ছিনতাইকারীর হাতে জীবন হারানো(ছোটো গল্প)

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


রফিক সাহেব গত দুদিন হোলো ছোট ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। বেড়াতে এসে জায়গাটি তার কাছে বেশ ভালই লাগছে। ছোট ভাই দীর্ঘদিন ধরে বড় ভাইকে অনুরোধ করছিলো তার বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত আর তিনি ছোটো ভাইয়ের অনুরোধ ফেলতে পারেননি। তার ছোটে ভাই ছোট্ট একটি মফস্বল শহরে থাকে। সেখানকার পরিবেশ মোটামুটি নিরিবিলি। ঢাকা শহরের মতো সেখানে এত ভিড় নেই। রফিক সাহেব ডায়াবেটিসের পেশেন্ট। তার দীর্ঘদিনের অভ্যাস রাতের খাওয়ার পরে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা। তাই রাতের খাওয়ার পর তিনি ছোট ভাইকে বলে বের হয়েছেন হাঁটতে। রাতের কোলাহলমুক্ত রাস্তায় হাঁটতে তার কাছে বেশ ভালই লাগছিলো। তিনি হাঁটতে হাঁটতে চিন্তা করছিলেন ঢাকা শহরে রাত নটার সময় এমন জনশূন্য রাস্তা চিন্তাও করা যায় না। তাছাড়া রাস্তাঘাট গুলো বেশ পরিষ্কার। ঢাকার মত নোংরা আবর্জনা দেখা যাচ্ছে না। হাঁটতে হাঁটতে তিনি একসময় তার ভাইয়ের বাসা থেকে বেশ খানিকটা দূরে চলে গেলেন। হঠাৎ তিনি খেয়াল করে দেখেন তিনি যে রাস্তাটায় চলে এসেছেন সেই রাস্তাটা একেবারেই নির্জন জনমানুষ শুন্য। এতোটা নির্জন রাস্তা দেখে তার কিছুটা ভয় লাগতে লাগলো।

Blue Aqua Minimalist Sea Soothes the Soul Quote Instagram Post_20240415_145050_0000.png

ক্যানভা দ্বারা তৈরি করা হয়েছে

তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এখন দ্রুত ভাইয়ের বাসার দিকে ফিরে যাবেন। এই চিন্তা করে তিনি কেবল ফিরতি রাস্তা ধরেছেন। এর ভেতরে হঠাৎ রাস্তার পাশের অন্ধকার থেকে সাত আট জন কিশোর এসে তাকে ঘিরে ধরলো। দূরের একটা ল্যাম্পপোস্ট থেকে হালকা আলো আসছিলো। সেই আলোতে তিনি দেখতে পেলেন কিশোরদের কয়েকজনের হাতে ধারালো ছুরি রয়েছে। হঠাৎ করে এই পরিস্থিতিতে পড়ে তিনি বেশ ঘাবড়ে গেলেন। কিশোর গুলো তার সাথে বেশ খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করলে। তারা রফিক সাহেবকে ঘিরে ধরে বলতে লাগলো এই ব্যাটা যা কিছু আছে সব বের কর। রফিক সাহেব পেশায় একজন শিক্ষক। অল্প বয়সী কিশোরদের মুখে এরকম ভাষা শুনে তিনি কিছুটা রেগে যান। তিনি তাদেরকে বললেন মুখ সামলে কথা বলো। একজন বয়স্ক মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটা তোমরা জানো না? তার কথা শুনে সেই ছিন্তাইকারী কিশোরেরা হাসতে লাগলো। এর ভেতরে একজন কিশোর এসে ছুরির বাট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলো। এবার তিনি সত্যি সত্যিই অনেক ভয় পেয়ে গেলেন। এর ভিতরে আরো দুজন কিশোর এসে তার পকেট থেকে মোবাইল মানিব্যাগ সবকিছু বের করে নিয়েছে।


সবকিছু নেয়া হয়ে গেলে কিশোরগুলো তাকে বলল সোজা এখান থেকে চুপচাপ চলে যাবি। যদি মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের করেছিস তাহলে কিন্তু জানে মেরে ফেলবো। কিশোরদের এই বেয়াদবি আর রফিক সাহেবের সহ্য হচ্ছিলো না। তিনি বলতে লাগলেন আমি এক্ষুনি থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে কমপ্লেন করবো। তেদেরকে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বো। তার কথা শেষ হতেই একজন কিশোর সামনে থেকে এসে তার পেটের ভেতরে চাকু ঢুকিয়ে দিলো। চাকুর আঘাতে রফিক সাহেব ছটফট করতে করতে রাস্তায় পড়ে গেলেন। কিশোরগুলো অবস্থা বেগতিক দেখে দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো। আর রফিক সাহেব নিষ্প্রাণ অবস্থায় সেখানে পড়ে রইলেন। পরদিন সকালে পত্রিকার পাতায় খবর এলো ছোট ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে এক নিরীহ স্কুল শিক্ষক ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 2 months ago 

কিছু কিছু জায়গায় নিজেকে কন্ট্রোল করা জরুরী যা রফিক সাহেব করতে পারেননি। তিনি শিক্ষক তার জন্য সবাইকে শাসন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এই ছেলেগুলো তো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এদের সঙ্গে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে তার জীবনটাই হারিয়ে গেলো। আসলে ছিনতাইকারীদের হাতে এরকম মৃত্যুর ঘটনা নতুন না। এগুলো অহরহই ঘটছে। এজন্য সকলকে সাবধানে থাকা উচিত।

 2 months ago 

বর্তমান কিশোর গ্যাং একটি আতঙ্কের নাম। এরা মানুষ নয় অমানুষের পর্যায়ে চলে গেছে। এদের মধ্যে হিতাহিত কোন জ্ঞান নেই। তবে রফিক সাহেবের উচিত ছিল যেহেতু মোবাইল এবং মানিব্যাগ নিয়ে গেল, উনি চুপচাপ ছোট ভাইয়ের বাসা চলে আসা। এরপর ওদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া। তা না করে তিনি সেখানেই পুলিশের হুমকি দেওয়া তার প্রাণ হারাতে হলো। তাই সবসময় সাবধানতার সাথে কাজ করা উচিত।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65733.39
ETH 3506.40
USDT 1.00
SBD 2.51