বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প: "পেটের মধ্যে জামগাছ"
নমস্কার
বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প: "পেটের মধ্যে জামগাছ"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে আজকের বলা শৈশবের অনুভূতিগুলি খুবই স্মৃতিমধুর।যদিও সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজো আমার ইচ্ছে করে ছুটে যেতে শৈশবে।তাই সেই শৈশবের সুন্দর স্মৃতিটি শেয়ার করবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট অনুভূতিখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--
ছোটবেলার কথা।যখন আমি পাঠশালাতে পড়তাম,আমার মা আমাকে একবারে টু ক্লাসে ভর্তি করে দিয়েছিলো পড়াশুনায় ভালো দেখে।যাইহোক ভোরবেলা পাঠশালা কমপ্লিট করে তারপর স্কুলে যেতে হতো নিয়ম মতো।আমার বাড়ির পাশে স্কুল ,তার উপরে আমার জেঠু প্রতিষ্ঠাতা।তাই ততটা চাপ ছিল না, প্রথম প্রথম বেশ কাঁদতাম স্কুলে যাবো না বলে।মা জোর করে বুঝিয়ে আমাকে পাঠিয়ে দিতেন স্কুলে।সঙ্গে এক টাকায় চারখানা চকলেট।খুব বেশি আগের কথা নয়,আমিও ছোটবেলায় চারআনার চকলেট খেয়েছি।যাইহোক এর টেষ্ট কিন্তু দারুণ ছিল।
এখন আসি মূল কথায়।সময়টা ছিল আম-জামের।যেখানে আমরা পাঠশালায় পড়তে যেতাম,তার পাশেই এক বাড়ির ছেলে আমাদের সঙ্গে পড়তো।তাদের বাড়িতে ছিল একটি ক্ষুদে জাম গাছ,অর্থাৎ যেগুলো ছোট্ট ছোট্ট জাম।টলটলে হয়ে পেকে থাকতো গাছে আর আমরা রোজ পাঠশালা শুরু হওয়ার আগে থলি থলি নামিয়ে নিয়ে খেতাম অনেক কয়জনা।
এরপর বড় স্কুলে চলে যেতাম।আমাদের ক্লাসের একটি মেয়ে তখন পাকা বড় জাম নিয়ে এসেছিলো।বললো,, আমাদের বাড়ির গাছের জাম খাবি!আমরা কয়েকজন বললাম খাবো।তখন মেয়েটি আমাকে এবং আরো কয়েক জনকে দিলো বড়জাম খেতে।জামগুলি অতিরিক্ত পেকে ছিল।তাই তার বীজ পিচ্ছিল টাইপের ছিল।আমি তো একবার ওই জাম খেতে গিয়ে বীজ গিলে ফেলেছিলাম।তখন আমার জেঠুর মেয়ে বললো তোর পেটে বড় গাছ হবে।
আমার জেঠুর মেয়ে ও আমি একই ক্লাসে পড়তাম,ও খুবই দুষ্ঠু ছিল।নানাভাবে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করতো।যাইহোক আমাকে আরো বললো যে,,একসময় এই জাম গাছের বীজ থেকে চারা গজাবে।তারপর ধীরে ধীরে তোর পেটের মধ্যে বড় হবে।গাছ যত বড় হবে তত তোর পেট ফুলে যাবে আর একসময় পেট ফেটে গাছ বের হবে।
আমি তো রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলাম,এরপর ও বললো যদি তোর বিশ্বাস না হয় তাহলে তুই স্যারের কাছে জিজ্ঞাসা কর!এরপর আমরা কয়েকজন মিলে গেলাম স্যারের কাছে,, ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করলাম আমার পেটের জাম গাছ হবে কিনা?তখন স্যার বললেন,,, আরে না---এমন কিছুই হবে না যখন তুই টয়লেট করবি তখন তার সঙ্গে জামের বীজও পড়ে যাবে পেট থেকে।তবুও ভয় পাচ্ছিলাম,সত্যিই এমন হবে তো।নাকি পেট ফেটে গাছ বের হবে,অনেক চিন্তা নিয়ে ক্লাস কয়েকটি করলাম।তারপর বাড়ি ফিরে মা কে জিজ্ঞাসা করলাম,, মা আমি বড় জামের বীজ গিলে ফেলেছি এখন কি হবে?মাও একই উত্তর দিলেন স্যারের মতো,তখন আমার চিন্তা গেল যে তাড়াতাড়ি টয়লেট করলেই মুক্তি মিলবে আমার।।☺️☺️
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং:শৈশবের গল্প |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার বাস্তব ধর্মী শৈশবের গল্পটি পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।এই ধরনের ঘটনা কম বেশি সবারই ছোটবেলায় ঘটেছে।
সত্যিই সেই সময়টা কত যে ভয় লাগতো বিচি পেটের ভিতরে গেলে গাছ হবে।গাছ পেটের ভেতর যত বড় হবে পেট ফুলে যাবে ডালপালা বৃদ্ধি হবে নানান প্রশ্ন মনের মধ্যে আসতো। ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে এখন ভালই লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপু দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
সত্যিই ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে হাস্যকর লাগে,ধন্যবাদ আপু।