সবুজ প্রকৃতির ভালোবাসার আড়ালে যত কথা || Original Photography by @hafizullah
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। কারন প্রকৃতি তার সজীবতা নতুনভাবে প্রকাশ করছে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার পর। গরমের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে বৃষ্টিপাতের শীতলতার পর, যদিও আবার ফিরে আসার চেষ্টা করছে। আসলে গরমের তীব্রতায় পুরো দেশবাসী বেশ অস্থির হয়ে উঠেছিলো। সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে গাছ লাগানোর একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছিলো। যদিও সবুজ প্রকৃতি কিংবা গাছের প্রতি আমাদের ভালোবাসা এতটুকুও বাড়ে নাই বরং হুজুগে বাঙালির মতো একটু হৈ চৈ করার চেষ্টা করেছি মাত্র। যেটা আমরা সব সময় করে থাকি, নতুন কোন উপলক্ষ পেলে নিজেদের ভিন্নভাবে হাজির করার চেষ্টা করি। প্রকৃত অবস্থা কিংবা ভালো মন্দ তখন আর বিচার করি না, যেমনটা এবারও হয়েছিলো।
গাছ লাগানোর সঠিক সময় কিংবা উপযুক্তি পরিবেশ এর কথা বিবেচনা না করেই হৈ চৈ করে গাছ লাগানোর দারুণ একটা প্রচেষ্টায় নিজেদের সংযুক্ত করেছিলাম আমরা। গাছগুলো বাঁচুক কিংবা মরে যাক তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না, বরং নিজেদের ভিন্নভাবে একটু উপস্থাপন করার সুযোগ পেয়েছি সেটার সঠিক ব্যবহার করা হলেই হলো। আমরা সফল শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে কিন্তু বাস্তবে যেই লাউ সেই কদু। মানে আগে যেখানে ছিলাম এখনোও সেখানেই আছি, কোন পরিবর্তন কিংবা কোন উন্নতি হয় নাই শুধুমাত্র ফেসবুকে নিজের একটু প্রচার ব্যতিত। আমি ইতিপূর্বে কয়েকটি লেখায় এই বিষযটি তুলে ধরেছিলাম।
আমরা যদি প্রকৃতি কিংবা পরিবেশের প্রতি আন্তরিক হতাম তাহলে হয়তো প্রকৃতি রক্ষায় কিংবা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাংখিত পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আদতে আমরা কখনোই এমন কিছু করি নাই এবং করার চেষ্টা করি নাই। কিছু দিন পূর্বেও শহরের জনপ্রিয় সড়কগুলোর বিশাল আকৃতির গাছগুলোকে নির্মমভাবে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছিলো পরিবেশবাদীদের শত আপত্তি সত্ত্বেও। তারপর আমরা সড়কগুলোর ফুটপাতের অংশ কেটে সেখানে হৈ চৈ করে গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করলাম। তারপর সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করা হলো এতো হাজার গাছ শহরের ফুটপাতগুলোতে লাগানো হয়েছে। কিন্তু তারপর সেই গাছগুলোর কি হলো? আদৌ কোন গাছ বেঁচে উঠার সুযোগ পেয়েছে কিনা? সেটা নিয়ে কেউ কোন কথা বলছে না।
এটাই আমাদের প্রকৃত অবস্থা, আমরা যা করি শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থে করার চেষ্টা করি, প্রকৃতি কিংবা পরিবেশের ভালোর জন্য কিছুই করি না। এইতো কিছু দিন আগে গ্রামের সবুজ ও সতেজ পরিবেশে গিয়েছিলাম কিছুটা সজীব ও বিশুদ্ধ নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য, যেটা আমি প্রায় সময় করে থাকি। সুযোগ পেলেই সবুজ ও নির্মল প্রকৃতির মাঝে ছুটে যাই এবং নিজেকে নতুনভাবে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করি। পরিবেশটা বেশ দারুণ ও মুগ্ধ কর ছিলো। কিন্তু অনাকাংখিতভাবে মনটা খারাপ হয়ে যায় আরো কিছুটা দূর যাওয়ার পর। সবুজ প্রকৃতির মাঝে বিশাল সাইজের ইটখোলা দেখার পর। কারন চারপাশে সবুজ প্রকৃতি, সবুজ কৃষি খেত কিন্তু তার মাঝে পরিবেশের ক্ষত ইটখোলা ।
আমরা পরিবেশ ও প্রকৃতিকে কতটা ভালোবাসি এটাই তার উৎকৃষ্ট প্রমান। সবুজ গ্রামের সবুজ কৃষি খেতের মাঝে এই রকম একটা বিশাল সাইজের ইটখোলার অনুমতি কারা দিলো? কারা সবুজ প্রকৃতির বিশাল ক্ষতির এই ফ্যাক্টরি খোলার সুযোগ তৈরী করে দিলো। ইটখোলার দূষণের বিষয় যারা জানেন, তারা হয়তো অনুভব করতে পারবেন এর প্রভাবে আশে পাশের কৃষি খেত সমূহ এবং ফসলের কতটা ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। আফসোস, আমরা শুধুমাত্র কথার কথায় প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার চেষ্টা করি, নির্মল ও সুন্দর এই প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতিসাধন করতে এতটুকু লজ্জাবোধ হয় না আমাদের। পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতা, পরিবর্তন আসুক আমাদের প্রকৃতির সজীবতায়।
তারিখঃ এপ্রিল ০৪, ২০২৪ইং।
লোকেশনঃ ধামরাই, ঢাকা।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাইয়া আমরা বাঙালি আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নিজের সুনাম কিভাবে অর্জন করা যায়। তাইতো আমরা হুজুকেই গা ভাসিয়ে দেই। আপনার মতই আমারও একটা প্রশ্ন যে গাছগুলো মিডিয়ার সামনে বসে সবাই লাগাবো পরিবেশ রক্ষা করার জন্য সেই গাছগুলো কি আদৌ এখন অব্দি বেঁচে আছে? আমি তো মনে করি বেশিরভাগ গাছই তার প্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে নেই। ইটখোলা আমাদের পরিবেশের মারাত্মক রকমের ক্ষতি করে থাকে যেটা ক্ষমতাধারী লোকেরা বোঝার পরেও সেগুলো সবুজ প্রকৃতির মাঝে তৈরি করার অনুমোদন দেয় সত্যিই বিষয়টা খুবই লজ্জাস্কর। সমউপযোগি সুন্দর একটি পোস্ট এবং পরিবেশবান্ধব কিছু কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন অনেক বেশি ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভাইয়া।
পরিবেশ ও সবুজায়ন নিয়ে ভাবার মানুষ কম। এদেশের মূল সমস্যা হলো মানুষ দ্রুত নগরায়ন নিয়ে আসতে চায়। একদিকে শহরমুখী মানুষের চাপ বেশি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দালানকোঠা বানিয়ে ভাড়া বাড়ি থেকে স্থায়ী মুনাফা নিয়ে সুখী হতে চায়।
অপরিকল্পিতভাবে কতগুলো বিল্ডিং গড়ে উঠেছে, তার হিসেব নেই। কেউ গাছ লাগানোর কথা ভাবে না, বরং গাছ থেকে প্রাপ্ত কাঠ থেকে ফার্ণিচার বানানোর ধুম পড়ে যায়।
এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। আদতে জানি না, দেশের ভবিষ্যত কোন দিকে যাচ্ছে, তবে নিশ্চয়ই কিছু কারণে চড়া মূল্য দিতে হবে। যেমন আবার ৪৮ ঘন্টার হিট এলার্ট জারি করা হচ্ছে।
প্রকৃতি ঠান্ডা হচ্ছে না সর্বোপরি।
এমন বাস্তবসম্মত পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
পড়ে অনেক ভালো লাগলো, সাথে কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তাও বেড়ে গেল। 💐
গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় কিন্তু বর্ষাকাল। বর্ষাকাল আসলে তখন কেউ গাছ লাগানোর কথা বলবেনা কেউ ট্রেন্ড চালু করবে না। সবাই ঐ হুজুগেই চলে ভাই। আমরা নিজের স্বার্থেই প্রকৃতি কে বেশি ব্যবহার করি। এই গাছ লাগানো নিয়েও তো কত পলিটিকস হয়ে গেল। খোলা সবুজ মাঠের মধ্যে ইট ভাটা এটা ঐ জায়গার জন্য হুমকি স্বরুপ। ইট ভাটার ধোয়া বজ্য ওখানের সবুজ প্রকৃতি কেউ প্রভাবিত করবে। কিন্তু এগুলো নিয়ে ভাবার কেউ নেই।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আসলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য মানুষ এখন বেশিরভাগ কাজ করে থাকে। এককথায় বলতে গেলে লোক দেখানো কাজ এখন বেশি করা হয়। এই যে যারা পরিবেশ রক্ষার কথা বলে গাছ লাগিয়েছে বা লাগাচ্ছে, তারা শুধুমাত্র গাছ লাগিয়েই ক্ষান্ত হয়ে যাবে। গাছের পরিচর্যা তারা ভুলেও করবে না। তারা মনে মনে ভাবে গাছ বাঁচলে বাঁচুক, আর না বাঁচলে নাই। কারণ লোক দেখানো তো শেষ হয়ে গিয়েছে। যাইহোক ইটখোলা থাকলে আশেপাশে কোনো ফসল হয় না। মোটকথা ইটখোলা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। অতি শীঘ্রই বাংলাদেশের সব ইটখোলা বন্ধ করা উচিত। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।