জেনারেল রাইটিং পোস্ট || নেশাগ্রস্ত মানুষ হিতাহিতজ্ঞানশূন্য পশুতে পরিণত হয়ে যায়
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে নেশাগ্রস্ত মানুষ হিতাহিতজ্ঞানশূন্য পশুতে পরিণত হয়ে যায়। আমরা সবাই মাদকাসক্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে জানি। দিনদিন মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে মাদকাসক্ত হয়ে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি সমাজের বেশিরভাগ তরুণেরা সঙ্গ দোষে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখা। তাছাড়া প্রতিটি সমাজে সংগঠন থাকা উচিত। যারা মাদক নির্মূল করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করবে। যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক,আমাদের মহল্লার একটি ছেলে,নাম হচ্ছে রশিদ। অনেকে বলে ছেলেটার মাথায় কিছুটা সমস্যা আছে, আবার অনেকে বলে মাদকাসক্ত।
তবে বেশিরভাগ মানুষের মুখ থেকেই শুনি ছেলেটা মাদকাসক্ত। আগে ছেলেটা আমাদের এলাকার তুলার ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো। কিন্তু বেশ কয়েকমাস ধরে সে কোনো কাজ করে না। তার ওয়াইফ এবং তার ভরণপোষণের দায়িত্ব আপাতত তার বড় ভাই নিয়েছে। রশিদের বড় ভাইয়ের আমাদের মহল্লায় বেশ কয়েকটি তুলার কারখানা রয়েছে এবং সে ভালোই ইনকাম করে বলে,রশিদ এবং তার ওয়াইফ এর ভরণপোষণের দায়িত্ব সাময়িকভাবে নিতে রাজি হয়েছে। যাইহোক রশিদের র্কমকান্ড দেখে মহল্লার মানুষজন তার উপর খুবই বিরক্ত। সে মহল্লায় অনেকের বাড়িতে গিয়ে গিয়ে মানুষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু তার আচরণ স্বাভাবিক না হওয়ায়, সবাই বেশ বিব্রতবোধ করে। তার বড় ভাইকে বলা হয়েছে তার মাথায় যেহেতু কিছুটা সমস্যা রয়েছে, তাকে বাসায় কিছুদিন আটকে রাখতে এবং তাকে মানসিক ডাক্তার দেখানোর জন্য।
রশিদের ভাই বললো তাকে মানসিক ডাক্তার দেখানো হচ্ছে, কিন্তু কোনো উন্নতি হচ্ছে না। তারপর সবাই বলে যে রশিদের মনে হয় মানসিক সমস্যা নেই, তবে সে হয়তোবা মাদকাসক্ত, তাই সে পাগলের মতো আচরণ করে। কিন্তু তার ভাই বলে যে, রশিদ মাদকাসক্ত নয়। মাদকাসক্ত না হলে কিংবা মানসিক সমস্যা না থাকলে,সুস্থ কোনো মানুষ এমনটা করতে পারে না। যাইহোক রশিদ মসজিদে নামাজ পড়তে যায় এবং মসজিদের ভিতরে হেঁটে হেঁটে জোরে জোরে কোরআন তেলাওয়াত করে। এতে করে তাকে তেমন কিছু কেউ বলে না। আসলে রশিদ একসময় ভালোই ছিলো। তবে হঠাৎ করে এমন হয়ে যাবে, সেটা কেউ ভাবেনি। যাইহোক রশিদ কয়েকদিন আগে বিকেল বেলা এক লোকের সাথে ছোটখাটো একটা বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি করে। সেই লোকটা রশিদের আত্নীয়। সেই লোকের একটা দোকান রয়েছে।
তো রশিদ সেই তর্কাতর্কির জের ধরে, সন্ধ্যার পর সেই লোকের দোকানে গিয়ে চাপাতি দিয়ে সেই লোককে চরমভাবে আহত করে। পরবর্তীতে শুনলাম যে সেই লোকের শরীরে ২৬ টা সেলাই লেগেছে। লোকটা গুরুতর আহত হয়ে এখন দুর্বিষহ জীবন পার করছে। সেই লোকের পরিবার রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চেয়েছিল,কিন্তু সবাই বুঝানোর পর মামলা করেনি। যেহেতু রশিদ সেই লোকের আত্মীয় এবং তারাও জানে যে তার কিছুটা সমস্যা রয়েছে,সেটা ভেবেই তারা মামলা করেনি রশিদের বিরুদ্ধে। তবে রশিদের বড় ভাই বলেছে সেই লোকের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ দিবে এবং রশিদের যথাযথ বিচার করা হবে। এখন কথা হচ্ছে, এই যে রশিদ এমন একটা জঘন্য কাজ করার পরেও তার তেমন কোনো শাস্তি হয়নি, এতে করে তার সাহস কিন্তু আরও বেড়ে গিয়েছে। পরবর্তীতে সে হয়তোবা আরও বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করতে পারে। যাইহোক আমাদের সবার উচিত মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ১১.১১.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রশিদ যদি মাদকাসক্ত না হয় তবে এমন কেন করছে তা ভাববার প্রয়োজন আছে। সে যে কাজটা করেছে তা যদি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তার অপরাধ এড়িয়ে যাওয়া হয় তবে আপনাদের আশঙ্কাই সত্য হবে সে আরও অনেক ঘৃণ্য কাজ করবে৷
কি বলি দাদা৷ আমার রিসার্ভেশন টিকিট একটা এজেন্ট কাটে। আমি সকলের মুখেই শুনেছি সে মদ্যপ বলে৷ এবার টিকিটে সে ফিমেলের জায়গায় মেল লিখে দিয়েছে। এখন ট্রেনে উঠে এক বিপত্তি। উফফ৷
এদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে বাঁচতে কিসের অসুবিধা হয় বুঝি না৷
আসলে এসব মানুষ কারো ক্ষতি করতে দ্বিতীয়বার ভাবে না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
বরাবরই আমাদের কিন্তু ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয় মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে কিন্তু কই দিন দিন তো মাদকাসক্তির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সবথেকে অবাক হলাম আমি যে ছেলেটা একসময় কোরআন তেলাওয়াত করতো সেই ছেলেটার আজ এই করুন অবস্থা। আত্মীয়র শরীরে এমন ভাবে আঘাত করেছে যেখানে ছাব্বিশ টা সেলাই দেওয়া লেগেছে। তার মানে সেটা বড়সড়ো ক্ষতি একটি। সে যদি মানসিক রোগী না হয় এবং এমন ক্ষতি করেও যদি সে ছাড় পেয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে আরো খারাপ কিছু করবে। আর যদি মাদকাসক্ত হয় তাহলে তাকে কড়া শাস্তি দিতে হবে। যাইহোক আপনার সাথে আমিও একমত মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই আমাদের কাজ এটাই আমাদের দায়িত্ব।
সে এখনও মসজিদে গিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করে মাঝেমধ্যে। ষোলটা সেলাই না ভাই ২৬ টা সেলাই লেগেছে। যাইহোক আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঐ লোককে আপাতত আইনের হাতে না দিয়ে রিহ্যাব সেন্টরে দেওয়া দরকার। আপনার কথা যতটা শুনে বুঝলাম লোকটার মানসিক সমস্যা হয়ে গিয়েছে। এই সমস্যা টা এখন আমাদের সমাজে বেশ বাজে প্রভাব ফেলছে। এটা বলে বোঝানো যাবে না।
সমস্যা হচ্ছে তার পরিবার দাবি করে রশিদের মানসিক সমস্যাও নেই, আবার মাদকাসক্তও না। তবে আমাদের কথা হচ্ছে, কোনো সুস্থ মানুষ তো এমনটা করতে পারে না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আমি মনে করি এখন ওই লোককে আইনের হাতে না দিয়ে রিহ্যাবে দিয়ে দেওয়া উচিত৷ কারণ তার এখনো এই মাদকাসক্তি থেকে বের হতে হবে৷ যদি সে মাদকাসক্তি থেকে বের হতে না পারে তাহলে সে প্রতিদিন এরকম কাজ করেই যাবে৷ একই সাথে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সবাইকেই সচেতন করা হচ্ছে৷ আজকে আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ ধন্যবাদ এই পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷
রিহ্যাবে দেওয়া যেতো,যদি তার পরিবার বিশ্বাস করতো সে মাদকাসক্ত। কিন্তু তার পরিবার তো এটা বিশ্বাস করে না। যাইহোক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নেশাগ্রস্ত মানুষ আসলেই হিতাহিত জ্ঞান সম্পন্ন না। বর্তমান বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজগুলো অবাক করে দিচ্ছে। নেশা মানুষের কতটা ক্ষতির কারণ সেগুলো আমরা ক্রমান্বয়ে বুঝে যাচ্ছি।ওই লোকটা মানসিক রোগী যেটা মনে হচ্ছে ।ওনাকে ট্রিটমেন্ট করানো দরকার আগে কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা ,ধন্যবাদ।
তাকে মানসিক ডাক্তার দেখানো হচ্ছে, তবে কোনো উন্নতি হচ্ছে না। আবার অনেকে তাকে নেশা করতেও নাকি দেখেছে। তাই সবাই বলছে সে সুস্থ, কিন্তু মাদকাসক্ত। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।