নৈতিকতার অবক্ষয়
বিষয়টি ছিলো এমন। একটি কলেজে কয়েকজন ছাত্র অনিয়মিত ক্লাস করার কারণে শিক্ষক তাদেরকে জরিমানা করেছিলো। সেই ছাত্রগুলো আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্য। শিক্ষক তাদের জরিমানা করার পর তারা তাদের নেতার কাছে গিয়ে অভিযোগ করে। সেই নেতা পরবর্তীতে কলেজে এসে শিক্ষকের সাথে তর্কে লিপ্ত হয় এবং শিক্ষককে চাপ দিতে থাকে যেন তাদের কে জরিমানা করা না হয়। কিন্তু শিক্ষক তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। তিনি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতার চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন না। এর ফলশ্রুতিতে সেই ছাত্রনেতা তার আরও সাঙ্গপাঙ্গদের খবর দিয়ে এনে কলেজে একটা বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন এবং কলেজে ছুটির ঘন্টা বাজিয়ে দেন। পরবর্তীতে সে তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে সেই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে তার অপসারণ দাবি করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে ব্যাপারটা আরো দূরে গড়ায়। তখন কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে ক্ষমতাশীল দলের নেতা কর্মীদের মিটিং হয়। শেষ পর্যন্ত সেখানে বিষয়টি সুরাহা হয়। কিন্তু এই ঘটনার সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে ছাত্র শিক্ষকের ভেতরের যে সম্পর্ক থাকার কথা সেটার চূড়ান্ত অধঃপতন হওয়া। একটা ছাত্র অন্যায় করেছে শিক্ষক তাকে শাস্তি দেবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ছাত্রের পক্ষ হয়ে যখন অন্য আরেকটা ছাত্র এসে শিক্ষকের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরণ করেন এটা আসলে খুবই দৃষ্টিকটু একটা ব্যাপার। আর এই ব্যাপারটা আমাদের দেশের রাজনীতির খারাপ অবস্থার নির্দেশ করে।
শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি যে আসলেই খারাপ এই ঘটনা তার একটা জ্বলন্ত উদাহরণ। আর আমাদের নোংরা রাজনৈতিক সিস্টেম সমাজের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রকে কিভাবে দূষিত করে দিচ্ছে এটা তারও একটা প্রমাণ। যেখানে ছাত্র শিক্ষকের সম্মান হবে শ্রদ্ধার এবং স্নেহের। সেখানে ছাত্রনেতা গিয়ে শিক্ষকের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করছে। এটা থেকেই ছাত্রদের নৈতিকতার অধঃপতনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে সামাজিকভাবে সোচ্চার হতে হবে। যাতে এই ধরনের বাজে পরিস্থিতি আর তৈরি না হয়। সেই সাথে নিজেদের সন্তান ভাই-বোন এদের দিকেও নজর রাখতে হবে। যাতে এরা খারাপ সঙ্গে গিয়ে অনৈতিক আচরণ করতে শুরু না করে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
খুব সুন্দর লিখেছেন আপনি আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আসলে নৈতিকতার অধঃপতন হয়েছে আর এর জন্য আমরাই দায়ী। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমাদের সন্তানদের ও ভাই বোনদের খারাপ মানুষের সাথে না মিশা। এবং তাদের সামাজিকতা ও নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া। কারণ এই শিক্ষাগুলো পরিবার থেকে মানুষ শিক্ষা অর্জন করে। এখন শিক্ষক ও ছাত্রের নৈতিকতার অবক্ষয় দেখা যায় । একজন শিক্ষককে তার পরিপূর্ণ মর্যাদা না দেওয়াটা আমাদের ব্যর্থতা। ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমাদের দেশের রাজনীতি হচ্ছে একেবারে নোংরা রাজনীতি। যারা রাজনীতির সাথে জড়িত আছে, তারা সব জায়গায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখায়। আমাদের দেশের প্রায় সব মানুষ রাজনীতি করে শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে। জনসেবা মূলক কোনো কাজ তাদের কাছ থেকে দেখা যায় না। একজন শিক্ষকের সাথে ছাত্রনেতার এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করা মোটেই উচিত হয়নি। কেমন দেশে আমরা বসবাস করি,সেটা ভাবতেই অবাক লাগে। একজন শিক্ষক হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর, আর শিক্ষকের সাথে এমন বেয়াদবি করে। সেজন্যই তো এখন শিক্ষিত মানুষ পাওয়া গেলেও,সুশিক্ষিত মানুষ পাওয়া মুশকিল হয়ে গিয়েছে। নৈতিকতার অবক্ষয় দেখে একজন বাঙালি হিসেবে আমার নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমাদের দেশের রাজনীতির বিষয়ে আসলে কি বলবো। মূলত সঠিক রাজনীতি বলতে কিছুই নেই সব দস্যু রাজনীতির মতোই চলছে। আর রাজনীতি এখন শিক্ষাঙ্গনে ঢুকে গেছে, আর ছাত্র রাজনীতির কারণে দেখা যাচ্ছে শিক্ষকেরও মানহানি হচ্ছে।অথচ একটা সময় ছাত্র ও শিক্ষকের বন্ধন খুব মধুর ছিল । আসলে এই নোংরা রাজনীতির কারণে মূলত আমরা সবাই ভুগছি। কবে যে এই নোংরা রাজনীতি থেকে পরিত্রাণ পাব সেটা আসলে জানা নেই। ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।