গ্রামীণ পরিবেশে চমৎকার আলো ঝলমলে রেস্টুরেন্ট। ১০% সাই-ফক্স।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতকাল বিকেলে একটি কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে বন্ধু ফেরদৌসকে ফোন দিয়ে জানিয়ে ছিলাম আমি বিকালে তোমার এলাকায় আসছি তুমিও থেকো। মূলত সেখানে গিয়েছিলাম আমাদের এক বন্ধু দেবাশীষ ব্যানার্জির সাথে কুয়াকাটা ভ্রমণ নিয়ে কিছু আলাপ করতে। কারণ আমি পরিবার সমেত কুয়াকাটা যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি।

IMG_20220530_182419.jpg

IMG_20220530_182442.jpg

আমার ঐ বন্ধু কিছুদিন আগে সেখান থেকে ঘুরে এসেছে। যার ফলে চিন্তা করলাম ওর সাথে আলোচনা করে কিছু জরুরী ইনফরমেশন নিয়ে নিই। তাহলে ভ্রমণটা আমাদের জন্য সহজ হবে। যাই হোক যথা সময়ে সেখানে পৌঁছালাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছেই পরিকল্পনা বদলে গেলো। ফেরদৌস বললো চলো আমরা নদীর পাড় থেকে ঘুরে আসি। আমরা যথারীতি পদ্মার পাড়ের সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলাম। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম পদ্মার পানি কিছুটা কমে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমরা যখন এখানে এসেছিলাম তখন এর থেকে পানি অনেক বেশি ছিলো।

IMG_20220530_182451.jpg

IMG_20220530_182425.jpg

নদীতে পানি কমলে আমার কাছে তখন ভালো লাগে না। নদী যখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকে তখনই দেখতে বেশি ভালো লাগে। আমরা সেখানে কিছুক্ষণ বসার পর হঠাৎ করে বন্ধু ফেরদৌস বললো চলো সদরপুর একটা নতুন রেস্টুরেন্ট হয়েছে। জায়গাটা বেশ সুন্দর। সেখান থেকে ঘুরে আসি। প্রস্তাবটা আমার পছন্দ হল। তাই আর কথা না বাড়িয়ে দুজনে ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে করে সে দিকে রওনা দিলাম। জায়গাটি আমাদের এলাকা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। তবে যেহেতু মোটরসাইকেল ছিল সাথে তাই দূরত্ব নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছিলাম না।

IMG_20220530_183050.jpg

IMG_20220530_182519.jpg

সদরপুর যাওয়ার রাস্তাটা খুবই চমৎকার। গাছের সারির ভেতর দিয়ে ছায়া ঢাকা একটি রাস্তা চলে গিয়েছে। এই সমস্ত রাস্তায় চলাফেরা করতে ভালোই লাগে। যাই হোক আমরা ৪০ মিনিটের ভিতরে সেই রেষ্টুরেন্টে পৌছে গেলাম। সেখানে পৌছে রেস্টুরেন্টে দেখে আমার খুবই পছন্দ হলো। অনেকটা ভাসমান টাইপের রেস্টুরেন্ট। রাস্তার পাশেই একটি শাখা নদী বয়ে চলেছে। সেই নদীর ভিতর পিলার বসিয়ে রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হয়েছে। আর কিছুদিন পর যখন এই শাখানদী পানিতে ভরে যাবে। তখন এই রেস্টুরেন্ট সময় কাটানোর জন্য একটি আদর্শ জায়গা হবে।

IMG_20220530_182512.jpg

IMG_20220530_190403.jpg

রেস্টুরেন্টটি খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গ্রামের দিকে এমন একটা রেস্টুরেন্ট আসলে ভাবাই যায় না। আমি আর ফেরদৌস সেখানে বসে গল্প করছিলাম। এর ভেতর খাবারের অর্ডার নেয়ার জন্য ওয়েটার এলো।আমরা খেয়াল করে দেখলাম রেষ্টুরেন্টটি গ্রামের দিকে হলেও দামে কোন অংশে কম নয়। বরং শহরের কিছু কিছু রেস্টুরেন্ট থেকে এদের দাম বেশি। আমরা দুজন চিকেন চাপ আর নান অর্ডার করলাম।

IMG_20220530_190505.jpg

IMG_20220530_190455.jpg

খাবার অর্ডার করে বসে আছি দীর্ঘ হয়ে যায় কিন্তু খাবার সার্ভ করার কোন নাম দেখি না। যদিও আমাদের কোনো তাড়া ছিল না। এর ভিতর মাগরিবের আজান হয়ে গেলো। তখন আমি রেস্টুরেন্টের লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম খাবার হতে আর কত সময় লাগবে? তারা বলল আর কয়েক মিনিটেই খাবার তৈরি হয়ে যাবে। আমি বললাম তাহলে আপনারা একটু আস্তে আস্তে খাবার তৈরি করুন। আমি নামাজ পড়ে আসি। এই বলে আমি নামাজ পড়তে গেলাম।

IMG_20220530_190422.jpg

IMG_20220530_190411.jpg

নামাজ পড়ে টেবিলে এসে দেখি খাবার ইতিমধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যার পরে মৃদু আলোতে এমন একটি চমৎকার জায়গায় বসে খেতে ভালই লাগছিলো। খাবারের মান অবশ্য খুব একটা ভালো ছিল না। তারপরও পরিবেশের কারণে বেশ ভালই লাগছিল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে তারপর সেখান থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। এই সমস্ত জায়গা থেকে শহরে ফিরতে হলে একটু তাড়াতাড়ি ফিরতে হয়। কারণ রাস্তাঘাট একদম নির্জন থাকে। আমরা ফেরার পথে রাস্তায় অল্প কয়েকজন মানুষকে দেখতে পেয়েছি। বেশিরভাগ জায়গা ছিল একদম জনমানব শূন্য।

IMG_20220530_192228.jpg

IMG_20220530_190432.jpg

এই রেষ্টুরেন্টের একটি ব্যাপার আমার কাছে ভালো লেগেছে। রেষ্টুরেন্টটি দিনের বেলা থেকে রাতের বেলা দেখতে অনেক বেশী সুন্দর লাগে। রাতের বেলা আলো ঝলমলে রেস্টুরেন্ট দেখতে আশেপাশের অনেক মানুষই সেখানে এসেছে। সন্ধ্যার পরে এমন চমৎকার করে সাজানো একটি জায়গায় সময় কাটাতে কারো খারাপ লাগার কথা নয়। আমাদেরও সময়টা সেখানে বেশ ভালোই কেটেছে।

IMG_20220530_192251.jpg


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানসদরপুর

Sort:  
 3 years ago 

আমি এক বর্ষা মৌসুমে কুয়াকাটা ভ্রমণে গিয়েছিলাম। একদিনের ভ্রমণ সকাল থেকেই ছিল ঝুম বৃষ্টি। এর মাঝেও সমুদ্র তীরে উপস্থিত একাকী। এক পাশে সমুদ্রের ঢেউ অন্য পাশথেকে নেমে আসছে অজস্র বৃষ্টির পানি। যেহেতু একাকী তীরে দাঁড়িয়ে আছি সমুদ্রের পানি পর্যন্ত যেতে ভয় লাগছিল তবুও একটু একটু করে যেয়ে সমুদ্রের পানিতে কিছুক্ষণ দুইপা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মনে তৃপ্তি নিয়ে বাড়ি ফিরলাম বিশাল সমুদ্র স্পর্শ করার।

এখন প্রায় বৃষ্টি হচ্ছে এমন একটা দৃশ্য আপনিও দেখার সুজগ পেতে পারেন। শুভকামনা রইলো।

সেই সুযোগটা পেয়ে ছিলাম। আমরাও সেখানে পৌঁছানোর পর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়েছে।

 3 years ago 

এরকম গ্রামীন পরিবেশের রেস্টুরেন্ট গুলো আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। আমাদের এখানেও এইরকম একটা রেস্টুরেন্ট আছে। মাঝেমধ্যে আমরা সেখানে গিয়ে কাবাব খেয়ে থাকি। এরকম ছোট্ট ঘরের মধ্যে খেতে ভালো লাগে। তাছাড়া কুয়াকাটা ভ্রমণ এর কথা চিন্তা করছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। ভ্রমণ করার তা আমাদের জন্য জরুরী। কারণ যত বেশি ভ্রমণ ততই মন ভাল থাকে। আমার কাছে রেস্টুরেন্ট এর ছবিগুলো বেশ ভালো লেগেছে।

রেষ্টুরেন্টটি আসলেই বেশ সুন্দর করে সাজিয়েছে তারা। গ্রামের ভেতর এধরনের রেস্টুরেন্ট দেখলে ভালোই লাগে।

 3 years ago 

সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গেলে আসলে খুব ভালো লাগে ভাই। কুয়াকাটা কিন্তু আমাদের বাড়ি থেকে খুবই কাছে যদিও আমি বাড়ি থাকি না আমি কিন্তু ঢাকায় থাকি। কুয়াকাটা ঘুরে আসুন। কুয়াকাটা থেকে আর খুব ভালোভাবে জন্য ঘুরতে পারেন এটাই দোয়া রইল। আর সত্যি কথা বলতে আপনি যে রেস্টুরেন্টের ছবি দিয়েছেন রাত্রে রেস্টুরেন্ট দেখতে কিন্তু সত্যিই চমৎকার লাগছে।

রেস্টুরেন্টটি দিনের থেকে রাতে দেখতে বেশি ভালো লাগে।

 3 years ago 

অসাধারণ দৃশ্য এই রেস্তোরাটার।এখানে আমার একদিন যাওয়ার ইচ্ছা আছে ছবি তোলার জন্যে।

চলে আসেন আমাদের এলাকায়। আপনাকে এই রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাবো।

 3 years ago 

দারুন ছিল রেস্টুরেন্ট এর দৃশ্য। আমার কাছে খুবি ভাল লাগলো। তবে বৃষ্টি ভেজা দিনে এখানে গেলে মনে হয় আরো ভালো লাগবে। খাবারের মান খুব একটা ভাল হবার কথা নয় ওখানে তারপরও সব মিলিয়ে খারাপ না। আমি যাবো যাবো করে আর যাওয়া হচ্ছে না। কুয়াকাটা খুবি ভাল স্থান । ওখানে খরচ কিছুটা কম হবে। তবে লেবু বনে যাবেন যদি কুয়াকাটা যান। আমি গিয়েছি ৪ বার। ভাল থাকবেন ভাই।

কুয়াকাটা ঘুরে এবার বেশ মজা পেয়েছি। আগের থেকে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম এবার।

 3 years ago 

গ্রামীণ পরিবেশে রেস্টুরেন্টটি সত্যিই বেশ আলো ঝলমলে।রাতের বেলা খুব আকর্ষণীয় দেখতে লাগছে।এখানে বাচ্চাদের নিয়ে গেলে খুব আনন্দ পাবে ভাইয়া।তাছাড়া আমার এটা দেখে মনে হয়েছে এটি কিছুটা পার্ক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।যাইহোক আশা করি ভালো সময় পার করেছেন, ধন্যবাদ ভাইয়া।

অল্প কয়েকটি জিনিস দিয়ে বাচ্চাদের জন্য একটি খেলার জায়গা তৈরী করা হয়েছে। এই ব্যাপারটি দেখে বেশ ভালো লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.035
BTC 112231.07
ETH 4466.94
SBD 0.85