বেলা''শেষে!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বাড়িতে গিয়েছিলাম চার দিনের ছুটি নিয়ে। কিন্তু সেই চারটা দিন যেন খুব দ্রুতই কেটে গেল। ঢাকা ফিরব বুধবার দুপুরে । সেইরকম ভাবেই বাসের টিকিট কেটেছিলাম। চারটা দিন যে কীভাবে কেটে গিয়েছিল বুঝতেই পারিনি। মনে হলো নিমেষেই সময় শেষ। মোটামুটি সব জায়গা গেলেও যাওয়া হয়নি আমার পছন্দের সেই জায়গাটাই। যেখানে বসে একটা সময় অনেক গুলো বিকেল অতিবাহিত করেছি আমি। আমার কৈশোরের অনেক বড় একটা জায়গা জুড়ে রয়েছে এই স্থানটা। আমার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে নদীর ধারের সেই পছন্দের জায়গাটা। বাড়িতে গিয়েছি অথচ একটা বিকেল ওখানে অতিবাহিত করব না এটা যেন হতে পারে না বললেই চলে। মঙ্গলবার বিকেলে সেই নিয়তেই বাড়ি থেকে বের হলাম।
আমার বাড়ি থেকে ৪-৫ কিলোমিটারের দূরেত্বে জায়গাটা। আমার সাথে ছিল আমার এক ছোট ভাই সাবিত। ও যেতে চাইলো এইজন্য ওকে নিয়ে যাওয়া আর কী। এবং কিছুক্ষণ পর আমার আরও দুই বন্ধু নাভিদ এবং ইকরার আসার কথা ছিল। তবে আমি আগেই গিয়েছিলাম। বিকেলে গিয়ে ওখানে বসি। বেশ সুন্দর নিরিবিলি পরিবেশ। তবে শীতকাল হওয়াই নদীতে খুব একটা পানি ছিল না। বর্ষাকালে এই জায়গাটা অসাধারণ লাগে। তখন পূর্ণ যৌবনা নদী দেখলে বুকের মধ্যে একটা শিহরণ তৈরি হয় । প্রায় চার মাস পরে আমি ফিরে গিয়েছিলাম জায়গা টাই। কুমারখালীতে গেলে এই জায়গাটাই যাওয়া যেন অঘোষিয় ফরজ হয়ে দাঁড়ায় আমার জন্য। বিকেল বেলা হওয়াই আমরা ছাড়াও আরও বেশ কিছু লোক ছিল ওখানে।সবাই এসেছিল সময় কাটাতে।
বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আমি এবং সাবিত কফি নিয়ে এসে কফি খেতে শুরু করি। এইরকম মনোরম নিরিবিলি জায়গাই বসে কফি এ যেন অন্যরকম একটা অনূভুতি। কফি টা শেষ করে আমি এবং সাবিত কথা বলতে থাকি। ততক্ষণে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আমি বসে অপেক্ষা করতে থাকলাম আমার দুই বন্ধু নাভিদ এবং ইকরার। আমার বন্ধু খুব বেশি নেই। মোটামুটি নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এলাকায় গেলে দেখা করার মতো তিনজন আছে। সন্ধ্যার সময় ওরা দুজন চলে আসলো। আমাদের গল্পের আড্ডা আবার শুরু হলো। যদিও সবাই এখন তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত। এইজন্যই আমরা আলোচনা করলাম ক্যারিয়ার নির্ভর। পরবর্তী পরিকল্পনা। বর্তমান অবস্থা এসব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অনেক টা সময় কেটে গেল।
একটা ব্যাপার উপলব্দি করলাম ওদের সাথে কথা বলে। কেউই নিজের জীবন নিয়ে নিজের স্থান নিয়ে সুখী না। সবার মাঝেই একটা আক্ষেপ একটা হতাশা রয়েছে। ওদের সাথে কথা বলতে বলতে অনেক টা সময় কাটিয়ে দিলাম। ততক্ষণে ঘন্টা দুই সময় কেটে গিয়েছে। ঐদিকে আমার বাড়িতে গিয়ে ব্যাগ গোছানো ব্যাপার আছে। পাশাপাশি আমার কিছু কেনাকাটা করারও দরকার ছিল। শেষ পর্যায়ে ওদের সাথে কথা শেষ করে চলে আসি আমি। জায়গা টাকেও শেষ বারের মতো বিদায় বলে চলে আসি। যদিও দেড় মাস পরে ঈদের ছুটিতে আবার বাড়ি যাব। তখন আবার ছুটে যাব জায়গাটাই। এটার সাথে একটা অন্যরকম সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমার স্মৃতির অনেক বড় একটা জায়গা জুড়ে রয়েছে। সবকিছুই এখন অতীত কিন্তু মূহূর্ত গুলো ফিরে পাওয়া যায় এখানে গেলে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এ জায়গাটা নিয়ে বেশ অনেক আগে একবার একটা পোস্ট করেছিলেন যেটা পড়েছিলাম। এই নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্তটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে প্রিয় জায়গাটায় বারবার যেতে ইচ্ছে করে। আর সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। আপনি আপনার বন্ধু এবং ছোট ভাইসহ বেশ ভালো সময় অতিবাহিত করেছেন। আসলে সবাই নিজ অবস্থান থেকে কেউই সুখী নয়। সেটা তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করলে বোঝা যায়।
আপনার বাড়ি যাওয়ার গল্প সত্যিই হৃদয়স্পর্শী! সেই পছন্দের জায়গাটির সঙ্গে সম্পর্কের স্মৃতিগুলো যে কতটা গভীর, তা আপনার লেখায় স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে কফি খেতে খেতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা, আর জীবনের অবস্থা নিয়ে আলোচনা, সব কিছু যেন একটা সময়কে ধরে রাখে। আপনার কাছে ওই জায়গাটি শুধুই এক জায়গা নয়, বরং এক অনুভূতির নাম। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মূহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
এমন নদীর ঘাট এ একটা শান্ত বিকাল কাটানো ভীষণ প্রশান্তির! আমারো ভীষণ মন শান্ত হয়ে যায় নদীর পাড় এ গেলে। আর লাইফে কেউ ই যার যার অবস্থান নিয়ে ফুলফিল খুশি থাকতে পারে না ভাই। সকলের জন্যই এটাই সত্য। সবারই কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে আক্ষেপ বা হতাশা থাকেই সবসময়ই, সব পরিস্থিতিতেই।