পারিপার্শ্বিক সামাজিক বন্ধন
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। আজ আমি ব্যক্তিগত বিষয়ে কিছু মতামত আপনাদের কাছে শেয়ার করব।আমাদের এই সমাজে বেঁচে থাকতে হলে কত যে নিয়মকানুন মেনে চলতে হয় এবং কত যে পারিপার্শ্বিক বন্ধনের আবদ্ধ হতে হবে সেই বিষয়ে আমার একটি ছোট্ট মতামত আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।
কথায় আছে রক্তের সম্পর্ক নাকি চির বন্ধনের সম্পর্ক, এই বন্ধন নাকি কখনোই আর শেষ হওয়ার নয়। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সম্পর্কে বিশ্বাসী নই। কিছু কিছু রক্তের সম্পর্ক আছে একে অপরের প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে এবং একে অপরকে নিচু দেখানোর জন্য অনেক অনৈতিক কাজ করে যেগুলো মোটেও কাম্য নয়। রক্তের সম্পর্ক একটি অমূল্য সম্পর্ক এটা আমিও ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি। তবে কিছু কিছু মানুষের বিশেষ কিছু চিন্তা ধারার কারণে সেই সম্পর্কই কেন জানে দাগ লেগে যায় এবং সেটা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়।
আমাদের সাধ্যমত আমরা সবাই কিন্তু চেষ্টা করি নিজেদের পারিপার্শ্বিক বন্ধনগুলো যেন ঠিক থাকে। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন ঈদে কিংবা অনুষ্ঠানে তাদেরকে গিফট দেওয়া এবং অন্যান্য বিষয়গুলো তো রয়েছেই। এরপরেও কেন জানি দেখা যায় তাদের মনে একটা ভীষণ ক্ষোভ আজ জন্ম নিয়েছে। যাদের জন্যই আপনি সবথেকে বেশি কষ্ট করবেন যাদেরকে দেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন তারাই আল্টিমেট আপনার বিরুদ্ধে কথা বলবে। আপনার পিছনে এমন কিছু কথা বলবে যেগুলো কখনোই সহ্য করার মতো নয় এবং এটা অনেক কষ্টদায়ক একটি বিষয়।
এক পাশে রয়েছে রক্তের সম্পর্ক অন্য পাশে রয়েছে পারিপার্শ্বিক সামাজিক বন্ধন। সব মানুষদেরকে আমরা কখনোই চিনতাম না কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে কিংবা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সাথে পরিচয় হয়েছি এবং তারা আমাদের জন্য যা কিছু করেছে সেটা সত্যিই অকল্পনীয় এবং শ্রদ্ধাময়। রক্তের সম্পর্কে আমরা যেসব কাজ করে থাকি তাদের যদি ১ পারসেন্টও কাজ সেসব মানুষের প্রতি আমরা করি তাহলে দেখা যাবে তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে। আমার জীবনেও এমন দুটি মানুষ রয়েছে যারা আমার সাথে কোন রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ নয় কিন্তু আমার এবং আমার পরিবারের জন্য যা করেছে তা সত্যি প্রশংসনীয় এবং শ্রদ্ধাশীল।
প্রথমে যার কথা বললেই নয় তিনি হচ্ছেন সুমন আঙ্কেল। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে জব করছেন এবং আমি ঢাকায় আসার পর থেকে আমাকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে যাচ্ছেন। যেখানে আমাদের রক্তের সম্পর্ক ও আমার পাশে ছিল না, সেখানে তাকে আমি পাশে পয়েছিলাম। গত ডের দুই বছর আগে রমজান মাসে আমার অনেক শরীর খারাপ হয়ে যায়। সেটা হয়তো আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন। আমার মামস হয়েছিল। এখানে আমার রক্তের সম্পর্কের অনেক আত্মীয়-স্বজন ছিল আমার এমন একটি অবস্থা হয়েছিল আমি মারা যাব এরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। আমি বিছানা থেকে উঠতে পারছিলাম না কিন্তু আমার পাশে থাকা সত্ত্বেও রক্তের সম্পর্কের আসেনি কিন্তু সেই সুমন আঙ্কেল এসেছিলো, ডা; দেখিয়েছিলো এবং ফ্লাইটে করে বাসা প্রযন্ত পাঠিয়েছিলো।
আরেকজন মানুষ রয়েছে যার নাম হচ্ছে ইব্রাহিম আংকেল। ঢাকায় আসার পর থেকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে গিয়েছেন এবং তিনি আজও আমাদের পাশে রয়েছেন। তার ছোটখাটো একটি বিজনেস রয়েছে এবং সেখানেও আমিও টুক টাকা বিজনেস করার চেষ্টা করছি। আমার মা ও সেখানে কাজ করে তিনি সেই ২০১৫ সাল থেকেই অনেকটাই সাহায্য সহযোগিতা করে গেছেন। এত কষ্ট করে রক্তের সম্পর্কে যারা রয়েছেন তাদেরকে গিফট দেওয়ার চেষ্টা করেছি, এবং বিভিন্ন ঈদে কিংবা অনুষ্ঠানে তাদেরকে নিয়েই চলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিপরীতে শুধুমাত্র কষ্ট এবং বেদনাদায়ক কিছু কথা শুনতে পেয়েছি, যেগুলো সত্যি অনেক কষ্টদায়ক।
আজ একটি কথা অনেক মনে পড়ছে, কোন এক মহান ব্যক্তি একটি কথা বলেছিলেন তুমি তাকে শ্রদ্ধা করো যে তোমাকে শ্রদ্ধা করে। আসলে এখানে শ্রদ্ধা শুধুমাত্র বলার জন্যই বলা হয়েছে, শুধুমাত্র শ্রদ্ধা করতে হবে এমন নয়। আপনার থেকে ছোট বয়সের মানুষকে অবশ্যই স্নেহ করতে হবে শুধুমাত্র এখানে বোঝানোর জন্যই কথাটা বলা হয়েছিল। এখন থেকে আমিও সেটাই করব, রক্তের সম্পর্ক ব্যতীত যেসব কাছের মানুষ রয়েছে তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করবো। আমার মা ছোটবেলা থেকেই রক্তের সম্পর্কের টিকিয়ে রাখার জন্য প্রচুর অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। কোন ঈদের কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় সেসব প্ল্যানিং থেকে সমস্ত টাকা-পয়সা খরচ করেছে। কিন্তু দিন শেষে শুধুমাত্র কষ্টই পেতে হয়েছে। এসব বিষয়গুলো আমি কখনো ভুলবো না যদিও আম্মু ভুলে যায়।
ভাগ্য ভালো আমার নিজের কোন বোন নেই!!!!! তবে এই কমিউনিটিতে এবং বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক সম্পর্কে আমার অনেক বোন রয়েছে এবং সেসব বোন রক্তের সম্পর্কের চেয়ে অনেকটাই বড় এখন আমার কাছে। যাইহোক আজ আর বেশি কিছু বলছি না মন মেজাজ দুটোই অনেক খারাপ রয়েছে। তারপরও আমি আমার মনের কথাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনাদের ব্যক্তিগত মতামত গুলো শেয়ার করতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: পারিপার্শ্বিক সামাজিক বন্ধন
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
ভাই বর্তমানে আপনের চেয়ে পর ভালো। আত্নীয় স্বজনদের জন্য আমরা যত কিছুই করি না কেনো, তারা আমাদেরকে প্রচুর আঘাত দেয়। তাদেরকে প্রয়োজনে তো পাশে পাওয়া যায় ই না,বরং সারাক্ষণ আমাদের কাছ থেকে কিছু না কিছু পাওয়ার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে এসেছি ৩ বছর এখনো হয়নি। আর এই সময়টাতে আমি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি আত্নীয় স্বজনেরা কেমন। সাউথ কোরিয়াতে থাকতে সবাইকে বিভিন্ন ভাবে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন সেসবের কোনো মূল্য নেই তাদের কাছে। বর্তমানে আত্নীয় স্বজনদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করাটা ভীষণ কঠিন হয়ে গিয়েছে। কারণ বারবার আঘাত সহ্য করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি মনে করি রক্তের সম্পর্ক যেমন ভালো তেমনি জঘন্য হয়। পৃথিবীতে সবচেয়ে খারাপ সম্পর্ক তৈরি হয় রক্তের সম্পর্কের মধ্যে। একজন রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় আরেকজন রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় কে এই দুনিয়া থেকে শেষ করে দিতেও পরোয়া করেনা। আমাদের সমাজ এত নিচু যে আমাদের সমাজ এতই নিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে আজকাল সম্পর্কের মধ্যেও কোন টান নেই। তার চাইতে আত্মার সম্পর্ক অনেক ভালো মনে করি। যখন কোন বিপদে পড়বেন সেটা শহর পর্যায়ে হোক কিংবা গ্রাম পর্যায়ে হোক পাড়া প্রতিবেশীরা ছুটে আসে আগে। দেখবেন যে বাইরে আত্মীয়-স্বজনেরা বেশি হেল্প করে। সে ক্ষেত্রে রক্তের সম্পর্কের মানুষগুলো বিরোধিতা করে বেশি। ভালো লাগলো আপনার শেয়ার করা বিস্তারিত লেখাগুলো পড়ে।
রক্তের সম্পর্কের এমন অনেক মানুষ আছে যারা সব সময় ব্যথা দিয়ে কথা বলে। আর তাদের জন্য আমরা যাই করি না কেন তাদের কাছ থেকে আমরা সবসময়ই আঘাত পাই। কিন্তু সুমন আঙ্কেল এবং ইব্রাহিম আঙ্কেলের মত কিছু মানুষ আছে যারা সব সময় বিনা স্বার্থে পাশে থাকে। তাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও তারা ভালোবেসে আগলে রাখে। জীবনের বাস্তবতা থেকেই আমরা আসলে অনেক কিছু শিখি। আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যিই ভালো লেগেছে ভাইয়া। একেবারে মন থেকে কথাগুলো লিখেছেন বুঝতেই পারছি।