আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে প্রেমের পাখি। এই নাটকটি সপ্তাহ দুয়েক আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে তৌসিফ মাহবুব এবং তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এই নাটকটি একটি বাস্তব সম্মত নাটক,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।

নাটকের শুরুতে দেখা যায়, নাটকের নায়িকা তটিনী স্কুল থেকে বাসায় ফিরে তার বান্ধবীর সাথে। তটিনীর স্কুল থেকে সবাই পিকনিকে যাবে বলে,তটিনীরও পিকনিকে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু তটিনীর বাবা প্রচন্ড রাগী বলে,সে তার বাবাকে এটা বলার সাহস পায় না। সেজন্য তটিনী তার মা এবং দাদীর মাধ্যমে এটা বলায়। কিন্তু তটিনীর বাবা তবুও রাজি হয় না। তটিনীকে মূলত একটি ছেলে প্রাইভেট পড়ায় তটিনীর বাসায় গিয়ে। সেই ছেলের মা অসুস্থ বলে,ঢাকা নিয়ে যেতে হবে। তাই সেই ছেলেটা তটিনীকে কয়েকদিন পড়াতে পারবে না। সেই ছেলেটা তটিনীর বাবার কাছে সেটা বলেছে। তো তটিনীর বাবার কথা অনুযায়ী,কয়েকদিনের জন্য একজন শিক্ষক ম্যানেজ করে দেয় তটিনীর টিচার। তটিনীর টিচারের বন্ধু হচ্ছে তৌসিফ। তৌসিফকে অনুরোধ করে রাজি করানো হয় তটিনীকে পড়ানোর জন্য।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

যদিও তৌসিফ রাজি ছিলো না,কিন্তু বন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়ে সে রাজি হয়। তো তৌসিফ যখন তটিনীর বাসায় পড়াতে যায়, তখন তটিনী বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করতে থাকে না পড়ার জন্য। কারণ তটিনী পড়াশোনায় খুবই ফাঁকিবাজি করে। সেটা তৌসিফ তটিনীর বাবার মুখ থেকে শুনে জানতে পারে। পরবর্তীতে তটিনীকে পড়াশোনা করার জন্য ভালোভাবে চাপ দেয় তৌসিফ। কিন্তু তৌসিফ ধীরে ধীরে তটিনীকে পছন্দ করতে শুরু করে। সে তটিনীকে দেখার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। আর পড়ানোর সময় তো বারবার তটিনীর দিকে তাকায়। তো একদিন রাস্তায় তটিনীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় তৌসিফ। কিন্তু তটিনী বলে,তার বাবার কাছে বিচার দিবে। সেটা শুনে তৌসিফ ভয় পেয়ে যায় এবং সে আর পড়াতে যায় না তটিনীকে। একদিন তটিনী এবং তার বান্ধবী তৌসিফের বাসায় যায়। তারপর তৌসিফকে বলে পড়াতে যেতে। শেষ পর্যন্ত তৌসিফ রাজি হয় পড়াতে যেতে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

এরপর থেকে তারা চুটিয়ে প্রেম করতে থাকে। একদিন রাতের বেলা তটিনী ধরা পড়ে যায় তার দাদীর কাছে। তারপর তটিনীর দাদী তটিনীর মা'কে এটা বলে। এরপর তটিনীর মা,তৌসিফকে পড়াতে আসতে নিষেধ করে। একদিন রাতের বেলা তৌসিফ এবং তটিনী যখন বাহিরে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো, তখন তটিনীর বাবার লোকজন তাদেরকে দেখে ফেলে। তারপর তটিনীর বাবার লোকজন তৌসিফকে ধরে এনে,ইচ্ছেমতো মারধর করে। এরপর থেকে তটিনীর বাহিরে বের হওয়া নিষেধ হয়ে যায়। তটিনীর বাবা হচ্ছে সেই এলাকার প্রভাবশালী লোক। তাই তিনি কিছুতেই চান না,তটিনীর সাথে তৌসিফের কোনো সম্পর্ক থাকুক। তো একদিন তটিনী অনেক কষ্টে বাসা থেকে বের হয়ে, তৌসিফের সাথে দেখা করে এবং বলে যে তাকে ভুলে যেতে। কারণ তাদের সম্পর্ক কখনোই তটিনীর বাবা মেনে নিবে না। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

আসলে সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো ধনী গরীব ভেদাভেদ করে না। এই নাটকেও এমনটা দেখা গিয়েছে। তাইতো তটিনী মন থেকে ভালোবেসেছে তৌসিফকে। কিন্তু বেশিরভাগ মা বাবারা এই ধরনের সম্পর্ক মেনে নিতে চায় না। তারা নিজের মেয়ের ভালোবাসার কথা ভাবে না। বরং তারা ভাবে, ছেলের অর্থ সম্পদ রয়েছে কিনা। তারা এককথায় অর্থ সম্পদকে প্রাধান্য দেয়। আর সেজন্য বেশিরভাগ মেয়েদের মন ভেঙে যায়। তারপর তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়। পরিবারের ইচ্ছেতে তারা বিয়ে করে ঠিকই, কিন্তু ভালোবাসার মানুষকে কখনোই ভুলতে পারে না। বরং কারণে অকারণে ভালোবাসার মানুষের কথা তাদের মনে পড়ে। যাইহোক নাটকটি একেবারে বাস্তব সম্মত। কারণ এই ধরনের ঘটনা বাস্তবে অহরহ ঘটছে। তটিনীর অভিনয় এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি।

আমার রেটিং