মানুষ বড় সস্তা!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ছেলেটা খুব ভুল করেছে শক্ত পাথর ভেঙে
মানুষ ছিলো নরম, কেটে , ছড়িয়ে দিলে পারতো।
পথের হদিস পথই জানে, মনের কথা মত্ত
মানুষ বড় শস্তা , কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো ।
উপরে আমি কয়েকটা লাইন তুলে ধরেছি। এটা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত "ছেলেটা" কবিতার শেষের অংশটুকু। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এখানে মানুষ কে খুবই সস্তা অখ্যায়িত করেছে। তিনি সস্তা টা এমন অর্থে অখ্যায়িত করেছে যে মানুষ এতোই সস্তা যে কেটে ছড়িয়ে দিলেও সমস্যা হতো না। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় হয়তো দিনে দিনে মানুষের যে অবনতি হচ্ছে মানুষের জীবনের যে দাম কমে আসছে সেটার উপর ভিত্তি করেই কবিতা টা লিখেছিলেন। মানুষের জীবনের দাম যেন সবচাইতে কম। কিন্তু বতর্মানে এটাই যেন সবচাইতে বড় সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিন্দুমাত্র দাম নেই মানুষের জীবনের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে বলা হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীরা ভর্তি যুদ্ধে নামে শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সিটের জন্য। দিনশেষে কয়েক হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার সুযোগ হয় এখানে। এরা লেখাপড়া শিখছে শিক্ষিত হচ্ছে কিন্তু মানুষ হচ্ছে কী?? আমার কথাটার অর্থ হয়তো বুঝতে একটু সমস্যা হতে পারে আপনার। গত পরশুদিনের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে একজন যুবককে চোর সন্দেহ করে মারধর করা হয়। এতটুকু পযর্ন্ত ঠিক ছিল। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় হলে নিয়ে গিয়ে খাওয়ানো হয়। ছেলেটার সেই খাওয়ার দৃশ্য স্যোসাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাওয়ানোর পর ছেলেটাকে আবার নির্মম ভাবে মারা হয়। অবশেষে ছেলেটা মারা যায়।
কথাগুলো যখন লিখছি নিজেকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগছে। ঐ যুবককে মারধরের একপর্যায়ে তার পরিবারের কাছে ফোন করে ৩৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। তখন তার আত্মীয়রা বলে সে একজন মানসিক ভারসাম্যহীণ মানুষ সে চোর না। তাকে মাইরেন না। কিন্তু আমাদের দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেটা শোনে নাই। পরবর্তীতে গতকাল জানা যায় হ্যা ছেলেটা সত্যি মানসিক ভারসাম্যহীন। ঐ যুবকের নাম তোফাজ্জেল হোসেন তার বাড়ি বরগুনা। সে বেশ মেধাবী শিক্ষার্থী। তার বাবা মা দুজনেই মৃত। বাবা মা মারা যাওয়ার পরে পৃথিবীতে ছিল একমাএ ভাই। এইবছর মার্চ মাসে সেই ভাইও ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে ছেলেটা নাকী পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
একবার ভেবে দেখুন আমাদের সাথে যদি এমন হতো আমরাও হয়তো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পাগল হয়ে যেতাম। ছেলেটা হয়তো খাবারের খোঁজে হোক বা ভুল করে হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। আর আমাদের সেই মেধাবী কুলাঙ্গার রা কোনরুপ কোন কিছু বিবেচনা না করে ছেলেটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমার কথা সে মানসিক ভারসাম্যহীণ না সে পাগল না সে একজন চোর। কিন্তু তারপরও আপনারা কে তার গায়ে হাত দেওয়ার। আপনারা কে তাকে মেরে ফেলার। সে চুরি করেছে তাকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন। এইরকম নির্মম কাজ কখনও কোন মানুষের হতে পারে না। আপনারা মেধাবী হতে পারেন কিন্তু আপনারা মানুষ না। আগে মানুষ হন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়তো ঠিকই বলেছিলেন "মূর্খের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কী হবে""।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.