আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। মাঝে মাঝে গল্প লিখতে ভালো লাগে। তবে অনেকদিন পর পর গল্প লিখা হয়। আজকে আমি একটি গল্প লিখে আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।

জীবনের অপ্রাপ্তি জীবনটাকে কুরে কুরে শেষ করে দেয়। হৃদয়ের মধ্যখানে অদ্ভুত এক শূন্যতা যেন থেকেই যায়। নীলাদ্রি কোন একটা সময়ে হয়তো নীলাকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসা রং বদলায়। ভালোবাসার এই রং বদলানোটা কখনো কখনো সম্পর্কটার রং বদলে দেয়। আর শেষ হয়ে যায় সুন্দর এক মধুর সম্পর্ক। নীলিমার জীবনে ভালোবাসা এসেছিল এক আশীর্বাদ হয়ে। সুখেই ছিল তারা।

কলেজের ফাংশনে তাদের প্রথম পরিচয় হয়েছিল। নীলিমা আর নীলাদ্রির পরিচয়টা বন্ধুত্ব দিয়েই শুরু হয়েছিল। বন্ধুত্ব থেকে ধীরে ধীরে তাদের মাঝে হয়তো ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছিল। কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। হয়তো ভালোবাসার কথা কেউ কাউকে কখনো প্রকাশ করতে পারেনি। কিন্তু অন্য রকম অনুভূতি হৃদয় মাঝে তৈরি হয়েছিল। দেখতে দেখতে তিনটি বছর কেটে যায়। নীলিমা মনে মনে নীলাদ্রিকে ভালোবাসতো।

কিন্তু আজকাল নীলিমার মনে হয় নীলাদ্রি নীলিমাকে ভালোবাসে না। হয়তো আগেও বাসতো না। নীলিমা বুঝতে পারেনি। নীলাদ্রি আজকাল অহনা নামের মেয়েটির সাথে সময় কাটাতে বড্ড পছন্দ করে। নীলিমা তাদের একসাথে ঘুরে বেড়াতেও দেখেছে বহুবার। কিন্তু কখনো নীলাদ্রির সামনে গিয়ে বলার সাহস পায়নি। কারণ সে সত্যিটা সহ্য করতে পারবেনা। এভাবে কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। নীলিমার হৃদয়টা যেন দিনে দিনে একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। ভালোবাসার অপ্রাপ্তি তাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল।

এভাবে কেটে যায় বেশ কিছুদিন। দেখতে দেখতে ইউনিভার্সিটির জীবন শেষ হয়ে যায়। পড়াশোনা শেষ তাদের। তাই এখন খুব একটা দেখা হয় না তাদের। হঠাৎ একদিন নীলাদ্রি নীলিমাকে ফোন করে আর তার সাথে দেখা করতে চায়। নীলিমা হয়তো ভেবেছিল তাকে সে তার ভালোবাসার কথা জানাবে। হয়তো তাদের বন্ধুত্বটাকে ভালোবাসায় রূপ দিবে। নীলিমা বুকে অনেক আশা নিয়ে নীলাদ্রির সাথে দেখা করতে বেরিয়ে পড়েছিল। পরনে ছিল তার নীল রঙের শাড়ি। খোঁপায় ছিল বেলি ফুলের মালা।

নীলিমাকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। নীলিমা আগে পৌঁছে গিয়েছিল। তাই নীলাদ্রির জন্য অপেক্ষা করছিল। নীলাদ্রি এসেছিল কিন্তু সাথে ছিল সেই মেয়েটি অর্থাৎ অহনা তার সাথে ছিল। অহনা আর নীলাদ্রিকে একসাথে দেখে নীলিমার যেন ভেতরটা একেবারে ভেঙে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে নীলাদ্রি একটি কার্ড বের করে দিয়ে বলে তারা বিয়ে করতে চলেছে। আর পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হচ্ছে। এরপর কিছুক্ষণ গল্প গুজব করে তারা দুজনে চলে যায়। নীলিমা সেখান থেকে ওঠার শক্তি যেন পাচ্ছিল না। অপূর্ণতায় ভেতরটা যেন শেষ হয়ে যাচ্ছিল। ভালোবাসার মানুষটিকে চিরতরে হারিয়ে ফেলল। তার ভেতরের স্বপ্নগুলোকে হারিয়ে ফেলল। ভালোবাসার অপ্রাপ্তিতে ভরে উঠেছিল তার জীবনটা।