স্মৃতিচারণঃ বর্ষাকালে বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় গল্প// শেষ-পর্ব-

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

বর্ষাকালে বন্ধুদের সাথে অনেক স্মৃতিময় গল্প আমাদের জীবনে রয়ে আছে। আসলে এই স্মৃতির পাতায় যেন হাজারো গল্প জমা থাকে। সেই ছোটবেলার দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে হাজারো রকমের ঘটনা যেন আমাদের এই হৃদয়ের মাঝে রয়ে আছে। তবে বর্ষাকালে বন্ধুদের সাথে ভেলা বানিয়ে স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা আজও মনে পড়ে। কারণ তিন বন্ধু মিলে কলাগাছ ভেলা বানিয়েছিলাম। আর এই ভেলায় করে আমরা বর্ষাকালের অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করতাম। আর বর্ষার পানির ভিতরে আমরা সবাই ভ্রমন করতাম। আসলে এই দিনগুলোর কথা আজ খুবই মনে পড়ে, তাই বর্ষাকালে ভোলা বানানোর সেই স্মৃতিময় গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি শেষ পর্বের গল্প করে আপনাদের ভালো লাগবে।


তারপরে আমরা তিন বন্ধু মিলে যখন ভেলা নিয়ে সকালবেলা ভ্রমণ করতে আসলাম, সেই মুহূর্তটা অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি এবং আমাদের গ্রামের রাস্তার পাশে একটি বট গাছ ছিল, আর ওই বট গাছের পাশেই ছিল একটি ব্রিজ আর আমরা ভেলা বানিয়ে এই ব্রিজের কাছে আসলাম। ভিলা বট গাছের সাথে বেঁধে রেখে আমরা ব্রিজের উপরে বসে থাকলাম। ব্রিজের উপর থেকে বর্ষার এই সৌন্দর্যময় দৃশ্যগুলো উপভোগ করতেছিলাম। অনেকেই মাছ ধরার জন্য নানারকম ব্যবস্থা করছে, তবে আমরা তিন বন্ধু দেখতে পেলাম ব্রিজ সাথেই মাছ ধরার দুটিটি খাঁচার মতো জমা হয়ে আছে। তাই আমরা বন্ধুরা এটি তোলার জন্য চেষ্টা করতে ছিলাম।

children-1822704_1280.jpg

Source

তারপরে আমরা তিন বন্ধু মিলে যখন সেই মাছ ধরার খাঁচাটির পানি থেকে তুললাম, আসলে এটি ব্রিজের পাশেই যেন আটকে গিয়েছিল, আর এগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি করা। এর মুখ বন্ধ শুধু মাছ ঢোকার জন্য দুইপাশে দুটি ছিদ্র এবং পরবর্তীতে পাশে একটি ছিদ্র থাকে। এটাকে দিয়াল বলা হয় আমাদের এলাকায়। এই দিয়াল যখন এখানে জমা হয়ে ছিলো আমরা তিন বন্ধু মিলে সেগুলো আস্তে আস্তে তুললাম। তুলেই দেখতে পেলাম এই দেয়ালে অনেক মাছ ধরা পড়েছে, আসলে ছোট ছোট মাছ ধরা পড়েছে টেংরা থেকে শুরু করে জিয়াল এবং একটি বাইম মাছ ধরা পরেছে। এটি দেখতে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত হলাম, ব্রিজের উপরে উঠে নিয়ে আসলাম। আর বন্ধু রফিককে বললাম আর একটি দিয়াল যেন ধরে থাকে ওটা যেন স্রোতে ভাসিয়ে না যায়।

তারপরে রফিক আরেকটি দেয়াল ধরে থাকলো। আমরা এই দিয়ালটি ব্রিজের উপর রেখে, আবারো আরেকটি তোলার জন্য গেলাম মসেটি তুলতে গিয়ে আমি পানিতে পড়ে গিয়েছিলাম। তারপরে কষ্ট করে রফিক আমাকে উঠালো এবং ওই দেয়ালটিকে উঠালাম, ওই দিয়ালটি উঠিয়ে দেখতে পেলাম এই দিয়ালে তিনটি বড় বড় বাইম মাছ ধরা পড়েছে। সত্যিই দিয়ালটি অনেক ভারী ছিল। আমরা কষ্ট করে এই দিয়ালটি ব্রিজ এর উপরে উঠিয়ে নিয়ে আসলাম। আর এই দেয়ালে এতগুলো মাছ দেখতে পেয়ে যেন আনন্দে আমরা আত্মহারা হয়ে গেলাম। আসলে এভাবে দেয়াল ও মাছ ধরা পড়বে আমাদের সাথে সেটা ভাবতেই পারিনি। তাই দিয়াল গুলোসহ আমরা কিভাবে নিয়ে যাব এটাই যেন পরিকল্পনা করতেছিলাম।

boy-1807518_1280.jpg

Source

তারপরে এই দিয়াল থেকে কিভাবে মাছ বের করে নিয়ে যাব সেটা যেন ভাবতেছিলাম এবং রফিক বলল এই দেয়াল থেকে যদি আমরা মাছ বের করি তাহলে মাছ আমরা কিভাবে নিয়ে যাব। আমাদের তো মাছ রাখার কোন পাত্র নেই। তাই আমি বললাম যে এই দেয়ালসহ আমরা বাসায় নিয়ে যাই। দিয়াল গুলো আমাদের ভেলায় তুলে বাসা নিয়ে যাবো।আর সুজন বলল যে দিয়ারসহ নিয়ে গেলে যতাহলে সবাই বলবে আমরা চুরি করে এনেছি। তখন আমি বললাম যে সকল ঘটনা তাদেরকে বলতে হবে, কারণ আমরা কোন অন্যায় করিনি। এই দিয়ালগুলো আমরা পেয়েছি। এই ঘটনা সবাইকে বললে আশা করছি বিশ্বাস করবে, কারণ বর্ষার স্রোতে অনেক কিছুই যেন ভেসে আসতেছে। আর এই দিয়াল তো আসার কথা। তাই কেউ কিছু বলবে না। তখন রফিক বললো ঠিক আছে তাহলে তাই করা হোক।

তারপরে আমরা মাছসহ সেই দেয়ালগুলো ভেলায় তুলে বাড়ির দিকে আসলাম। বাড়ীর ঘাটে দেখতে পেলাম বড় ভাই। বড় ভাই দেখে বলল তোরা কই থেকে চুরি করে নিয়ে এসেছিস। তারপরে ভাইয়াকে সফল ঘটনা বললাম, আসলে এরকম ঘটনা সবাই ভাবে যে আমরা কোথা থেকে হতে চুরি করে নিয়ে এসেছি। কিন্তু ভাইকে সকল কিছু বলার পরে ভাই বিশ্বাস করল। তারপরে বলল ঠিক আছে আজকে এই মাছ দিয়ে আমরা সবাই একসাথে খাব, আর কিছু মাছ আমার বন্ধুদের বাড়িতে দেওয়া হলো।আর সেই মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের হবে, তারপরে রাতের বেলা সবাই মিলে এই মাছগুলো দিয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম। আর এই দিয়ালগুলো রেখে দিলাম, যদি আমাদের গ্রামে বা অন্য কারো হয় তাহলে তাকে দিয়ে দেবে।আর মাছগুলো খেয়েছি এটা তাদের বলবে। তাই আমরা অনেক আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তগুলো উপভোগ করেছি। আসলে বন্ধুদের সাথে সেই স্মৃতিময় দিনগুলো অনেক আনন্দময় ছিল, তো বন্ধুরা আশা করছি এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 8 months ago 

আপনার বর্ষাকালের বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। বর্ষাকালে আমরাও কলা গাছ দিয়ে ভেলা তৈরি করতাম।যখন প্রচুর বৃষ্টি হতো তখন কলা গাছ দিয়ে ভেলা তৈরি করে ভ্রমণ করতাম।আপনার এই পোস্ট পড়ে ছোট বেলার কথা গুলো মনে পরলো।যাইহোক আপনারা মাছ ধরে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করছেন শুনে খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার নিজের অনুভূতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

বর্ষাকালে ভেলা বানিয়ে ভ্রমণের মুহূর্তগুলো সত্যি অনেক আনন্দের। আপনারা বন্ধুরা মিলে দিয়াল পেয়েছিলেন তার ভিতর অনেকগুলো মাছ পেয়েছেন। অনেক আনন্দের সাথে সবাই মিলে মাছ খেয়েছেন। সত্যি আমরাও বর্ষাকালে স্রোতে অনেক কিছুই পেতাম। আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 64153.02
ETH 3205.80
USDT 1.00
SBD 2.63