এবারে বান্দরবান (পর্ব-১২)। ||১৭-০১-২০২৫|| by @kazi-raihan
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।
দুই মাসের অধিক সময় ধরে আপনাদের সাথে বান্দরবান নিয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি করে পর্ব শেয়ার করে আসছি সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আপনাদের সাথে ১২ তম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। গত সপ্তাহে ১১ তম পর্ব শেয়ার করেছিলাম তাই চলতি সপ্তাহের ১২ তম পর্ব নিয়ে লিখতে বসেছি। যারা নিয়মিত আমার পোস্টগুলো পড়েন তারা হয়তো আমার বান্দরবান ভ্রমণের অনেকগুলো পর্ব পড়েছেন। বান্দরবন ভ্রমণের আজকের ১২ তম পর্ব দিয়ে আমি বান্দরবান ভ্রমণের সবগুলো পর্বের ইতি টানছি অর্থাৎ এটাই ছিল আমার বান্দরবান ভ্রমণের শেষ পর্ব। আমরা বান্দরবানের নাফাখুম পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিলাম আর আজকের পর্বে বান্দরবানের নাফাখুম এর বেশ কিছু দৃশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব। মূলত এই পর্বের সেরা মুহূর্তগুলো নাফাখুম নিয়ে লিখেছি।
১১ তম পর্বে আমরা রেমাক্রি থেকে সকালের নাস্তা কমপ্লিট করে নাফাখুমের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। রেমাক্রি থেকে নাফাখুম পৌঁছাতে প্রায় দুই ঘন্টার অধিক সময় লাগবে যেহেতু দুই ঘন্টা একটা দীর্ঘ সময় তাই রেমাক্রি থেকে নাফাখুম এর পথে পর্যটকদের জন্য বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দোকান স্থানীয় আদিবাসীরা তৈরি করেছে যেখানে আপনি চা সহ বেশ কিছু শুকনো খাবার পাবেন। মজার বিষয় হচ্ছে একটা চায়ের দোকান আছে যার সামনের প্রকৃতির সৌন্দর্যটা সবাইকে আকৃষ্ট করে। ছোট্ট একটি জলপ্রপাত জলপ্রপাতের মাঝ দিয়ে ছোট বড় অনেকগুলো পাথর রয়েছে ধীরে ধীরে স্রোত যাচ্ছে। এই সৌন্দর্যটা সবার কাছেই বেশ ভালো লাগে বিশেষ করে যারা চা প্রিয় মানুষ তারা চায়ের কাপ নিয়ে গিয়ে সেই জায়গাটাতে বসে ভালো সময় কাটাতে পারে। হ্যাঁ নিচের ছবিগুলো দেখলে দৃশ্যটা বুঝতে পারবেন শুধু তাই নয় সেই নদী থেকে মাছ ধরে আবার মাছগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে সেখানে কাবাব আকারে রাখা হয়েছে অনেকেই সেগুলোকে টেস্ট করছে আবার কেউ নদীর সাথে চায়ের ফিলিংসটা গ্রহণ করছে।
বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
নাফাখুম জলপ্রপাত, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
কিছুটা চা-বিরোধী শেষে আবার আমরা যাত্রা শুরু করলাম। নদীর পাশ দিয়ে মাঝে মাঝে স্যাতস্যাঁতে ভেজা পথ আবার পাথর আবার কখনো উঁচু-নিচু পথ সবমিলিয়ে এটা ছিল আমার জীবনের প্রথম ট্রাকিং। কিছুটা ক্লান্ত লাগছিল আবার সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে বেশ ভালোই লাগছিল। মাঝে মাঝে কিছু কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে যেন মনের সাহস জাগা ছিল আবার সবার সাথে গানের আড্ডায় পথ যেন কমে আসছিল দীর্ঘ দুই ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে আমরা যখন নাফাখুম পৌঁছালাম তখন সব কষ্ট যেন দূর হয়ে গেল। অনেক দূর থেকেই এই সৌন্দর্য দেখে মনটা ফ্রেশ হয়ে গেল সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেল মন চাইছিল একটা দৌড় দিয়ে কাছে চলে যায়। আর দেরি নয় ফোন বের করে বেশ কিছু ছবি তুললাম আর চিন্তা করছিলাম সৃষ্টিকর্তার কি অপরূপ সৃষ্টি।
নাফাখুম, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
সেখানে অনেক মানুষের আনা গোনা অনেকেই দূর থেকে আসছে আবার অনেকেই রাত্রে এখানে থেকেছে। যারা সকাল সকাল রেমাক্রি পৌঁছেছে তারা ট্র্যাকিং করে নাফাখুম চলে আসে। পর্যটকদের জন্য এখানে থাকার সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। রাত্রি আপনি যখন পাশের হোটেল গুলোতে ঘুমোবেন তখন রাতের বেলায় আপনার কানে এই জলপ্রপাতের শব্দ বেশ ভালো লাগবে। ঝিঝিঁ পোকার ডাক আর জলপ্রপাতের এই শব্দ সবকিছুই যেন আপনাকে বান্দরবানের প্রতি আকৃষ্ট করবে। উপর থেকে ছোট দুটি শিশু এই জলপ্রপাত থেকে পানি নিতে এসেছে তখন আমি তাদের নাম জিজ্ঞেস করলাম। তারা অবশ্য নাম বলেছিল তবে দুঃখের বিষয় তাদের নামটা এই মুহূর্তে মনে নেই। তারা আমার কাছে ১০ টাকার আবদার করে বসে। যদি ছবি দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন তাদের হাতে একটা দশ টাকার নোট আছে। আমি যখন তাদের দশ টাকা গিফট করলাম তখন তারা দুজন প্রশান্তির একটা হাসি দিয়েছিল তাদের হাসি দেখে বোঝা যাচ্ছিল কতটা খুশি হয়েছে।
বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/swatted.engraving.shall
সকালের দারুন আবহাওয়া টা উপভোগ করলাম। সময়টা মনে রাখার মত ছিল। আবার আমরা নাফাখুম থেকে রেমাক্রির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। যখন আমরা রেমাক্রির দিকে রওনা হলাম তখন আমাদের সাথে আরো বেশ কিছু পর্যটক যুক্ত হয়েছিল। আসার সময় আমাদের মজার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল একজন সিনিয়র আপুর আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছিল। তিনি মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সাথে বেশ দ্রুতগতিতে পাহাড়ি পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে হ্যাঁ ফেরার পথে একটি বিষয় লক্ষ্য করেছিলাম যাওয়ার সময় যতটা দূরের পথ মনে হয়েছে আসার সময় খুব একটা দুর মনে হয়নি। এই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আবার কখন যে পৌঁছে গেলাম সেটা বুঝতেই পারিনি। তবে শেষ দিকে একটু কষ্ট হয়েছিল কারণ তখন দুপুর পেরিয়ে গিয়েছিল সবার পেটে কিছুটা ক্ষুধা ছিল তাই অল্প হলেও ক্ষুধা অনুভব হয়েছিল। আসার পথে লক্ষ্য করলাম আদিবাসীরা গাছ কেটে নদী পথে তাদের গন্তব্যস্থলে নিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে আমরা দ্রুত রেমাক্রি এসে আমাদের দুপুরের খাবার খেলাম যেটা আগে থেকে অর্ডার করা ছিল। দুপুরের খাবারটাও বেশ মজার ছিল পাহাড়ি মুরগি ভুনা আহ্ বলতেই জিহ্বায় জল চলে আসে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমার হোটেলে গিয়ে পুরোপুরি টাকা পরিশোধ করে নৌকায় আবার থানচির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।


VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের দেশে এত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে জেনে আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি বেশ অনেকগুলো পর্ব আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এর আগে আমি অনেকগুলো পর্ব লক্ষ করেছি। আজকের পর্বটাও বেশ অনেক ভালো লাগলো সুন্দর এই স্থান দেখে। এছাড়াও আপনার চমৎকার অনুভূতি করে। অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া বান্দরবান ভ্রমণের আরো একটি পর্ব দেখতে পেরে।
আপনার সুন্দর মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।