বাল্য কালের বউsteemCreated with Sketch.

in #steemit6 years ago

তসিবাকে কুলে নিয়ে সোজা গাড়ীতে এনে বসিয়ে দিলাম। আব্বু চাচা সবাই আমার সাথে আমি গাড়ীটা চালিয়ে পপুলার হাসপাতালে নিয়ে এলাম। তসিবাকে আবার কুলে করে এনে ডাক্তারকে বলে তসিবাকে সাথে সাথে আই সি ইউতে ঢুকিয়ে নিয়েছে। তসিবার শরীরের রক্তের দাগ আমার গায়ে লেগে আছে। আমি দাঁড়িয়ে আছি আম্মু আমার কাছে এসেছে,,
আম্মু:- সোহরাব চিন্তা করিস না তসিবা ঠিক হয়ে যাবে।
আমি:- যদি তসিবার কিছু হয় তাহলে আমি তোমাদের কাওকে ক্ষমা করবো না। তসিবাকে তোমরা বউ হিসাবে মেনে নিলে কি এমন ক্ষতি হত। আর ঐ নীলাকে খুন করে ফেলবো যদি তসিবার কিছু হয়।
ডাক্তার:- দেখুন রুগির গার্জিয়ান কে?
চাচা:- হ্যা আমি বলেন কি করতে হবে?
ডাক্তার:- এখানে একটা সাইন করতে হবে। নেন সাইন করে দেন।
চাচা:- হ্যা দেন। তখনি,,,
আমি:- খবরদার আপনি এখানে সাইন করবেন না আমি সাইন করবো। আজকে আপনাদের জন্য আজ তসিবার এমন পরিস্থিতে আছে। ডক্টর দেন তসিবা আমার স্ত্রী আমি সাইন করবো।
ডাক্তার:- হ্যা যেহেতু আপনি স্বামি আপনি সাইন করে দেন। আর এ নেগেটিভ রক্ত লাগবে আপনারা রক্তের ব্যাবস্থা করেন।
চাচা:- হ্যা করতেছি,, চাচা আর আব্বু রক্তের জন্য অনেক যায়গায় যোগাযোগ করছে।
ডাক্তার:- রক্তের ব্যাবস্থা হয়ছে নাকি? এদিকে রুগির অবস্থা ভালোনা কিন্তু?
আমি:- ডাক্তার আমার রক্ত পরীক্ষা করে দেখবেন।
ডাক্তার:- আপনি আমার সাথে আসেন। তখনি একজন নার্ছ এসে বলে স্যার রক্তের ব্যাবস্থা হয়ছে।
ডাক্তার:- ঠিক আছে তাহলে আর রক্ত লাগবে না।
আমি:- আচ্ছা অপেরেশন সময় কি আমি তসিবার পাশে থাকতে পারবো? প্লিজ ডক্টর আমাকে সাথে রুখুন।
ডাক্তার:- কোন আওয়াজ করতে পারবেন না কিন্তু?
আমি:- হ্যা চলেন, আমি ডাক্তারের সাথে গেছি আই সি ইউর ভীতর তসিবা শুয়ে আছে। তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি কখন যে চোখ দিয়ে পানি পরে গেছে বলতেও পারবো না। প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে তসিবার অপেরেশন করাবার পর তসিবার গুলি বের করেছে। তার কিছুক্ষন পর ডাক্তার আমাকে বলছে তসিবার অপেরেশন ঠিক ঠাক মত হয়ছে।
ডাক্তার:- আপনার স্ত্রী এখন সম্পূর্ণ আওট অফ ডেঞ্জার।
আমি:- ধন্যবাদ ডাক্তার, সবাই বেরিয়ে গেল আমি তসিবার সাথে বসে আছি। তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি বাল্য কালের বউটা দেখতে একদম কেমন হয়ে গেছে। তসিবার দুষ্টমি গুলা খুব মনে পড়ছে। ওর দুষ্টমি গুলা ভাবতে ভাবতে ওর পাশে ঘুমিয়ে গেছি কখন ঠিক মনে নেই। হঠাত কারো হাতের স্পর্শে আমার ঘুম ভাঙলো। চেয়ে দেখি তসিবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেছে।
তসিবা:- তুমি কি ভাবছো আমি তোমাকে রেখে একা চলে যাবো?
আমি:- নীলা আমাকে গুলি করেছে তুমি সেই খানে আসলে কেন?
তসিবা:- তোমাকে ছারা আমি বাচতে পারবো না।
আমি:- যদি তুমি মরে যেতে তাহলে আমার কি হত?
তসিবা:- কি আর হত তুমি নীলাকে বিয়ে করে সূখে সংসার করতে।
আমি:- কি বললে তুমি তবেরে দেখাচ্ছি বলে তসিবার দু হাত ধরে ওর গালে আর কপালে কিস করে দিয়েছি। এমন সময় একটা নার্ছ এসে বলে,,,,
নার্ছ:- মেম আপনার সাথে একটা মেয়ে দেখা করতে চাচ্ছে।
আমি:- কোন মেয়ে?
নার্ছ:- যেই মেয়েটা আপনার স্ত্রীকে রক্ত দিয়েছে সেই মেয়েটা। ওনাকে কি ভীতরে আসতে বলবো?
তসিবা:- ঠিক আছে ভীতরে পাঠিয়ে দেন। নার্ছ গিয়ে মেয়েটিকে পাঠিয়ে দিয়েছে আমি তাকিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেছি।
আমি:- তুমি এখানে এসেছো কেন? আর তুমি তসিবাকে রক্ত দিয়েছো?
হ্যা আমি তসিবাকে রক্ত দিয়েছি আসলে ভূলটা আমার ছিলো। জোর করে ভালোবাসা পাওয়া যায়না। এইটা আমার বুঝার উচিত ছিলো। আচ্ছা তসিবা তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি আর তোমাদের মাঝে কোন দিন আসবো না। (নীলা)
তসিবা:- দ্বাড়াও নীলা তখনি চেয়ে দেখি নীলার হাতে হাত করা লাগানো। সোহরাব আমাকে একটু ধরে বসাও।
আমি:- হ্যা বসাচ্ছি।
তসিবা:- আসলে ভূল তোমার নই। সোহরাব আমাকে ভালোবাসে এইটা আমার জেঠু জানে কিন্তু ওনার রাগ বজায় রাখতে গিয়ে তোমার সাথে এমন হয়ছে।
নীলা:- আসলে আমারও বুঝা উচিত ছিলো। যাক বাদ দাও তসিবা আমার ভাগ্যে যা আছে তাই হবে।
তসিবা:- সোহরাব তুমি একটু পুলিস আঙ্কেল কে এদিকে আসতে বলো।
আমি:- হ্যা ডাক দিতেছি, আমি গিয়ে পুলিশ অফিসারকে ডেকে আনছি।
তসিবা:- দেখুন স্যার নীলার বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। আপনারা নীলাকে ছেরে দিন। আসলে নীলার কোন দোষ নেই।
পুলিশ:- দেখুন এইটা কেইস ফাইল হয়ে গেছে।
আমি:- তাহলে এই ফাইলটা ছিরে ফেলেন। আমরা তো কোন অভিযোগ করিনি। প্লিজ স্যার আপনার কাছে বিশেষ অনুরুদ আপনি নীলাকে ছেরে দেন। আর আজ তো নীলার জন্য তসিবা বেচে আছে। ও যতি তসিবাকে মারতে চাইতো তাহলে কি রক্ত দিত বলেন?
পুলিশ:- ঠিক আছে তাহলে এখানে একটা সাইন করে দেন।
তসিবা:- ঠিক আছে দেন, তসিবা সাইন করে দিয়েছে। নীলার হাত করা খুলে দিয়েছে। পুলিশ চলে গেছে, নীলা কান্না করে দিয়েছে তসিবার হাত ধরে।
আমি:- নীলা যা হবার হয়ে গেছে তুমি কাওকে বিয়ে করে সূখের সংসার করো কেমন।
নীলা:- হ্যা আমি কালকে আপুর কাছে চলে যাবো লন্ডন।
তসিবা:- ঠিক আছে তাহলে ভালো থেকো। নীলা চলে গেছে ডাক্তার এসেছে,,
আমি:- তসিবাকে আমরা বাড়ীতে নিতে পারবো কবে?
ডাক্তার:- এক সাপ্তাহ পর।
আমি:- ঠিক আছে তখনি আব্বু চাচা আম্মু চাচি সহ সবাই এসেছে।
চাচা:- মা তসিবা তুই আমাদের ক্ষমা করে দে!
আব্বু:- হ্যা মা তুই আমাদের ক্ষমা করে দে!
তসিবা:- ক্ষমা করতে পারি একটা শর্তে যদি সোহরাব আর আমার বাল্য কালের বিয়েটা মেনে নেন। আর আপনারা সবাই এক সাথে থাকেন।
আব্বু:- এই কথা ঠিক আছে আমি তোমাকে আমার ছেলের বউ হিসাবে মেনে নিলাম।
চাচা:- আমিও সোহরাবকে আমার মেয়ের জামাই হিসাবে মেনে নিলাম। আর আমরা সবাই এক সাথে এক বাড়ীতে থাকবো।
ডাক্তার:- দেখুন আপনারা সবাই বাহিরে যান এখানে মাত্র একজন থাকতে পারবেন।
তসিবা:- সোহরাব তুমি থাকো প্লিজ।
আমি:- হ্যা আমি তো থাকবো। সবাই চলে গেছে আমি আর তসিবা দুজন দুজনের হাত ধরে বসে আছি। তসিবার সাথে এই সাত দিন আমি ছিলাম। ওকে খায়িয়ে দিয়েছি মাথা আচরিয়ে দিয়েছি। হাত মুখ দুয়িয়ে দিয়েছি। আজকে ওর রিলিজ তাই সকালে একজন নার্ছের সাহায্য ওকে গোসল করিয়ে দিয়েছি। লাল কালার রেহেঙা পড়িয়ে দিয়েছি।
তসিবা:- এত সাজাচ্ছো কেন?
আমি:- তুমি বাইকে বসে যেইটা চাইছো সেইটা আজকে আমাদের বাড়ীতে হবে।
তসিবা:- আমাদের বাসর হবে বলে তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরে গালে কপালে কিস করতে থাকলো। তসিবার এমন দুষ্টমি দেখে নার্ছ হেসে দিয়েছে।
আমি:- ছারু এখানে নার্ছ আছে, তসিবাকে ছারিয়ে নার্ছকে দুই হাজার টাকা বকশিস দিয়েছি। ওনি নিতে চাইনি তসিবা ওনাকে জোর করে দিয়েছে। ডাক্তারের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি।
তসিবা:- আমার একটা ইচ্ছা পুরুন করবে। আমাকে কুলে করে নিয়ে যাবে গাড়ী পর্যন্ত।
আমি:- এই কথা তাহলে তো আমার ভালোই হবে বলে তসিবাকে কুলে তুলে নিলাম। আমি তসিবাকে কুলে নিয়ে বের হচ্ছি সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তসিবাকে কুলে করে এনে গাড়ীতে বসিয়ে দিয়েছি। বাড়ীতে ফোন করে বলে দিয়েছি তসিবাকে নিয়ে আসতেছি। তসিবাকে নিয়ে একটি পার্লারে গিয়ে বউ সাজিয়ে নিলাম।
তসিবা:- তুমিও বর সেজে নাও।
আমি:- ঠিক আছে মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনা কাটা করে জীন্স পার্লার থেকে বর সেজে নিলাম। তসিবা আমার পাশে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। রাত ৯টার দিকে বাড়ীতে এসেছি। তসিবাকে গাড়ী থেকে কুলে নিয়ে দরজার সামনে এসেছি। আম্মু আমাদের বরণ করে নিয়েছে। তসিবাকে কুলে করে সোজা আমার রুমে নিয়ে এসেছি। রুমে ঢুকে দেখি রুমটা লাল গোলাম রজনী আর বেলি ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখছে।
আম্মু:- আর বের হতে হবে না এই নে তোদের খাবার আমি বাহির দিয়ে লক করে রাখতেছি।
তসিবা:- হ্যা জেঠি মা আপনি তাই করেন।
আমি:- ঠিক আছে তাহলে তাই করেন আম্মু। আম্মু চলে গেছে আমি তসিবার কপালে আলতু করে চুমো একে দিলাম। আমি তসিবাকে নিজের হাতে খায়িয়ে দিয়েছি। আর তসিবা আমাকে খায়িয়ে দিয়েছে।
তসিবা:- আমাকে তুমি সারা জীবন এনম করে ভালোবাসবে তো?
আমি:- যদি তোমার বয়স ৮০ হয়ে যায় আর তোমার গায়ের চামরা লোজ হয়ে যায়। দাত সব গুলা পরে যায় তাহলে তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা এমন একটু কমবে না।
তসিবা:- আমি সত্যি অনেক ভাগ্যবান তোমার মত বর পেয়েছি। আসো তোমাকে আজকে একটা নতুন জিনিস দেখাবো।
আমি:- কি নতুন দেখাবে?
তসিবা:- বোকা কোথাকার এদিকে আয় বলে তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমিও তসিবাকে জড়িয়ে ধরে একদম আপন করে নিয়েছি। আমাদের বাসর ঘর মনে রাখার মত হয়েছে। সকালে তসিবা ওর বেজা চুলের পানি দিয়ে আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছে।
আমি:- কি করছো?
তসিবা:- উঠো সবাই অপেক্ষা করছে নাস্তা করবে?
আমি:- একটু ঘুমাতে দাও।
তসিবা:- না এখুনি উঠো বলে আমার পেটে চিমটি দিতে ছিলো। তখনি তসিবার হাত ধরে টান মেরে বুকে নিয়ে নিয়েছি। কি হলো ছারু আমি ফ্রেস হয়ে গেছি তুমি উঠে ফ্রেস হয়ে নাও।
আমি:- আমার সাথে আবার ফ্রেস হবে বলে তসিবাকে আদর করে দিলম।
তসিবা:- জেঠু মা আসতেছি তখনি আমার ঠোটে কিস করে বসেছে আমি তসিবাকে ছেরে দিয়েছি। আমাকে ভেঙচি দিয়ে চলে গেছে।
আমি:- দ্বাড়াও দেখাচ্ছি বলে উঠে যটপট করে ফ্রেস হয়ে নিচে গেছি।
আব্বু:- সোহরাব এই নে তোদের হানিমুনের টিকেট তসিবাকে নিয়ে চট্রগ্রাম থেকে ঘুরে আয়।
তসিবা:- হ্যা তাহলে তো ভালোই হবে।
আমি:- তসিবা আমি রুমে যায়তেছি তুমি এসো।
তসিবা:- না না আমি যাবো না।
আমি:- ঠিক আছে, রুমে এসে তসিবা বরে চিতৎকার দিলাম। তসিবা দৌরে রুমে গেছে তখনি জড়িয়ে ধরেছি।
হানিমুনে যাওয়ার কি দরকার আমরা এখানে হানিমুন করে নেব।
তসিবা:- এখানে কি করে সম্বব?
আমি:- এই ভাবে বলে তসিবাকে কুলে তুলে নিয়েছি এই ভাবে। তসিবা আমাকে কিস করেছে,,,
তসিবা:- ঠিক আছে তাহলে আমরা দুজনে রোজ হানিমুন করবো রাতে কেন্ডি লাইট ডিনার যাবো বিকালে ঘুরতে যাবো আর রাতে ভালোবাসা।
আমি:- এই তো আমার বাল্য কালের বউ উম্মা।
তসিবা:- এই তুমি কি করছো বলে আমাকে কাতু কুতু দিতে লাগলো আর আমিও তসিবাকে কাতু কাতু দিতে লাগলাম। আমরা দুজনে দুজনকে ছারা কিছু বুঝিনা এক সাথে কলেজে যাই আমাদের ভালোবাসা দেখে অনেকে হিংসা করে। তসিবাকে রোজ নিয়মিত খাবার খায়িয়ে দেয় আর আমাকে তসিবা অনেক ভালোবাসে। তিশা অনেক খুশি কারন আমরা সবাই এক সাথে থাকি ফুপি এখন মাঝে মাঝে আমাদের বেড়ীতে বেরাতে আসে। আমাদের সংসারে আর কোন জামেলা নেই। সবাই অনেক খুশি আর সব চাইতে খুশি হয়ছি আমি আর তসিবা। এভাবে চলছে আমাদের জীবন সংসার আর ভালোবাসা।

সবাই গল্পটার জন্য অনেক অপেক্ষা করেছেন। গল্পটা কেমন হয়ছে সবাই জানাবেন। আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগছে। আমার নতুন গল্প আসবে খুব তারা তারি রেডি থাকিয়েন সবাই।
...................................সমাপ্তি..................
....................

Coin Marketplace

STEEM 0.31
TRX 0.11
JST 0.034
BTC 64549.55
ETH 3170.62
USDT 1.00
SBD 4.13