চন্দ্রকেতুগড়

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

নমস্কার বন্ধুরা,

কলকাতার পাশেই লুকিয়ে আছে বঙ্গের এক অজানা প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস। আসলে আমি ক'দিন ধরেই কাছে পিঠে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা খুঁজছিলাম। কলকাতার আশপাশেই হবে আবার এক দিনে ঘুরে আসাও যাবে। সেই থেকেই খোঁজ পেলাম চন্দ্রকেতুগড়ের। সকালের ঠান্ডা উপেক্ষা করেই সাড়ে দশটার ট্রেনে চেপে সোজা হাড়োয়া রোড স্টেশনে পৌঁছলাম। ঘড়িতে তখন দুপুর ১২ টা ছুঁই ছুঁই। স্টেশনে যখন নামলাম সকালের কনকনে ঠান্ডাটা তখন পুরোটাই কেটে গিয়েছে। স্টেশন থেকে বেরিয়েই বেড়াচাঁপা যাওয়ার অটোতে উঠে চন্দ্রকেতুগড় মোড়ে নেমে পড়লাম। তারপর কিছুটা গুগল ম্যাপসের সাহায্য নিয়ে এবং কিছুটা লোকের মুখে শুনে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম মাটির উঁচু ঢিপির মতো এক জায়গায়। ঢিপির মাঝ দিয়ে সরু পথ দেখে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতেই পেলাম একটা বড়ো লোহার গেট তার সাথে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের এক পোস্টার।

PXL_20240114_122004131_copy_1209x907.jpg

PXL_20240114_122029059_copy_1209x907.jpg

চন্দ্রকেতুগড়ের সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের আড়াই হাজার বছর আগে মৌর্য শাসনকালের পূর্বের বঙ্গে ফিরে যেতে হবে। রাজা চন্দ্রকেতুর নামেই শহরের নামকরন। আদি গঙ্গার পাশে গড়ে ওঠা বন্দর সভ্যতার নিদর্শন চন্দ্রকেতুগড়। যেটা বঙ্গের পাল এবং সেন বংশ পর্যন্ত ছিলো। একটা সময় ছিল যখন চন্দ্রকেতুগড়ের পাশ দিয়ে আদিগঙ্গা বয়ে গঙ্গা নদীতে এসে পড়তো সেই সুবাদে চন্দ্রকেতুগড় হয়ে ওঠে সমৃদ্ধ এক বন্দর শহর।

PXL_20240114_122115901_copy_1209x907.jpg

PXL_20240114_122507996_copy_1209x907.jpg

প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের পোস্টারে খনন কার্যের সম্পর্কে লেখা থাকলেও চন্দ্রকেতুগড়ের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই লেখা ছিলো না। আশপাশের মানুষের কাছে জানতে পারলাম চন্দ্রকেতু গড়ের রাজবাড়ির প্রাচীরের অংশ আজকের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের অন্তর্গত বিশাল এই ঢিপি। দেওয়ালের একাংশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ সংরক্ষণ করে রেখেছে। ঢিপিটা দূর থেকে দেখতে অনেকটা বড় পুকুর বা দিঘির পাড়ের মতো মনে হলেও আসলে এটাই ছিল রাজা চন্দ্রকেতুর প্রাসাদের প্রাচীরের অংশ। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে কোন খননকার্যই হয়নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যে ঢিপির আশেপাশে অল্প একটু খুঁড়লেই সেই সময়কার জিনিসপত্র পাওয়া যায়। যেমন মাটির পুতুল, মাটির বাসনপত্র থেকে শুরু করে অনেক কিছুই।

PXL_20240114_122723645_copy_1209x907.jpg

জানিনা খনন কার্য করলে কি পাওয়া যেতে পারে তা নিয়ে মনে কৌতূহল থেকে গেলো। সেই সময় মানুষ কেমন ভাবে থাকতেন। তাদের এতো সমৃদ্ধ এক রাজত্ব কিভাবে ধ্বংস হয়ে গেল। জানার বহু ইচ্ছা মনে জমিয়েই পরবর্তী গন্তব্যে এগিয়ে গেলাম।

PXL_20240114_122033423_copy_1209x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Sort:  
 6 months ago 

দাদা ইতিহাস সম্পর্কে জানতে বরাবরই আমার ভীষণ ভালো লাগে। ঢিপির মাঝখানের সরু পথটা দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। তবে চন্দ্রকেতুগড়ের ইতিহাস সম্পর্কে লেখা থাকলে, অনেক কিছুই জানতে পারতেন দাদা। আশেপাশের মানুষজন যেহেতু বলেছে, অল্প একটু খুঁড়লেই সেই সময়কার জিনিসপত্র পাওয়া যায়, তাহলে তো মনে হচ্ছে অনেক কিছুই রয়েছে মাটির নিচে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উচিত খননের কাজ শুরু করা। তাহলে সবাই অনেক কিছু দেখার সুযোগ পাবে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। এমন তথ্যমূলক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57610.17
ETH 3118.28
USDT 1.00
SBD 2.39