"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ১৪ || আম চুরির ঘটনা।
আজ - ১৬ই, চৈত্র , ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | বসন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন ভাবতাম কখন বড় হব। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি যে ছোটবেলায়টায় সবথেকে সুন্দর এবং আনন্দের।
কিছুদিন আগে আমাদের কমিউনিটিতে একটি সুন্দর কনটেস্ট আয়োজন করা হয়েছে যে কনটেস্টে এর বিষয়বস্তু হচ্ছে "জীবনে মজার কোন - গ্রীস্মকালীন ফলের গল্প"। আর এত সুন্দর একটি কনটেস্টে অংশগ্রহণ না করে থাকতে পারলাম না। যদিও আমার এই কনটেস্ট অংশগ্রহণ অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। তবুও আমি যে আমার শৈশবে ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি এটাই আমার কাছে অনেক।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আমার ছোটবেলাটা কেটেছে গ্রামে। সেই সুবাদে আমার গ্রামের অনেক সুন্দর কিছু স্মৃতি রয়েছে। তার মধ্যে গ্রীষ্মকালীন ফল নিয়ে একটি স্মৃতি রয়েছে যা কখনোই ভুলা সম্ভব নয়। আজ আমি আপনার সাথে আমার শৈশবে সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতিটি শেয়ার করব।
তো চলুন শুরু করি -
ঢিল মেরে কাঁচা আম পাড়তে গিয়ে বন্ধুর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া।
আমি ছোটবেলায় খুবই দুষ্ট এবং চঞ্চল প্রকৃতির ছিলাম। এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারতাম না। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি ছুটাছুটি মধ্যে থাকতাম। যাই হোক প্রতিবছরের মতো ওই বছর ও গ্রীস্মের ছুটিতে স্কুল বন্ধ দিয়ে দিয়েছে। আর স্কুল বন্ধ হলেই আমাদের সবসময় পরিকল্পনা থাকতো নানাবাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার। আমাদের বাড়ি থেকে আমাদের নানু বাড়ি অনেকটা দূরে হওয়ায় আমরা চাইলেই সবসময় হুটহাট করে নানু বাড়িতে বেড়াতে যেতে পারতাম না। তাই আমরা সবসময় অপেক্ষায় থাকতাম কখন স্কুল বন্ধ হবে আর আমরা কখন নানুর বাড়িতে বেড়াতে যাব।
অনেক দিন বেড়ানোর প্রস্তুতি নিয়ে চলে গেলাম নানুবাড়িতে, আমার অন্যান্য কাজিনরাও চলে এসেছে গ্রীষ্মের ছুটিতে নানু বাড়িতে বেড়াতে। সব কাজিনরা একত্র হয়ে বেশ ভালোভাবেই গ্রীষ্মের ছুটি উপভোগ করছিলাম নানুবাড়িতে।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আমাদের নানুবাড়িটি ছিল অনেক বড় এবং একা বাড়ি। মোটামুটি সব ধরনের ফলের গাছের ছিল। তবু আমাদের শখ ছিল অন্যের বাড়ির গাছ থেকে ফল চুরি করার। আমার তিনটি বন্ধু ছিল, নানাবাড়িতে বেড়াতে আসলেই আমি সবসময় তাদের সাথে থাকতাম।
একদিন দুপুর বেলাই বাড়ির সকালেই খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমাচ্ছিল। তো আমার তিন বন্ধ এবং আমার সমবয়সী এক কাজিন আমরা সকলে মিলে পরিকল্পনা করলাম আম চুরি করতে যাব। যেমন ভাবনা তেমন কাজ বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে আছে সেই সুযোগে আমরা বেরিয়ে পড়লাম এই ভর দুপুরে আম চুরি করতে। গ্রীস্মের শুরু হাওয়াই কিছু গাছে আমের মুকুল ধরেছে আবার কিছু গাছে ছোট ছোট আম ধরে আছে।
আমাদের নানার বাড়ির পাশে একটি বাড়ি ছিল। ওই বাড়িটিকে বৌদ্ধদের বাড়ি বলে। ওদের একটি আম গাছের বাগান ছিল। তো আমরা সকলেই চলে গেলাম ওই আম বাগানে আম চুরি করতে। দুপুরবেলা হওয়ায় ওই বাগানে তেমন কোন লোকজন ছিল না। আর ওই বাগানে আম গাছ গুলো অনেক বড় বড় ছিল। তাই আমরা আম গাছে না উঠেই নিচে থেকে ঢিল মারা শুরু করলাম আম পাড়ার জন্য। আর চারিদিকে গাছপালা হাওয়াই প্রচণ্ড বাতাস ছিল তখন। যাইহোক সকলে একবার একবার করে ঢিল মারছিল কিন্তু কোন আমই পড়ছিলো না। তো তাদের এসব দেখে আমি একটু ভাব নিয়ে বললাম তোদেরকে দিয়ে কিছুই হবে না আমাকে দেয় আমি মারবো, দেখবি অনেক গুলো আম পড়বে।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
তো আমি প্রথমবার ঢিল মারতেই একটি আম পড়েছিল।এরপর আবার ঢিল মারলাম কিন্তু কোন আম পড়লো না। এরপর তৃতীয়বার ঢিলটি গিয়ে পরল আমার বন্ধুর মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে সে চিৎকার করে মাথায় হাত দিয়ে নিচে বসে পরলো। এরপর আমি তার কাছে ছুটে গেয়ে দেখলাম মাথায় চাপা দেওয়া হাতটি লাল হয়ে আছে এবং কপাল দিয়ে ফোটা ফোটা রক্ত গরিয়ে পড়ছে।
বন্ধুর এমন অবস্থা দেখে সত্যিই গা শিউরে উঠলো। কি করব বুঝতে পারছিলাম না। আমরা সকলে খুব ভয় পেয়ে গেছি।
আম নেওয়ার জন্য আমরা একটি গামছা এনেছিলাম সাথে করে তখন সে গামছাটা দিয়ে বন্ধুর মাথা পেচিয়ে আমরা বাড়ি নিয়ে আসি তাকে। এরপর তাকে গ্রামের সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মাথায় ১২ সেলাই দেয়া হয়।
ওই দিনের সেই ঘটনাটি কখনোই ভুলার নয় সারা জীবন আমার মনে থেকে যাবে।
তো এই ছিল আমার গ্রীষ্মের ফল নিয়ে মজার এবং ভয়ঙ্কর একটি ঘটনা। আমি এখানে ছোট করে ঘটনাটি শেয়ার করেছি। আশাকরি আপনাদের ভাল লেগেছে। তো আজ এ পর্যন্তই সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ঠিকই বলছেন ভাই, শৈশবের স্মৃতিগুলো কখনো ভুলার মতো না। কারণ আমাদের মজার সব ঘটনা ধরতে গেলে শৈশবকে ঘিরেই। আজও সেই শৈশবের স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়। তখন ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই সোনালী অতীতে।
এটা খুবই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ভাই। আম চুরি করতে গিয়ে বন্ধুর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া। মাথায় কি সেলাই দিতে হয়ে ছিলো??
আসলে শৈশবের স্মৃতি গুলো বড়োই মধুর ছিল। শৈশবের সেই সোনালী দিন গুলো হয়তো ফিরে পাওয়া যাবে না তবে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা সকলের মজার মজার সব গল্প গুলো পড়ার সুযোগ পেলাম। ভাইয়া আপনার আম চুরির গল্পটি খুবই মজা করে পড়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে যখন জানতে পারলাম আপনার ঢিলে আপনার বন্ধুর মাথা ফেটে গেছে তখন খুবই খারাপ লাগলো। আসলে এসব অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি হঠাৎ করেই তৈরি হয়। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি আপনার গল্পটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
ভাইয়া আমি যখন আপনার আম চুরির ঘটনা পড়ছিলাম তখন শৈশবের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। সত্যি কথা বলতে শৈশবের সেই দিনগুলো অনেক সুন্দর ছিল। তবে আম চুরি করতে গিয়ে আপনার বন্ধুর মাথায় আঘাত লেগেছে এটা খুবই দুঃখজনক। এরকম পরিস্থিতির ভিতরে আমিও পড়েছিলাম একবার। আমার বন্ধুরা মিলে সুপারি চুরি করতে গিয়ে উপর থেকে সুপারি পড়ে আমার এক বন্ধুর মাথায় আঘাত লেগেছিল। আসলে তখনকার সময় সুপারি দিয়ে আইসক্রিম পাওয়া যেত। তাই বাগানের সুপারি চুরি করেছিলাম। অনেক সুন্দর ভাবে আপনার এই ঘটনাটি উপস্থাপন করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️♥️♥️
শৈশবের স্মৃতি গুলো সত্যি ভোলা অসম্ভব ব্যাপার। আমি আমার শৈশবের স্মৃতি গুলো এখনো মিস করি। ওই দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম তাহলে খুব ভালো হতো। ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর একটি গল্পটি লিখেছেন ভাইয়া। ভাইয়া আপনার আম চুরি ঘটনার সাথে আমার ও কিছুটা মিল রয়েছে। সব মিলিয়ে আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া শৈশবকাল ছিল আমাদের জন্য একটি স্বর্ণালী সময়। এ সময় আমরা তো কিছু করতে পেরেছি এখন তা পারি না এখন আমার হাত-পা বাঁধা। ঐসময় শিশুদের দুরন্তপনা ভালো লাগত এখন যখন সেই সময় ফিরে যাই তখন নিজেকে খুব একলা লাগে মনে মনে ভাবি যদি আবার ছোট হতাম সবার আদরের হতাম।
ছোটবেলায় আমি যখন ছুটি পেতাম না আমি বাড়িতে যেতাম অনেকদিন ধরে থাকতাম আর এখন প্রায় কয়েক বছর হল নানু বাড়িতে যাই না। আমার সমবয়সী কেউ নাই আর। নানা নানি বেঁচে নেই তাই যেতে ইচ্ছা করেনা । তবে আপনার আম চুরি গল্পটি প্রথমে ভাল লেগেছিল তার বাড়ির সবাই কি ঘুমিয়ে গেছে তখন আপনারা আম পড়তে গেলেন । কিন্তু ঢিলের আঘাতে যখন আপনার বন্ধুর সাথে আঘাত লাগলো তখন বেশি খারাপ লেগেছে। আসলে এইসব করতে গেলে অনেক সময় বিপদের সম্মুখীন হতে হয় সতর্ক না থাকলে। অনেক বড় ক্ষতি হতে পারতো কিন্তু অল্পের জন্য হয়তো বড় কিছু হয়নি তবুও ষোলটা সেলাই অনেক বড়ই বলা চলে। আপনার শৈশবের গল্পটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো আবার খারাপ ও লাগলো। আমি একবার ঠিক আম পারতে গিয়ে গাছ থেকে পরে হাত ভেঙে ফেলেছিলাম। আসলে ছোট বেলায় ঘটনা গুলো মনে পড়ে অনেক হাঁসি পায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া আপনার শৈশবের গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার শৈশবের কাহিনী পড়ে বেশ ভালোই লাগলো। স্কুল কলেজ বন্ধ হলেই মনে হতো নানাবাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার কথা। সবাই নানাবাড়িতে গিয়ে কম বেশি দুষ্টমি করে।এটা কোনো ব্যাপার না। কিন্তু সবাই যখন দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েছে সেই সুযোগে আম চুরি করতে যাওয়া খুব ভালো লেগেছে কিন্তু আম পারতে না পারায় বন্ধুর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনা বেশ দুঃখ জনক ছিলো। আপনার শৈশব কালের গল্প টি পড়ে বেশ ভালো লাগছে। সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Please consider to approve our witness 👇
Come and visit Italy Community
ভাই বন্ধুর সঙ্গে কি আগে কোন ঝামেলা ছিলো নাকি আপনার। সুযোগ পেয়ে মাথাটা ফাটিয়ে দিলেন নাতো হাহাহাহা। আসলে ছোটবেলার এই সমস্ত চুরির জন্য কখনো অপরাধবোধ কাজ করে না। কেননা এগুলো ছিল শুধুই আনন্দ। অনেক ভালো লাগলো আপনার গল্পটি পড়ে। ধন্যবাদ
সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।