জীবনের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ (প্রথম পর্ব)।
শাহীন ক্লান্ত বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়িতে ঢুকলো। ঘরে ঢুকেই সে কাজের থেকে ব্যাগটা নামিয়ে সোফায় গা এলিয়ে দিলো। সারাদিনের প্রচন্ড পরিশ্রমে এমনিতেই শারীরিকভাবে সে ক্লান্ত ছিলো। তার ওপর অফিস থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ আগে বসের সাথে বেশ কথা কাটাকাটি হয়েছে। সেটা নিয়ে মেজাজটা খিঁচরে রয়েছে। ঘরে ঢুকে সে চুপচাপ সোফার উপরে শুয়েছিল। কিছুক্ষণ পর তার স্ত্রী সাবিহা এসে তাকে এ অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করল। কি ব্যাপার তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে নাকি?
শাহীন সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো সাবিহাকে জিজ্ঞেস করল আজকেও দরজা খুলে রেখেছিলে কেন? তোমাকে না বারবার বলেছি দরজা সব সময় ভালোভাবে বন্ধ করে রাখবে। দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে। যে কোন সময় বড় একটা বিপদ ঘটে যেতে পারে। সাবিহা বলল খেয়াল ছিলনা কখন দরজাটা খুলে ছিলাম। তারপর তার স্ত্রী তাকে বলল তুমি বসো। আমি তোমার জন্য চা নাস্তা নিয়ে আসছি। ততক্ষণে তুমি জামা কাপড় ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে নাও। শাহীন হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে সোফায় এসে বসলো। এর ভিতর তার স্ত্রী তার জন্য নাস্তা নিয়ে এসেছে।
নাস্তা করেই শাহীন জামাকাপড় পড়ে বাইরে রওনা দিলো। সাবিহা তাকে বাইরে থেকে জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার আবার কোথায় চললে। শাহীন বলল একটু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে আসি। সারাদিন পর এই সময়টা সে খুব উপভোগ করে। এলাকার বন্ধু বান্ধব যারা আছে তারা সবাই সন্ধ্যার পরে একটি চায়ের দোকানে এসে জড়ো হয়। তারপর সেখানে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডাবাজি চলে। শাহীন সেই আড্ডার স্থলে পৌঁছতেই ওর বন্ধু রাশেদ ওকে উদ্দেশ্য করে বললো। কিরে তোর চাকরি কেমন চলছে? শাহীন উত্তর দিল আর বলিস না। মনে হয় চাকরিটা আর বেশি দিন করা হবে না। দিন দিন কাজের প্রেসার বাড়ছে। এদিকে বেতন বোনাসের কোন খবর নেই। বেতন সেই আগের মতই রয়েছে।
বাজারের যা অবস্থা তাতে এখন আর ওই বেতনে সংসার চলে না। ভাবছি চাকরির পাশাপাশি কিছু একটা করতে হবে। তখন রাশেদ বলে তোর যে চাকরি। এই চাকরি করে অন্য কাজে সময় দিবি কিভাবে? শাহীন বলে সেটা ঠিক বলেছিস। দেখি কিছু একটা উপায় বের করতেই হবে। না হলে এভাবে আর চলছে না। চায়ের দোকানে বসে এক কাপ চা নিয়ে হাতে একটি সিগারেট নিয়ে বন্ধুদের সাথে শাহিন আড্ডা দিতে থাকে। আড্ডা দেওয়ার পর শাহীন বলে আজকের মতো উঠি তোরা থাক।
ওর বন্ধুরা তখন বলে কিরে এত সকালে বাড়ি চলে যাবি। কি ব্যাপার বউ রাগ করে নাকি? তখন শাহিন বলে নারে শরীরটা ক্লান্ত লাগছে। শাহীন বাড়ি ফিরতে ফিরতে চিন্তা করতে থাকে চাকরি ছেড়ে কি করা যায়? অনেক ভেবেও তেমন কিছু সে বের করতে পারে না। কারণ ব্যবসা করতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। সে যে টাকা বেতন পায় তা দিয়ে কোন রকম কষ্ট সৃষ্টে তার সংসার চলে যায়। বাড়তি কিছুই থাকে না। যার ফলে ব্যবসা করা তার পক্ষে সম্ভব না।(চলবে)
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
জীবনের কাছে অসহায় আত্মসমর্পন গল্পটি বেশ ভাল লাগলো। বাস্তবতা তুলে ধরেছেন ভাইয়া। শাহীন জব ছেড়ে ব্যবসা করবে কিন্তু টাকা কোথায়? তাই বাধ্য হয়ে এ চাকরী তাকে করতে হচ্ছে।যেখানে বেতন না বেড়েছে, না বোনাস পায়।পরের পর্বে শাহীন কি করে সেটাই পড়ার অপেক্ষায়। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে মনোযোগ দিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য।