ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু রেনডম ফটোগ্রাফি নিয়ে একটি অ্যালবাম
আজ - শুক্রবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমার ছাত্র-ছাত্রীর বিশেষ কিছু মুহূর্ত এবং তাদের কিছু বর্ণনা নিয়ে। আশা করি এই পোস্টের মধ্য দিয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন আমার এই ছাত্র-ছাত্রী সম্পর্কে। আপনারা অনেকেই জানেন বিশেষ কিছু তথ্য নিয়ে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে থাকি। আশা করি আজকেও ভিন্ন কিছু বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন, তাই চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এখনই মূল পর্বে চলে যা যাক।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ মুহূর্তের ফটোগ্রাফি
আপনারা এখানে যাদের দেখতে পাচ্ছেন তাদের নাম মোছাঃ রুবাইয়া খাতুন; মোছাঃ আলমিরা খাতুন এবং মোঃ হাবিব হোসেন। পাঁচ কিলো দূর থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে পড়তে আসে। প্রতিদিন সকাল আটটা এর মধ্যে উপস্থিত হয়ে যায় বিদ্যালয়ে। এরা খুবই সুন্দর লেখাপড়া করে এবং শ্রেণীতে প্রত্যেক শিক্ষকের কথা মান্য করে চলে। এটা বাংলা রিডিং পড়তে তেমন শেখেনি তবে উচ্চারণ করে পড়তে পারে। ঠিক তেমনভাবে ইংরেজি সম্পূর্ণ না পারলেও উচ্চারণ করে পড়তে পারে। আমি প্রায় লক্ষ্য করে থাকি এরা টিফিন টাইম বা অন্যান্য সময় একসাথে খেলাধুলা করে এবং অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কোন প্রকার বেয়াদবি করে না। এরা তিনজন আমার অতীত স্নেহের। ফটো ওঠানোর সময় লক্ষ্য করেছিলাম পাশে থাকা ফুল গাছটিতে কিছু ভুল ধরেছে। তারা তিনজনে একসাথে দাঁড়িয়ে ফুল দেখছিল। অন্য কোন ছাত্র-ছাত্রী তাদের নিকটে ছিল না। তাদের এত সুন্দর মিল দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। তাই তখনই চেষ্টা করেছিলাম এক সাথে থাকা মুহূর্তের ফটোগ্রাফি করে রাখি। স্মৃতি হয়ে থাক তাদের সুন্দর বন্ধন আমার স্টিমেটের পাতায়।
কিছুদিন আগে আমি এবং আমাদের আরেকজন শিক্ষক গিয়েছিলাম হাবিব রুবাইয়াদের গ্রামের সকল ছাত্র-ছাত্রীর বাড়িতে দাওয়াতের চিঠি দেওয়ার জন্য। প্রথমে যখন হাবিবদের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম। হাবিব তাদের বাসা থেকে বের হয়ে এলো। ওর আব্বা বিদেশে থাকে। হাবিবের আম্মু কোন এক স্থানে কুরআন শিখায়। আমরা যখন গিয়েছিলাম ওই মুহূর্তে ওর আম্মু বাসায় ছিল না। চাইলে স্কুল থেকে দাওয়াতের চিঠি তাদের হাতে দিতে পারতাম, তবে উপদেষ্টা স্যারের কথা এবং আমিও মোতাবেক প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের বাসায় শিক্ষকদের যাওয়া লাগবে এবং দেওয়া লাগবে তাই যেতে হয়েছিল। হাবিব আমাদের দেখে খুবই খুশি হয়েছিল এবং এক দড়ে যে রুবাইকে ডেকে আনলো। তবে গ্রাম এবং তাদের বাসা আমাদের তেমন চিনা জানা নয় যার জন্য স্কুলের ইউনিফর্ম পড়া ছাত্রটিকে সাথে নিয়েছিলাম যেহেতু এই ছেলেটির বাসা ওই গ্রামে। আমি অনেক অবাক হয়েছিলাম এরা এত দূর থেকে সকালে প্রস্তুত হয়ে স্কুলে আসে কিভাবে! আর এই চিন্তা ভাবনা আমাকে আরো বিবেকবান করে তোলে। যেন ওদেরকে ভালো শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারি, ক্লাসের প্রতিটা মুহূর্ত যেন ওদের পিছে ভালোভাবে ব্যয় করতে পারি এমন মনোভাব জাগ্রত হয়। যেন আমার থেকে অনেক কিছু ওরা শিখতে পারে, ভবিষ্যতে যেন ওরা লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে,সেই পথ দেখানোর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা মাথায় রাখি।
টিফিন টাইম বা স্কুল শুরু হওয়ার পূর্বে মাঝেমধ্যে ছাত্রদের নিয়ে ফুটবল ক্রিকেট খেলে থাকে। ক্রিকেট বল এদিক থেকে মারলে ফিল্ড অতিক্রম করে কুশুরের জমিতে চলে যায়। ক্লাস টু এর দুষ্ট বালক তানভীর। বেশ কয়েকটা ছাত্র মিলে বল খুজতে চলে যায় আখ এর জমিতে। বল পেয়ে গেলে তারা ভেতরে চলে আসে কিন্তু এই ছেলেটা ভিতরে প্রবেশ করছিল না। আমি ওর নিকটে গেলাম এবং জানতে চাইলাম বাবু তুমি কেন আসছেনা আমাকে দেখে টেম্পোরারি উপরে উঠে বসলো এবং কিছুটা ইয়ার্কি আকারে আমার সাথে কথা বলতে থাকলো। তার উদ্দেশ্য ছিল আখ ভেঙে খাওয়ার। তাই নানান ছলে আমার কাছে অজুহাত দেখাতে থাকলো। বলতে থাকলো (স্যার আমাকে শুধু একটু খেতে দিন ওখান থেকে নিয়ে, আখ খাওয়ার পরে আপনার জন্য দোয়া করে দেবো! আমার দোয়া সারা জীবন আপনার কাজে লাগতে পারে!) এছাড়াও অনেক পাগলামি করতে থাকলো সে। আমি তাকে খুব সুন্দর করে বুঝালাম। বললাম তুমি যদি আখ চুরি করো তাহলে আমাদের প্রতিষ্ঠানের দুর্নাম হবে। তোমার জন্য আমাদেরও দুর্নাম হবে। যাই হোক অনেক সুন্দর করে বোঝানোর পরে সে ফিরে এলো। এবং আমি তাকে দশটি টাকা দিলাম মিষ্টি খাওয়ার জন্য। এছাড়াও অন্যান্য সকল ছাত্রদের মাঝে বোঝানোর চেষ্টা করলাম।
আমাদের বিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যালয় থেকে ২ কিলো দূরে একটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ডোজ সম্পন্ন করা হয়। নতুন স্থানে ছাত্রছাত্রীরা খুবই আনন্দ উৎসাহের সাথে গিয়েছিল। তবে কোন ছাত্র-ছাত্রী টিকা দিতে হবে জেনেও ভয় পেয়েছিল না। আমরা যখন উপস্থিত হয়েছিলাম দেখছিলাম ওই বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের করোনা টিকা দেওয়া চলছিল। ওই স্কুলের একজন শিক্ষিকা আমাকে বলেছিল আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর দেওয়া সম্পন্ন হলে আপনাদের ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা দিয়ে নিন তারপরে আমাদের বাকিগুলো দিয়ে দিব। সুন্দর নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে অল্প সময়ে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া সম্পন্ন হল। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী আমাদের প্রশংসা করলো যে এরা কত সুন্দর ভাবে নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে খুব দ্রুত টিকা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করলো! আর আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের হয়ে উঠছে না। আসলে ছোট ছোট ছাত্র ছাত্রীদের যেভাবে শিখানো হবে তারা ঠিক সেভাবেই শিখবে। আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় বিভিন্ন বিষয়ের নিয়ম শেখানো হয়। টিকা দিতে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের এক জায়গায় ডেকে সুন্দর করে বোঝানো হয়েছিল আমরা যা বলব তাই করতে হবে এবং নিয়ম মেনে চলতে হবে যেহেতু গ্রামের বিদ্যালয়ের সেটা সেখানে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা করা যাবে না যাতে আমাদের মান সম্মান নষ্ট হয়। সকল ছাত্র-ছাত্রী সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে সেখানে গিয়েছিল এবং করোনা টিকা দিয়ে স্কুলে এসেছিল তাই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী নিকট আমরা প্রশংসার পাত্র হয়ে গেছিলাম। Photography device: Infinix hot 11s
|
---|
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৫ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোষ্টে,ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আপনার ছাত্র-ছাত্রীরা দেখছি অনেক ভদ্র, নম্র এবং নিয়ম কানুন মেনে চলে।আসলেই শিক্ষকদের জীবন অনেক সুন্দর।শিক্ষকেরা যদি ভাল হয়, ছাত্রছাত্রীদের থেকে অনেক সম্মান পেয়ে থাকেন।যা আপনাকে দেখে আপনার ছাত্র-ছাত্রীদের দেখে বুঝা যাচ্ছে।সুন্দর কিছু মুহূর্ত এবং সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
এরা আমার অতি প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী।
ভাই আপনার পোষ্টের কনসেপ্টটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আপনি আপনার ছাত্র-ছাত্রীদের খুব সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন এবং ওদের ব্যাপারে গুছিয়ে অনেক কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে যারা ভালো তাদের ভালো বলাই উচিত।
ভাইয়া আপনার ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে আপনার অনুভূতি জেনে অনেক ভাল লাগলো। উপরের তিন জন ছাত্র ছাত্রী পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে পড়তে আসে। তাদের তো অনেক কষ্ট হয়ে যায় মনে হয়। আপনার স্কুলটা দেখলাম মোটামুটি বিশাল বড়। সামনে বিশাল বড় খেলার মাঠ আছে। করোনার টিকা টা আপনাদের স্কুলে না দিয়ে অন্য জাগায় দিলো। নতুন জাগায়ে গিয়ে স্টুডেন্টরা ভালই আনন্দ করেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
দোয়া করবেন আমার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য।