অশুভ ছায়া (পঞ্চম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক


এই কথা বলে রিপন সেদিনের মত বিদায় নিয়ে চলে গেলো। এদিকে দিনের আলো দ্রুত কমে আসছে। আর সাব্বিরের মনে গত রাতের মত এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। যদিও সে তার মনকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করছে যে এগুলো তার উত্তেজিত মস্তিষ্কের কল্পনা। আবার সে এই যুক্তিও দারানোর চেষ্টা করছে যে পুরাতন বিল্ডিংয়ে নানা রকম ফাটল তৈরি হয়। সেইসব ফাটল দিয়ে বাতাস ঢুকলে নানারকম আওয়াজ শোনা যায়। হয়তো সেগুলোই হবে। কিন্তু সে যতই তার মনকে বোঝানোর চেষ্টা করুক না কেন। তার অবচেতন মন তাকে বারবার সাবধান করে দিচ্ছিল। তাকে এখান থেকে চলে যেতে বলছিল। কিন্তু সে তার মনকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করতে লাগলো যে সে একজন বিজ্ঞানমনস্ক ব্যাক্তি। সে কিভাবে ভূত-প্রেত বিশ্বাস করে এখান থেকে চলে যাবে?

Polish_20230126_003243767.jpg

যাই হোক সাব্বির শেষ পর্যন্ত তার মনের সমস্ত ভয় ঝেড়ে ফেলে বিল্ডিং এর ভিতর প্রবেশ করলো। অবশ্য আজকে সে মানসিকভাবে গতকালকে থেকে কিছুটা ভালো অবস্থানে আছে। কারণ তার হাতে একটি শক্তিশালী টর্চলাইট রয়েছে। যেটি দিয়ে অনেক দূরের কোন জিনিসও পরিষ্কার দেখা যায়। সাব্বির তার ঘরে ঢুকে প্রথমে জানালার কপাটগুলো পরীক্ষা করতে লাগলো। সে বোঝার চেষ্টা করলো এগুলো কি এমনিতেই খুলে যাচ্ছে? নাকি কোন রহস্যজনক কারণে খুলছে। তবে অনেকক্ষণ পরীক্ষা করেও তেমন কিছু দেখতে পেল না শুধু জানালার পুরনো জং ধরা কব্জাগুলো ছাড়া।

সে চিন্তা করতে লাগলো এখন সে কি করবে? বাইরে থেকে ফেরার সময় রাতের খাবার সাথে করে কিনে নিয়ে এসেছিল। যার ফলে রাতের খাবার নিয়ে আর টেনশন করতে হবে না। তাই সে রিপনকে বলে দিয়েছে রাতে আর খাবার নিয়ে আসার প্রয়োজন নেই। যদিও তার এখন মনে হচ্ছিল রাতে রিপন একবার আসলে ভালো হতো। রিপনের সাথে কিছুক্ষণ গল্প গুজব করে সময় কাটানো যেত। সাব্বির আগের দিনের মতো একটি বই নিয়ে টেবিলে বসে সময় কাটানোর চেষ্টা করতে লাগলো। আর মাঝে মাঝে সে তার ঘরের চারপাশে তাকাচ্ছিলো। অনেক বড় ঘর হওয়ার কারণে হারিকেনের আলো পুরো ঘরে একটা রহস্যময় আলো আধারির পরিবেশ তৈরি করেছে।

যারা দুর্বল মনের তাদের যে কেউ এমন পরিবেশে থাকলে এমনিতেই ভয় পেয়ে যেতো। সাব্বির মানসিকভাবে অনেকটা শক্তিশালী হওয়ায় সে এখনো তেমন একটা ভয় পায়নি। আজকে অবশ্য সে জানালার নিচের কপাট গুলো খুলে রেখেছে। মাঝে মাঝে সে জানালার ফাঁক দিয়ে টর্চ মেরে বাইরের দিকটা দেখার চেষ্টা করছিল যে সেখানে কোন মানুষজন দেখা যায় কিনা। কারণ অনেক সময় এমন হয়। পুরনো প্রপার্টি দখল করার জন্য স্থানীয় কিছু দুষ্টু লোকজন নানারকম গুজব তৈরি করে। তবে সে বারবার টর্চের আলো ফেলেও তেমন কিছুই দেখতে পেল না।

সারাদিন বাজারে ঘোরাঘুরি করার ফলে সাব্বিরের আজকেও বেশ ক্লান্ত লাগছিল। তাই সে চিন্তা করল খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বে। তাই সাথে করে কিনে আনা খাবার খেয়ে সে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ল। তবে আজকে হারিকেনের আলো কমিয়ে রাখলেও তার বালিশের পাশে টর্চ লাইট রেখে দিয়েছে। যাতে যখন কাজে লাগবে তখন সহজেই সে হাতের নাগালে টর্চ লাইটটি পেয়ে যায়। শোয়ার অল্প কিছুক্ষণের ভেতরেই সাব্বির ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু তার সেই ঘুম বেশিক্ষণ থাকলো না।

ঘন্টাখানেক ঘুমানোর পরে গত রাতের মতো সাব্বির তার ঘরের ভেতর কোনো মানুষের পা টেনে টেনে চলার শব্দ শুনতে পেলো। সাব্বির প্রথমে নাড়াচড়া না করে চুপচাপ শুয়ে থেকে দেখার চেষ্টা করল কিছু দেখা যায় কিনা। কিন্তু সে কিছুই দেখতে পেল না। তারপর হঠাৎ করে সে শব্দের উৎস লক্ষ্য করে টর্চের আলো ফেলল। আলো ফেলার সঙ্গেই গত রাতের মতো বিকট শব্দে জানালার নিচের কপাট খুলে গেল। মনে হলো কেউ দৌড় দিয়ে জানালার ফাঁকা দিয়ে বেরিয়ে গেল। ভূত-প্রেত না বিশ্বাস করা সাব্বিরের মনেও এক ধরনের ভীতির সঞ্চার হতে লাগলো। তারপর সে বিছানা থেকে নেমে গত রাতের মত হারিকেনের আলোটা বাড়িয়ে দিল। তারপর সে হারিকেন এবং টর্চ দু হাতে নিয়ে তার দরজা খুলে বিল্ডিং এর ভেতরের বিভিন্ন জায়গায় আলো ফেলে দেখতে লাগলো। কিন্তু তেমন কিছুই দেখতে না পেয়ে সে আবার তার ঘরে এসে দরজা আটকে খাটের উপর বসে রইল। (চলবে)


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58572.58
ETH 2551.35
USDT 1.00
SBD 2.47