দেখে আসলাম সুন্দর একটি পরিবেশ।।
বাংলা ভাষায় মনের আনন্দে ব্লগ লেখো-
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে আশ্চর্য একটি জায়গার বর্ণনা শেয়ার করবো। যেখানে এক পাশে রয়েছে মসজিদ অপর পাশে রয়েছে মন্দির। যেখানে এক পাশে রয়েছে শ্মশান অপর পাশে রয়েছে গোরস্থান। একই এরিয়াতে দুই ধর্মের দুইটি উপাসনালয়। এখানে মানুষ ধর্ম বর্ণ জাত-পাত সবকিছু ভুলে মানুষের পরিচয় হিসেবে বছরের পর বছর বসবাস করছে। যেখানে ধর্মীয়ভাবে কোন ভেদাভেদ নেই। যেখানে হিন্দু মুসলিম সবার সব সময় প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। হিন্দুরা মন্দিরে পুজো করছে, অপর পাশে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হচ্ছে। মুসলমানদের উৎসবে হিন্দুরা যোগ দিচ্ছে, হিন্দুদের উৎসবে আবার মুসলমানরা যোগ দিচ্ছে। একে অপরের বিপদে-আপদে সব সময়ই কাছে থাকছে। এটাই হলো আমাদের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চিত্র।
বন্ধুরা আপনারা হয়তো বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে এই জায়গাটির সম্পর্কে বর্ণনা পেয়ে থাকবেন। আপনারা গুগলে সার্চ করলেও এ জায়গাটির বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারবেন। এই জায়গাটি আর কোথাও নয়, সেটা হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম পাশে। জায়গাটি সাধারণত মাসদাইর কবরস্থান রোড হিসেবে পরিচিত। নারায়ণগঞ্জ শহরে এসেছি আমার অনেক বছর হয়ে গেছে। কিন্তু আমার ওইদিকে তেমন যাওয়া আসা হয় না। কিন্তু বন্ধুবান্ধব কলিগ সবার কাছে এই জায়গাটি সম্পর্কে বিভিন্ন কথা শুনতে পাই। সেজন্য সরাসরি দেখার ইচ্ছা নিয়ে গত পরশুদিন হাঁটতে হাঁটতে চলে গেছিলাম সে জায়গাটি দেখার জন্য।
নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে ফতুল্লা উপজেলা যাওয়ার পথে মাজদাইর এলাকায় পৌঁছালেই হাতের ডান পাশে দেখা যায় বিশাল বড় একটা মসজিদ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এটাকে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ বলা হয়। আমি সেখানে গিয়ে এশার নামাজ আদায় করেছিলাম। মসজিদটি সরকারিভাবে করা হয়েছে। পাঁচ তলা বিশিষ্ট মসজিদটি গোরস্থানের পূর্ব পাশে অবস্থিত। এ মসজিদের পশ্চিম পাশে বিশাল বড় জায়গা নিয়ে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় গোরস্থান। এখানে ধনী-গরীব ছোট-বড় আলেম সাধারণ মানুষ সবাইকেই কবর দেওয়ার অনুমতি। তবে গুরুস্থানের কর্তৃপক্ষকে কোন বিনিময় দেয়া লাগে কিনা সেটা আমি শিওর দিয়ে বলতে পারিনা। আমি গোরস্থানের ভিতরে প্রবেশ করি নাই। এক তো রাতের বেলা গিয়েছিলাম, আবার আমি ছিলাম একা। সেজন্য ভিতরে আর প্রবেশ করা হয়নি। রাস্তার মধ্যে দাড়িয়ে কয়েকটা ফটোগ্রাফি নিয়েছিলাম।
গোরস্থান এরিয়া শেষ হওয়ার পরে পশ্চিম পাশে রয়েছে ছোট্ট একটি পুকুর বা লেক। পুকুরের গোসল করার জন্য অথবা পানি নেওয়ার জন্য রয়েছে বিশাল বড় একটি ঘাটলা। এই পুকুরটির পূর্ব পাশেই রয়েছে গোরস্থানের অবস্থান, আর পশ্চিম পাশে ও উত্তর পাশে রয়েছে হিন্দুধর্মালম্বীদের বিশাল বড় মহাযজ্ঞ। সেখানে রয়েছে তাদের সমাধিস্থল, মন্দির, শ্মশান সহ রয়েছে হিন্দু পুরোহিত গণদের আশ্রম। বিশাল বড় এই এলাকাটি চারপাশে বাউন্ডারি করা। তবে সবার জন্য আলাদা আলাদা বড় করে গেইট করা আছে। সকল ধর্মের মানুষ যেকোনো সময় যেকোনো গেইট দিয়ে প্রবেশ করার স্বাধীনতা রয়েছে।
উপরের দুইটি ফটোগ্রাফিতে আপনার যে রাস্তাটি দেখতে পাচ্ছেন, সে রাস্তা ধরেই আমি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন জায়গাটা খুবই নীরব। শুনশান নীরবতা লক্ষ করা যাচ্ছে, তেমন একটা মানুষজন দেখা যাচ্ছে না। রাস্তার দুই পাশেই হিন্দু পুরোহিতগনদের ছোট ছোট আশ্রম দেখা যায়। আমি দুই পাশে তাকিয়ে ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। যেহেতু এসব জায়গাতে আমি আর কখনো যাইনি, তাছাড়া আমি একা ছিলাম, সেজন্য ভিতরে ভিতরে কিছুটা ভয় পাচ্ছিলাম। কারণ ফটোগ্রাফি করলে আবার কেউ কিছু বলে কিনা সেই টেনশন করছিলাম। তবে আমাকে কেউ কিছু বলে নি, আবার কেউ বাধাও দেইনি। আমি সোজা মূল মন্দিরের এরিয়ার ভিতরে চলে গেলাম।
মূল মন্দিরের এরিয়া তে গিয়ে দেখি সেখানেও তেমন একটা মানুষ জন নেই। একপাশে দেখেছিলাম সম্ভবত প্রসাদ তৈরি করা হচ্ছে। অন্য পাশে কিছু লোক বসে কথাবার্তা বলতেছিল। এখানে যদি বিভিন্ন ধরনের মানুষ থাকতো তাহলে হয়তো আমি আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতাম। যেহেতু জায়গাটা নীরব সেজন্য আমি দুইটি ফটোগ্রাফি ক্যাপচার করে সেখান থেকে চলে আসলাম। যদি আমার সাথে আমার দুই একজন ফ্রেন্ড বা কলিগ থাকতো তাহলে সম্পূর্ণ জায়গাটা ঘুরে দেখা যেতো। যাইহোক ভবিষ্যতে দিনের বেলা সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। সম্পূর্ণ এরিয়াটা ঘুরে দেখবো। তো বন্ধুরা আজকে এখান থেকে বিদায় নিলাম। সবার জন্য শুভকামনা রইল। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
নাম | দেখে আসলাম সুন্দর একটি পরিবেশ ।। |
স্থান | মাসদাইর, নারায়নগনঞ্জ , ঢাকা, বাংলাদেশ। |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
অনেক অনেক ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে। বিশ চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের চিন্তাধারা। যেখানে মন্দির মসজিদ কবর শ্মশান পাশাপাশি রয়েছে নেই কোন বিভেদ। আসলে আমরা এমনই একটা সমাজ কামনা করি যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবে না।
জি ভাই ওই জায়গাটাতে গেলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সুন্দর একটি চিত্র ফুটে উঠে। ধন্যবাদ।
আমি জানি না কেন প্রতিটা ধর্মীয় স্থানে এমন সুন্দর শান্ত এবং নির্মল হয়ে থাকে। হয়তো মানুষ ধর্মীয় স্থানে গিয়ে মন থেকেই নিজেকে সমর্পণ করেন। আপনার বর্ণনা পড়ে আমিও কেমন স্নিগ্ধ হয়ে গেলাম।
জী আপু ধর্মীয় উপাসনালয় গুলো খুবই সুন্দর এবং নির্মল থাকে। ধন্যবাদ।
অনেক ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করতে দেখে। আসলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষকে অনেক শিক্ষা দিয়ে থাকে। আর সব সময় মনের মধ্যে এই বিষয়টাই লালন করতে হবে আমরা সবাই সমান। তাহলে আমাদের পরিবেশটাও হবে সুন্দর।
জী আপু বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক বলে কিছু নেই। সবাই আমরা মানুষ এটাই আমাদের মূল পরিচয়। ধন্যবাদ।