছে এবং অনেক আনন্দ পেয়েছি এই ঘুড়িটি বানিয়ে।আর ঘুড়ি বানানোর সময় কেন জানি ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ে গেল। ঘুড়ি বানানোর কাগজটি আমি আমার শাশুড়ির জন্য শাড়ি কিনে এনেছিলাম তার ভিতরে একটি কাগজ ছিল।সেটি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম আর সেই কাগজটি আমি ব্যবহার করেছি।আমি যে জিনিসগুলো ভালো লাগে সেই জিনিসগুলো কখনো ফেলে দেই না। আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতার জিনিসগুলো আমি খুব যত্ন করে রেখে দেই।

আজ যখন ঘুড়ি বানাচ্ছিলাম তখন প্রথম অবস্থায় কাঠিটি বাধার সময় দুই থেকে তিনবার ভেঙ্গে গেছে। তারপরও হতাশ হয়নি আমাকে চেষ্টা করতেই হবে। তারপর আবার ট্রাই করেছি।লাস্ট মুহূর্তে চেষ্টা করে আমি একটি ঘুড়ি বানাতে সক্ষম হয়েছি আমার জীবনের প্রথম ঘুড়ি।এই ঘুড়ি বানানোটা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।চলুন ঘুড়িটি কিভাবে তৈরি করেছি তা দেখে নেওয়া যাক।

উপকরণসমূহঃ-

১। পাতলা কাগজ।
২। রঙ্গিন কাগজ।
৩। চিকিমিকি কাগজ।
৪। ঝাড়ুর কাঠি।
৫। গাম।
৬। কাঁচি।
৭। সুতা।

↩️প্রস্তুত প্রণালী↪️

🎈প্রথম ধাপ🎈

প্রথমে ঝাড়ুর কাঠির এক সাইডে সুতা লাগিয়ে নিয়েছি।

🎈দ্বিতীয় ধাপ🎈

এবার সেই ঝাড়র কাঠির অপর প্রান্তে সুতাটি লাগিয়ে সুন্দর করে ধনুকের মতো করে নিয়েছি।

🎈তৃতীয় ধাপ🎈

এবার এই ধনুকের মতো বাঁকানোর মাঝখানে আরেকটি ঝাড়ুর কাঠি সুন্দর করে বেঁধে নিয়েছি।

🎈চতুর্থ ধাপ🎈

এবার ধনুকের মতো বাঁকানো ঝাড়ু কাটির এক সাইডে সুতা লাগিয়ে নিয়েছি।

🎈পঞ্চম ধাপ🎈

এবার এই সুতাটি মাঝখানে ঝাড়র কাঠির নিচে বেঁধে নিয়েছি।

🎈ষষ্ঠ ধাপ🎈

এবার নিচ থেকে আবার ধনুকের মতো বাঁকানো কাঠির অপরপ্রান্তে সুতাটি বেঁধে নিয়েছি।

🎈সপ্তম ধাপ🎈

এবার মাঝখানের যে ঝাড়ুর কাঠিটি আছে ঠিক তার মাথায় সুতা লম্বা করে বেঁধে নিয়েছি।

🎈অষ্টম ধাপ🎈

এবার এই সুতা ধনুকের ওপর সুন্দর করে বেঁধে নিয়েছি যাতে তীরের মত কিছুটা দেখতে লাগে।

🎈নবম ধাপ🎈

এবারে এই লম্বা সুতোটিকে অপুর দিক থেকে নিচ পর্যন্ত সোজা টেনে বেঁধে নিয়েছি দুই প্রান্তে।

🎈দশম ধাপ🎈

এবার সেই কুঁচকানো কাগজটি সুন্দর করে আয়রন করে নিয়েছি যাতে ঘুড়িতে লাগানোর পর সুন্দর দেখায়।

🎈এগারো তম ধাপ🎈

এবার সে কাগজের উপরে ঘুড়িটি রেখে এক সাইড এক সাইড করে সুন্দর করে স্কেলের সাহায্যে এঁকে নিয়েছি।

🎈বারো তম ধরার🎈

এবার এঁকে নেয়া কাগজটি সুন্দর করে কাঁচি দিয়ে কেটে নিয়েছি এক সাইড এক সাইড করে।

🎈তেরো তম ধাপ🎈

এবার এই কাটা কাগজের ওপর ঘুড়িটি রেখে মাঝখানে আলাদা একটা কাগজে গাম লাগিয়ে আটকিয়ে নিয়েছি।

🎈চৌদ্দ তম ধাপ🎈

এবার নিচের দুই সাইডে লম্বা দুটি কাগজ কেটে তাতে গাম লাগিয়ে দুই সাইডে আটকিয়ে নিয়েছি সুতোর উপর দিয়ে যাতে সুতা না দেখা যায়।

🎈পনেরো তম ধাপ🎈

এবার দুইটি কাগজ একটি চওড়া করে কেটে ওপরের দুই সাইডে সুন্দর করে লাগিয়ে নিয়েছি ঝাড়ুর কাঠির উপর দিয়ে।

🎈ষোল তম ধার🎈

এরপর আরো দুইটি কাগজ সুন্দর করে কেটে নিয়ে।ঘাম দিয়ে ঠিক উপরের জায়গায় সুতের উপর দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি সুন্দর করে।

🎈সতেরো তম ধাপ🎈

এবার ঘুড়ির লেজ বানানোর জন্য দুই কালার কাগজ সুন্দর করে কেটে নিয়েছি।

🎈আঠারো তম ধাপ🎈

এবার দুইটি কালারের কাগজের মাঝখানে ঘাম দিয়ে একটি একটি করে জয়েন করে দিয়ে পুরো লেজ তৈরি করে নিয়েছে এবং ঘুড়ির নিচের অংশে লাগিয়ে নিয়েছি।

🎈ঊনিশ তম ধাপ🎈

এবার চিকিমিকি কাগজ লাভ আকৃতি করে কেটে নিয়েছি।যাতে দুইটি চোখ বানিয়ে দেওয়া যায় এবং ঘুড়ির মাঝখানে চোখ দুটি লাগিয়ে নিয়েছি।

🎈বিশ তম ধাপ🎈

এইবার গোল্ডেন কালারের চিকিমিকি কাগজ মুখের আকৃতি করে কেটে নিয়েছি এবং সেটি মাঝখানে লাগিয়ে নিয়েছি যাতে মুখের আকৃতি দেখা যায়।

🎈একুশ তম ধাপ🎈

এবার গোল্ডেন কালার কাগজ নাকের আকৃতি করে কেটে নিয়েছে এবং মাঝখানে মুখের উপরে লাগিয়ে নিয়েছি যাতে মুখ,নাক এবং চোখ বোঝা যায়।

🎈বাইশ তম ধাপ🎈

এবার ঘুড়ি উড়ানোর জন্য মাঝখানে ভাগ দড়ি সুতা দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি এবং সেই সুতোর সঙ্গে উড়ানোর জন্য একটি সুতার কোন লাগিয়ে নিয়েছি।আর এভাবে হয়ে গেল আমার "আকর্ষণীয় ডিজিটাল সাপ ঘুড়ি"। এবার এই "আকর্ষণীয় ডিজিটাল সাপ ঘুড়ি" এর একটি ছবি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম।

আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।

বিষয়ঃ- ডাই পোস্ট "আকর্ষণীয় ডিজিটাল সাপ ঘুড়ি"।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।

আপনার হাজার ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে আমার এই পোস্টটি পড়ে এবং সুন্দর মতামত প্রদান করে সহযোগিতা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

🇧🇩🇧🇩আজকের মত বিদায়🇧🇩🇧🇩