বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার গল্প (দ্বাদশ পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


সি পার্ল ওয়াটার পার্ক থেকে ফিরে আমরা খাওয়া-দাওয়া করে একবারে আমাদের হোটেল রুমে ফিরে গেলাম। সারাদিন ঘোরাঘুরি আর পানির ভেতর ঝাপাঝাপি করার কারণে সবারই শরীরটা বেশ ক্লান্ত লাগছিলো। এদিকে বন্ধু রাসেল এবং ফেরদৌস দুজন জানালো তারা তাদের ছুটি বাড়াতে পারেনি। তাই সেদিন রাতেই তারা চলে যাবে। এমনিতে সেখানে গিয়েছিলাম চারজন বন্ধু। তার ভেতরে দুজন চলে গেলে কেমন লাগে সেটা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন। একবার চিন্তা করে করেছিলাম আমি আর রাফসান ও বাড়িতে ফিরে যাই। পরবর্তীতে চিন্তা করলাম এতদূর যেহেতু এসেই পড়েছি তাই আরও একটা দিন থেকেই যায়। তাছাড়া আমাদের হোটেলের ভাড়া আগেই পরিশোধ করা ছিলো। যাই হোক সেদিন আমরা বাসায় ফিরে সন্ধ্যা পর্যন্ত রুমে ছিলাম। সন্ধ্যার পরে চার বন্ধু বের হয়েছিলাম সমুদ্র দেখার জন্য। বীচের পাড়ে গিয়ে আমরা বেশ খানিকটা সময় কাটালাম।

1000001534.jpg

চার বন্ধু মিলে সমুদ্রের পাড়ে বসে নানা রকম গল্প করতে লাগলাম। মনের ভেতরে একটা চিন্তা বারবার উঁকি দিয়েছিলো যে আর কখনো আমাদের এইভাবে ঘুরতে যাওয়া হবে কিনা। কারণ এবার চারজন এসেছি বহুদিন ধরে চেষ্টা করার ফলে এবারের ট্যুরটা হয়েছিলো। রাসেল আর ফেরদৌস ফিরে যাবে এই চিন্তায় আমাদেরও মনটা কিছুটা খারাপ ছিলো। যাই হোক রাতে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর রাসেল আর ফেরদৌস চলে গেল ঢাকার উদ্দেশ্যে। আমি আর রাফসান কক্সবাজারে থেকে গেলাম। আসলে কক্সবাজার জায়গাটা আমার কাছেই বরাবরই অনেক ভালো লাগে। আমি এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার কক্সবাজার গিয়েছি। কিন্তু আমার কাছে কক্সবাজার কখনোই খারাপ লাগেনি। অনেকের কাছে শুনি কক্সবাজারে এখন অনেক ভিড় হয় সেজন্য তাদের ভালো লাগেনা। কিন্তু আমার কাছে কখনোই ব্যাপারটা এমন মনে হয়নি।


1000001532.jpg

রাতের বেলায় আমি আর রাফসান ঠিক করলাম পরদিন দুপুরের আগে যেহেতু আমাদেরকে হোটেল ছেড়ে দিতে হবে। তাই আমরা আমাদের ছোট ভাই তানজিবের বাসায় বাকিটা সময় থাকবো। কারণ আমাদের বাসের সময় ছিল রাত সাড়ে দশটা। আর আমাদের হোটেল থেকে চেক আউটের সময় ছিল সকাল সাড়ে দশটা। এই ১২ ঘণ্টা তো আর বাইরে ঘোরাফেরা করা যায় না। সেই কারণে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যদিও আমার ইচ্ছা ছিলো আরো কিছু টাকা দিয়ে হোটেলেই থেকে যাওয়ার। কিন্তু বন্ধু রাফসান আমার এই প্রস্তাবে রাজি হলো না। যার ফলে পরদিন সকালে আমরা হোটেল থেকে চেক আউট করে চলে গেলাম ছোট ভাই তানজিবের বাসায়। আসলে বাসা বলা ঠিক হচ্ছে না। তানজিব চাকরি সূত্রে কক্সবাজারেই থাকে। সে অফিসের কাছাকাছি একটা বিল্ডিং এর একটা রুম ভাড়া নিয়ে থাকে। যেহেতু ব্যাচেলর মানুষ তাই তার এক রুমে থাকতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। আমি আর রাফসান তানজিবের রুমে গিয়ে ব্যাগ রেখে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে চলে গেলাম চলে সমুদ্রে গোসল করতে।


1000001533.jpg

দুই বন্ধু মিলে দীর্ঘক্ষণ সমুদ্রে গোসল করলাম। যখন দেখলাম অনেক ক্লান্ত লাগছে তখন আমরা রুমে ফিরে এলাম। রুমে ফিরে আসার কিছুক্ষণ পরে আমি রাফসানকে বললাম চল আশেপাশের কোন একটা রেস্টুরেন্ট থেকে দুপুরের খাওয়াটা সেরে নেই। তবে রাফসান বলল তার ক্ষুধা লাগে নি। কারণ সে অনেক বেলা করে নাস্তা করেছিলো। এদিকে আমি নাস্তা করেছিলাম অনেক সকালে। যার ফলে আমার ততক্ষণে প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছিলো। আপনারা জানেন সমুদ্রে ঝাঁপাঝাঁপি করলে প্রচন্ড ক্ষুধা লাগে। আমি তানজিবের বাসা থেকে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্ট পেয়ে গেলাম। রেস্টুরেন্টটা দেখে আমার বেশ পছন্দ হয়েছিলো। তাই দুপুরের খাওয়াটা সেই রেস্টুরেন্ট থেকে সেরে নিলাম। তাদের খাবারের মানও ছিল বেশ ভালো। যদিও খাবারের পরিমাণের তুলনায় দামটা একটু বেশিই ছিলো। খাওয়া দাওয়া হলে আমি আবার তানজিবের রুমে ফিরে এলাম। তবে সেদিন আমাদেরকে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কারণ সেদিন ছিল প্রচন্ড গরম। আর বিদ্যুতের লাইনে কাজ করার কারণে তানজিবের রুমে কারেন্ট ছিল না। যার ফলে আমাদেরকে গরমের ভেতরেই দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়েছিলো। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানকক্স বাজার

logo.png



PUSS_Banner2.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @rupok,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 3 months ago 

আমার নিজের কক্সবাজার ভ্রমণের স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। আপনার সব কটি খন্ড অপূর্ব সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করা। ভীষণ ভালো লাগে পড়তে। তবে এমন চিন্তা করবেন না যে আর কখনো যাওয়া হবে না। বন্ধুদের সঙ্গে নিশ্চয়ই আবার কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ আসবে। রাতের অন্ধকারে বীচ বড় মায়াময় লাগে। আমিও পুরী বা দীঘা গেলে রাতে বীচে গিয়ে বসে থাকি। কক্সবাজার সত্যই বড় মনোরম জায়গা। সুন্দর বীচ এবং পরিচ্ছন্নতা আমার খুব ভালো লেগেছিল। সব মিলিয়ে আপনার এই ভ্রমণ পোস্টগুলি ভীষণ আকর্ষণীয়।

 3 months ago 

বন্ধুদের সাথে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার বেশকিছু অনুভূতি আপনি আজ শেয়ার করেছেন ভাইয়া।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে অনেক বিষয় জানা হলো। চার বন্ধুর মধ্যে দুই বন্ধু কাজের সূত্রে ফিরে গেলে বাকি দুজনের মন খারাপ হওয়ারই কথা।তারপরেও রোজ রোজ তো আর এতো দূরে যাওয়া হয় না।তাই বাকি দুজন থেকে ভালোই করেছেন।আপনারা হোটেল ছেড়ে এক ছোট ভাইয়ের রুমে বেশ কিছু সময় ছিলেন।অথচ বিদ্যুৎ ছিল না।তবে তো গরমে বেশ ভোগান্তিতেই পরতে হলো।

 3 months ago 

আসলে কক্সবাজার জায়গাটা আমার কাছেই বরাবরই অনেক ভালো লাগে।

ভাই আপনার মতো আমারও কক্সবাজার খুব ভালো লাগে। আমি এই পর্যন্ত ৬/৭ বার কক্সবাজার গিয়েছি মনে হয়। তবুও যতবার যাই ততবারই সবকিছু নতুন লাগে এবং মনের মধ্যে দারুণ অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যাইহোক রাসেল ভাই এবং ফেরদৌস ভাইয়ের চাকরির ছুটি না বাড়ার কারণে, আগেই কক্সবাজার ত্যাগ করেছিল,এটা জেনে আসলেই খারাপ লাগলো। আসলে একসাথে ট্যুরে গিয়ে যদি মাঝপথে কেউ ফিরে যায়, তাহলে বেশ খারাপ লাগে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

 3 months ago 

চার বন্ধু মিলে কক্সবাজার ভ্রমনে গিয়েছিলেন জেনে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। এটা অনেকেই বলে ভাইয়া ভিড় বেশি থাকলে আনন্দ করা যায় না। তবে আমার মনে হয় নিজেদের মতো করে আনন্দ করলে ভিড়ের মাঝেও আনন্দ করা যায়। তবে দীর্ঘ সময় কারেন্টের সমস্যা হয়েছিল এটা শুনে সত্যিই খারাপ লাগছে। গরমে কারেন্টের সমস্যা হলে আরো বেশি খারাপ লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.26
JST 0.040
BTC 97876.97
ETH 3483.25
USDT 1.00
SBD 3.26