প্রেমের বিয়ে সবসময় সুখের নাও হতে পারে 💔 || দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year

1000029399.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

"প্রেমের বিয়ে সব সময় সুখের নাও হতে পারে" গল্পটির প্রথম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আজকে দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব শেয়ার করব। আশা করছি ভাল লাগবে।

তাদের বিয়ে দু'বছর কেটে গেলে শামীমের বাবা-মার শামীমকে বলে সে এবার যেন কিছু একটা করে। এভাবে বাবা মায়ের উপর দিয়ে আর কতদিন চলবে। শামীম ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয় সে ঢাকায় গিয়ে কোন একটা চাকরি করবে। আসলে তার পড়াশোনাও খুব একটা বেশি নেই। তবে ঢাকায় যাওয়ার পর সে খুব ভালো একটা চাকরি পায়। এরপর সে মিষ্টি কে নিয়ে ঢাকায় চলে যায় এবং সেখানে তাদের বেশ সুখের একটি সংসার গড়ে ওঠে। তবে ঐ যে কথা আছে সুখ বেশিদিন কারো কপালে সহ্য হয় না। হয়তো তাদের ক্ষেত্রেও এটাই হল।

প্রথম যখন সে মিষ্টিকে নিয়ে ঢাকায় যায় তখন তারা ছোট্ট একটি বাসায় ওঠে কারণ শামীমের বেতন খুবই অল্প ছিল।এভাবেই চলছিল তাদের জীবন। এরপর আস্তে আস্তে শামীমের বেতন বেড়ে যায় এবং তারা খুবই সুখে-শান্তিতে সংসার করতে থাকে। এর মধ্যে তাদের সংসারের নতুন অতিথি চলে আসে। তাদের ঘর আলো করে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। শামীম কোম্পানির কাজে প্রায় সময় বাহিরে থাকে।কখনো কখনো মাসের অর্ধেক সময় বাহিরে থাকে। তখন মিষ্টি মেয়েকে নিয়ে একাই বাসায় থাকে।

এরপর বছর দুয়েক কেটে গেছে। তাদের মেয়ে এখন অনেকটা বড় হয়েছে। হঠাৎ করে শামীম মিষ্টির মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করে। যেমন শামীমের সাথে খুব কম কথা বলা, সব সময় ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকা, রান্নাবান্না না করা। প্রায় দিনেই শামীম না খেয়ে অফিসে চলে যায় বাহিরে নাস্তা করে নেয়।শুক্রবারের দিন শামীম বাসায় আছে। সকালবেলা খাওয়া-দাওয়া করে সে রুমে ঘুমাচ্ছিল।ঘুমের মধ্যে শামীমের কানে কিছু কথা ভেসে আসছিল। তখন তার ঘুমটা ভেঙে যায় এবং পাশের ঘরের দিকে যায়।সে রীতিমতো অবাক হয়ে যায়। মিষ্টি কারো সাথে কথা বলছে।

সে ভালোভাবে শোনার জন্য আরো এগিয়ে যায়। তার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে মিষ্টি অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে। সে কোন শব্দ না করে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তাদের কথা শুনছিল।শুনে সে যেটা বুঝতে পারলো অনেক দিনের সম্পর্ক তাদের। এরপর সে আবার চুপচাপ গিয়ে রুমে বসে পড়ল। মিষ্টির কথা বলা শেষ হলে মিষ্টি যখন শামীম এর কাছে যায় তখন শামীম তাকে সব কিছু বলল এবং বোঝানোর চেষ্টা করল যে আমাদের এত সুখের সংসার এভাবে নষ্ট করো না। যা হবার হয়ে গেছে আজকে থেকে কথা বলা বন্ধ করে দাও।

মিষ্টি তখন শামীমকে কথা দেয় যে ঠিক আছে এমনটা আর হবে না। কিন্তু মিষ্টি তার কথা রাখেনি। প্রতিনিয়ত সেই ছেলেটার সঙ্গে কথা বলে।একটা সময় এই নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি বাঁধে। শামীম অনেক চেষ্টা করে সংসারটাকে টিকিয়ে রাখার। কিন্তু কিছুতেই আর ধরে রাখতে পারে না। এই অশান্তির শেষ হয় ডিভোর্স দিয়ে। তারা এখন দুজন দুদিকে কিন্তু মাঝখানে তাদের মেয়েটা কষ্ট পাচ্ছে। ভবিষ্যতে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে এটা তারা জানে না।

কার মনে কখন কি চলে বলা যায় না। মিষ্টি আর শামীম ভালবেসে বিয়ে করেছিল কিন্তু তারপরও মিষ্টি অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। যা একটি সম্পর্ক বা সংসার ভাঙার জন্য যথেষ্ট কারণ। আমরা অনেকেই মনে করি প্রেম করে বিয়ে করলে কিংবা একে অপরের সম্পর্কে জানা থাকলে ভবিষ্যতে সুখী হতে পারব।কিন্তু আসলেই কি সেটা? হবে হয়তো। আবার নাও হতে পারে।

তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই আশা করছি এই গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আমি চেষ্টা করি বাস্তব ঘটনাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার। দেখা হবে আবারো পরবর্তীতে নতুন কোন গল্প নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006403.gif

1000006401.gif

Sort:  
 last year 

হুম আপু 🥺 বর্তমানে প্রেমের বিয়ে সব সময় সুখের হয় না।এটা একদম বাস্তব কথা আমাদের অঞ্চলেই এরকম দেখা যায় বিয়ের পর কিছু মাস চলে তারপর আর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে যায়। আসলে প্রেমের বিয়েতে যে একটা সম্মান। এটা থাকে না। প্রথম পর্ব টা পড়েছিলাম আপু হয়তো।শামীম শহর অঞ্চলে চলে গেছিল ছোট্ট একটা সংসার করেছিল কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন ছিল না। একটা কথা কি শামীম কিন্তু তার কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। শামীম যদি তার বউ এর দিকে একটু খেয়াল রাখতে সব কাজ ফেলে একটু যদি সময়টা গুছিয়ে নিয়ে তাকে সময় দিতে পারতো। তার বউ কিন্তু এমন করত না শামীম তার কাজকর্মে ব্যস্ত হওয়ার কারণে বউ একাকীত্ব ফিল করে সেও কি করবে সেও কিছু একটা বেছে নিল।আসলে এটা সবারই ভুল। সত্যিই এটা বর্তমানে চলছে। স্বামী স্ত্রী দুজনের কিন্তু বিয়ে হবে। মাঝখান থেকে ছেলেমেয়েরা কষ্ট পায় এবং
ছেলেমেয়েরা এতিম হয়ে যায়। অনেক অনেক খারাপ লাগলো এবং এটাই ঘটতেছে চারিদিকে তাই আমাদের পরিবারের প্রতি বেশি যত্নশীল হতে হবে।

 last year 

এটা ঠিক বলেছেন আপু হয়তো শামীমের আরও বেশি সময় দেয়া লাগতো তার পরিবারকে। আবার যারা বিপথে চলে যাবে তাদের সময় দিলেও যাবে আর না দিলেও যাবে।মাঝখান থেকে শুধু ছেলেমেয়েরা কষ্ট পায়। আমার কোন শত্রু পরিবারেও যেন এমন পরিস্থিতি না আসে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আপু, যদিও বা আপনার এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমার পড়া হয়নি, তবে শেষ পর্বটি পড়ে শামীম ও মিষ্টির প্রেম করে বিয়ে, অতঃপর সংসার ভেঙে যাওয়ার পরিণতি বেশ ভালই বুঝতে পারলাম। আপনি ঠিক বলেছেন আপু, প্রেমের বিয়ে যে সবসময় ভালো হয় তা কিন্তু নয়। আমার চোখে দেখা এমন অনেক প্রেমের বিয়ে দেখেছি, যেখানে সুখের চেয়ে অশান্তি বিরাজ করে বেশি। তবে মিষ্টি কিন্তু খুবই খারাপ কাজ করেছে, স্বামীর অবর্তমানের সুযোগ পেয়ে সে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছে। একদিকে শামীম যেমন সংসারে সুখের জন্য কঠোর পরিশ্রমে ব্যস্ত ছিলেন, আর অন্যদিকে সেই সময়ে মিষ্টি অন্য কারোর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এমনটি আসলে হওয়া উচিত ছিল না। শামীম ও মিষ্টির ভালোবাসা আর ভালবাসা রইল না। ভালোবাসা কথাটি খুবই অর্থবহ এবং মধুর সম্পর্ক, আর এ সম্পর্কের মান অনেকেই জানেনা আপু। আর এজন্যই হয়তো শামীম ও মিষ্টির ডিভোর্স হয়ে গেছে, আর সেই ডিভোর্সের বলিদান হতে হয়েছে তাদের সন্তানকে।

 last year 

ভালোবাসা কথাটি ছোট হলেও এর গভীরতা অনেক। আসলেই এর মর্যাদা সবাই রাখতে পারে না। আপনার সুন্দর একটি মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে প্রেম করে বিয়ে করলেও সব সম্পর্ক ভালো টিকে না, আর সব মানুষ সুখে থাকে না। তেমনটা শামীম এবং মিষ্টির সাথেও হয়েছে। শামীম মিষ্টিকে বদলাতে এসেছিল, কিন্তু মিষ্টি ওই ছেলেটার সাথে কথা রেগুলারলি বলতে থাকতো। সবশেষে এরকম অশান্তির কারণে শামীম মিস্টিকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছিল। আসলে অনেক সম্পর্ক সুখে থাকে, আবার অনেক সম্পর্ক সুখের হয় না।

 last year (edited)

শামীম অনেক চেষ্টা করেছিল সবকিছু মানিয়ে নিয়ে মিষ্টিকে নিয়ে সংসার সাজাতে কিন্তু মিষ্টি কিছুতেই সেটা বুঝতে পারেনি বা বুঝতে চায়নি। অবশেষে তাদের সংসারটা ভেঙে গিয়েছিল। যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপনার গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম। আজকে আপনার দ্বিতীয় পর্বটিও পড়ে বেশ ভালই লাগলো। শামীম এবং মিষ্টি তারা প্রেম করে বিয়ে করে। তবে শামীম মিষ্টিকে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে চাকরি করতেছে অনেক সুখেই তারা আছে। এবং তাদের সুখের সংসার একটি মেয়েও আসলো দুনিয়াতে। তবে এখানে সম্পর্ক নষ্ট করার পেছনে মিষ্টি দায়ী। কেননা মিষ্টি অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক করেছে। এখানে শামীমের দোষ বলে আমি কিছু দেখতেছি না। আসলে মিষ্টির মত মেয়েদেরকে বিশ্বাস করা ঠিক না। সে শামীমকে ভালোবাসে বিয়ে করে এখন অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক। তবে এরকম সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে মাঝখান দিয়ে ছেলে সন্তানের কষ্ট হয়। গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

মিষ্টি যদি অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে না জড়াতো আজকে তাদের সুখের একটি সংসার হতে পারতো। এবং তার মেয়েরও কোন কষ্ট হতো না। যাইহোক কি আর করার অবশেষে তাদের সংসারটি টিকে নাই।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আপনার এই গল্পটির প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। আর আজকের দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব পড়ে আরো ভালো লেগেছে। আসলে মানুষ কিন্তু প্রেম করে বিয়ে করলেও সুখী হয় না। সুখী নাও হতে পারে প্রেমের বিয়েটা। মিষ্টি আর শামীম যদিও ভালোবেসে বিয়ে করেছিল, কিন্তু মিষ্টি তার সুখের সংসারটা ধরে রাখতে পারেনি। সে অন্য একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিল, যার কারণে তাদের সুখের সংসারে অশান্তি নেমে এসেছে। আর এর কারণেই শামীম ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।

 last year 

তাদের মধ্যে এখন ডিভোর্স হয়ে গেছে। দুজন আলাদা আলাদা আছে এবং মেয়েটা কখনও বাবার কাছে থাকে কখনো মায়ের কাছে থাকে।হয়তো মেয়েটার জীবন এভাবেই কেটে যাবে, বড় হবে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আপু আমি মনে করি আসলে প্রেম করে বিয়ে করলে যথেষ্ট পরিমাণ সমস্যা থাকে। সেটা কাউকে বোঝানোর সুযোগ থাকে না। যদিও দোষ থাকে সেটা কাউকে বুঝিয়ে লাভ হয় না। বরং দোষ নিজের উপরে চাপিয়ে দেয় সবাই। আসলে এমন পরকীয়া প্রেমের কারণে অনেক সংসার ভেঙে যায়। মাঝখানে এই ছোট্ট বাচ্চারা কিন্তু বিপদে পড়ে যায়। মিষ্টি কাজটা ভালো করলো না। পরিশেষে কিন্তু সেই ভুক্তভোগী হবেন। আপনি ঠিক বলছেন আসলে প্রেমের বিয়ে সব সময় সুখের হয় না।

 last year 

যদি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তবে যে কোন অভিযোগ পরিবারের কাছে দেওয়া যায় কিন্তু যখন প্রেম করে একা একা বিয়ে করা হয় তখন কোন কিছুর অভিযোগ বাবা-মারের কাছে পেশ করা যায় না। আর সমস্যা তখনই শুরু হয়। আর এভাবেই একটা সম্পর্কের শেষ হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

এই গল্পের প্রথম পর্ব আমি পড়েছি। এখন দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে ভালই লাগলো। শামীম বৃষ্টিকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। যদিও শামীম বেকার ছিল কিন্তু তার বাবার টাকা পয়সা ছিল। তবে শামীম ঢাকা যাওয়ার পর মনে হয় মিষ্টিকে সেভাবে সময় দিতে পারে নাই। হয়তোবা এই কারণে মিষ্টি অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক করে ফেলেছে। তবে অনেক সময় মানুষের মন বোঝা অনেক কষ্ট। লাস্ট পর্যন্ত তারা সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছে। তাদের সংসার একটিমাত্র মেয়ে আছে তার কথা একবারও চিন্তা করল না। খুব সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

যে মেয়ে বা ছেলে খারাপ হবে তাদের কাছে সময় কোন ব্যাপার না আপু তাদের কাছে আসলে সম্পর্কের কোন মূল্যই নেই। এজন্য হয়তোবা তাদের সংসারটা ভেঙে গিয়েছে। প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 64050.44
ETH 2502.78
USDT 1.00
SBD 2.65