জেনারেল রাইটিং: "চাহিদাহীন মানুষ"
নমস্কার
চাহিদাহীন মানুষ :
চাহিদা বলতে আমরা কোন দ্রব্য পাওয়ার ইচ্ছা বা আকাঙ্খাকেই বুঝে থাকি।কিন্তু এসব কিছু না পাওয়ার ইচ্ছাকেই চাহিদাহীন বলা হয়।তেমনি আমাদের সমাজ বিভিন্নভাবে পরিচালিত,কিছুটা ক্ষমতার লড়াই তো কিছুটা এমন আকাঙ্ক্ষাহীন মানুষের লড়াই।কেউ ক্ষমতা অনুযায়ী নিজের ইচ্ছে পূরণ করার জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে তো কেউ ওই একই লড়াই করে চলছে দিনে দুমুঠো খাওয়ার আশায়।এই চাহিদাহীন মানুষগুলি বুকে একরাশ যন্ত্রণা নিয়ে অবিরত ছুটে চলার লড়াই করে বাস্তবিকভাবে।কিন্তু এদের আলাদা কোনো কিছুর প্রয়োজন থাকলেও চাহিদাটা নেই।
কথায় আছে---যাদের প্রচুর রয়েছে তাদের আরো-ই চাই চাই।অর্থাৎ তাদের চাহিদার সীমাবদ্ধতা নেই কোনো,অফুরন্ত চাওয়া পাওয়া গ্রাস করে তাদের মনকে।তাই হয়তো মনটা অনেকটা সংকীর্ণতায় ভোগে।এটা বলার অবশ্য কারন রয়েছে।চলুন ছোট্ট একটি উদাহরণ দিই---
রোজ সকালে যখন আমি ইউনিভার্সিটি যাওয়ার জন্য ট্রেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এ পৌঁছায়।তখন দেখি ওখানে থাকা ওভারব্রিজের নীচে একদল চাহিদাহীন মানুষের বসবাস। শীতে তাদের কাছে কম্বল বা ভালো কাঁথা নেই শুধুই রয়েছে কিছু ধানের খড় জড়ো করে রাখা।কখনো দেখি গোল হয়ে বসে বাচ্চা ও বড়োরা তাস খেলছে।আর সারা মাঠ কুড়িয়ে তারা যে ধান পেয়েছিলো,সেগুলো রোদে শুকাতে দিয়েছে ফাঁকা প্ল্যাটফর্ম এর উপরে।সেখানেই এক বাচ্চা ছেলে রোদে বসে বসে আপনমনে তাস খেলছে।হাসিখুশি মনে,অন্যদিকে তার মা ও দিদি ধান রোদে মেলিয়ে দিচ্ছে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে।
এখন দেখার বিষয় হচ্ছে---এই মানুষদের ধানগুলিতে একদল পাখি বসে প্রতিনিয়ত রাজত্ব করছে।অর্থাৎ কাকের দল কিংবা শালিকের দল সবসময়ই ধানের মধ্যে লড়াই চালিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু এদিকে ওই মানুষদের কোনো ভ্রূক্ষেপ-ই নেই।সুতরাং চাহিদাহীন মানুষগুলি বুঝে গেছে যে,এই পৃথিবীতে তাদেরও সমান অধিকার রয়েছে বেঁচে থাকার হোক না সেটা ক্ষুদ্র কোনো জীব।কিন্তু সমাজের ক্ষমতাবান মানুষেরা তাদের শস্যের একটি দানাও পাখিদের দিতে রাজি নয়।অথচ পাখিদের তাড়াতে যা যা করণীয় সবই তারা তা পালন করে থাকে। কতটা হাস্যকর বিষয় এটি তাইনা!
কিন্তু এটাই আমাদের সমাজ।যার রয়েছে সে আরো বেশি পেতে চায়,যে ক্ষুধায় দিন কাটাচ্ছে তার কোনো-ই চাহিদা নেই।আমাদের এই সমাজ খুবই অদ্ভুত আর তার থেকেও বেশি অদ্ভুত সমাজের মানুষের চাহিদাগুলি।কিন্তু চাহিদাহীন মানুষগুলো যেন ক্ষমতাবান মানুষের থেকে বেশি সুখী।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
টাস্ক প্রুফ:
দারুন একটি টপিক নিয়ে লিখেছেন আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।এটা ঠিক পাখিদেরও রয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার। সমাজে যার যত বেশি রয়েছে সে আরও পেতে চায় যার ক্ষুধা কম তার তেমন চাহিদা নেই।সত্যিই সমাজটা অনেক অদ্ভুত এবং অদ্ভুত মানুষদের চাহিদাগুলো।
অনেক সুন্দর একটি কথা বলেছেন আপু,ক্ষুধা যার যত কম চাহিদাও তার ততই কম।ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব সুন্দর লিখেছেন আপনি। চলতে - ফিরতে এমন ছোট ছোট বিষয় গুলো অবজার্ভ আমিও করি, আমার বেশ ভালো লাগে। এটা আমিও মানি যে যার যত কম, যে যত অল্পে সন্তুষ্ট তার অন্তরের শান্তি তত বেশি! যার অনেক কিছু থেকেও কেবল নাই- নাই স্বভাব, তাদের চাহিদা কোনোদিনও পূরণ হয় না। এই সুন্দর পৃথিবীটা সবার জন্যই, এখানে সবারই অধিকার রয়েছে।
একেবারেই ঠিক বলেছেন দিদি,অল্পে সন্তুষ্ট মানুষরাই প্রকৃত সুখী।ধন্যবাদ আপনাকে।