শারদীয়া কনটেস্ট ১৪৩২(নবমী দুর্গাপূজার ফটোগ্রাফি)
নমস্কার 
কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সকলেই ভালো ও সুস্থ আছেন।আজ আমি @rme দাদার আয়োজিত শারদীয়া ১৪৩২ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি।আসলে ঘন ঘন বৃষ্টির জন্য এই বছর দুর্গাপূজা দেখবার অতটা ইচ্ছে ছিল না আমার।তবে দাদার প্রতিযোগিতার জন্য একটু আগ্রহ জন্মেছিল মনে।কারণ সব প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আমার বেশ ভালো লাগে।এইজন্য দাদাকে জানাই অশেষ ধন্যবাদ।
★নবমী দুর্গাপূজা দেখার জন্য যাত্রা: 
প্রতিবছর দুর্গাপূজা দেখতে প্রপার বর্ধমান শহরে চলে যাই।কিন্তু এইবার যেহেতু এলার্জি প্রবলেমের জন্য শরীরটা একটু অসুস্থ ছিল তাই ভাবলাম মেমারী শহরে ঠাকুর দেখতে যাবো।এটিও বর্ধমান জেলার মধ্যেরই একটি শহর।তবে এটি একটু কাছাকাছি রয়েছে বর্ধমান শহরের তুলনায়।তাই বাড়ি থেকে বের হয়ে 1 কিলোমিটার হেঁটে টোটো ধরে আমাদের স্টেশনে পৌঁছে টিকিট কেটে নিলাম।তারপর ট্রেনে চেপে মেমারীর দিকে যাত্রা করলাম।
★বর্ধমান জেলার মেমারী শহরের পূজা প্যান্ডেল,ক্লাব ও থিমের নামসহ কিছু সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : 
মেমারী স্টেশনে নেমেই আমরা বিভিন্ন পূজা মন্ডপে পৌছালাম।এই সময় একটু পথ গেলেই টোটোওয়ালারা ঠকিয়ে দেয় ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে,তাই টোটো ধরলাম না।তাছাড়া পায়ে হেঁটে পূজা দেখার মজাই আলাদা।আমরা মোট 4 টি দুর্গামায়ের প্রতিমা দর্শন করেছিলাম।এই বছর একদিনেই অষ্টমী ও নবমী তিথি দুটোই পড়েছিলো।যেটা আমার জন্য সুবিধাজনক হয়েছিলো।আমি আগেই আপনাদের সঙ্গে দুটি পূজা প্যান্ডেলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছি।এরপর আমরা মেমারী বামুনপাড়া মোড়ের দুর্গাপূজা দর্শন করলাম।
1.মেমারী সারদাপল্লী অরবিন্দপল্লী রিক্রিয়েশন ক্লাব এর দুর্গামা দর্শন 
এটি হচ্ছে মেমারী সারদাপল্লী অরবিন্দপল্লী রিক্রিয়েশন ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপূজা প্যান্ডেল।এটি মেমারী বামুনপাড়া মোড়ের কাছে অবস্থিত।আর এই দুর্গাপূজার থিম ছিল --- "ঘরের কাছেই একটুকরো রাজস্থান।"এটি ছিল এই ক্লাবের ৩০তম বর্ষের থিম।
মানুষ যাতে ঘরের কাছেই রাজস্থানকে অবলোকন করতে পারে তারই একটি দৃশ্য সুন্দরভাবে শিল্পীরা ফুটিয়ে তুলেছেন।এখানে রাজস্থানের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য যেমন মহল এবং হাতির দৃশ্য তৈরি করা হয়েছে।পূর্বে রাজ-রাজারা যেমন তাদের মহলের প্রবেশদ্বারে দ্বাররক্ষী রাখতো, তারপর মহলের দুইপাশে দুটি হাতির মূর্তির স্তম্ভ তৈরি করে রাখতো তেমনই তৈরি করা হয়েছে এখানে।
আমরা প্রথমে প্রবেশ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করে ছাতা মাথায় বড় একটি গণেশ ঠাকুরের মূর্তি দর্শন করলাম।এরপর প্যান্ডেলের ভিতরে ওঁ লেখা একটি সুতা ও কাপড়ের কারুকাজ দেখতে পেলাম।এই প্যান্ডেলটি তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন উপাদান, যেমন--বাঁশ,কাপড়,থার্মোকল, প্লাই, ফাইবার, রং ও বার্নিশ দিয়ে।যেগুলোতে শিল্পীর নিখুঁত দক্ষতা ও অক্লান্ত পরিশ্রম প্রকাশ পেয়েছে।

লোকেশন
(দেবী দুর্গামায়ের প্রতিমা)
এই পূজা মন্ডপের দেবী মায়ের আকৃতি ও গঠন ছিল সবই অসাধারণ।যা এককথায় অনবদ্য এবং অপরূপ।এখানে মূলত মায়ের প্রতিমা গুলিকে আধুনিক রূপে তুলে ধরা হয়েছে।দেবীমায়ের বাহন সিংহটি কিছুটা কার্টুন আঙ্গিকে করা হয়েছে।সবমিলিয়ে একটুকরো রাজস্থানের এই মহল প্যান্ডেলটি দারুন লেগেছে আমার কাছে।
2. বিবেকানন্দ ইয়ংস কর্নার চেকপোস্ট এর দুর্গামা দর্শন 
এটি হচ্ছে মেমারী বিবেকানন্দ ইয়ংস কর্নার ক্লাব-এর দুর্গাপূজা প্যান্ডেল।যার থিম হলো-- "রূপদর্শিকা"।এই থিমটির মাধ্যমে মায়ের মুখশ্রীকে নানা রূপে যেমন সাজানো হয়েছে তেমনি সমাজের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই প্যান্ডেলটি চেকপোস্ট, মেমারি পৌরসভার সামনে অবস্থিত।
এই পান্ডেলটির সামনেই দেবীমায়ের বিভিন্ন মুখয়ব তুলে ধরা হয়েছে।আর প্যান্ডেলের মাথায় অনেকগুলো ত্রিশূল দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে।এই প্যান্ডেলটি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ, পাটকাঠি, খড়, কাগজ,কাপড় ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে।এছাড়া প্যান্ডেলের মধ্যে কাগজ দিয়ে অনেকগুলো চরকি এবং প্রজাপতি তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া মায়ের মুখের ঠিক নীচে বিশাল বড় একটি ডানা মেলে উড়ন্ত পাখির দৃশ্য তৈরি করা হয়েছে।এই প্যান্ডেলটি আমার কাছে কিছুটা জংলী আকৃতির মনে হয়েছে।প্যান্ডেলের মধ্যে প্রবেশ করেই বিশাল আকৃতির একটি যন্ত্রচালিত হংসের রথ দেখতে পেলাম।যার উপর মা সরস্বতী দেবীর দাঁড়িয়ে থাকা মূর্তি তৈরি করা হয়েছে।
হংসচালিত রথের মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট মানুষের প্রতিচ্ছবি তৈরি করা হয়েছে।যেগুলো বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছে।যেমন--ঢোল, করতাল,ড্রাম, বীণা ইত্যাদি।যেন প্যান্ডেলের ভিতরে দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা "বাজল আলোর বেণু" সেটাকেই তুলে ধরার সর্বোত্তম চেষ্টা করা হয়েছে।
এরপর প্যান্ডেলের মধ্যে বিশাল আকৃতির একটি গোলাকার বস্তু দুই হাত দিয়ে ধরে আছে।এছাড়া অনেকগুলো হাত উঁচু করে তুলে ধরা হয়েছে।এই মূর্তি দ্বারা বোঝানো হয়েছে পুরো বিশ্ব ব্রহ্মান্ডকে মা দুই হাতে ধরে পরিচালনা করছেন।আর উঁচু হাত দ্বারা যেমন আশীর্বাদকে বোঝায় তেমনি আবার সতর্কতামূলক থামানোর চেষ্টা করাকেও বোঝানো হয়েছে।
এই দুর্গামায়ের প্রতিচ্ছবিটিও দারুণ ছিল।আর মায়ের মূর্তির পিছন দিকটা বাঁশ দিয়ে তৈরি চাচের বেড়া দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়েছে।এছাড়া সুতা ও কাগজের ফুল দিয়েও সুসজ্জিত করা হয়েছে।এই বড় দেবীদুর্গার একপাশেই রয়েছে ছোট দুর্গামা।ব্রাহ্মণরা মূলত এই ছোট দুর্গা ঠাকুরকে পূজা করে থাকেন।আর পূজা মন্ডপের একপাশেই কিছু মানুষ আসর জমিয়েছে গান-বাজনার।

লোকেশন
(দেবী দুর্গামায়ের প্রতিমা)
প্যান্ডেলগুলিতে আলোর ঝলকানি দেখা যায় রাতে গেলে।আমাদের দেশে রাতের আলোকসজ্জা ও প্যান্ডেলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।কিন্তু আমরা দিনের বেলা মায়ের প্যান্ডেলগুলি দর্শন করেছিলাম।তো এটাই ছিল আমার এই বছরের পূজা দেখার অনুভূতি।
(দুর্গামা সকলের মঙ্গল করুক এই প্রার্থনাই করি)
পোষ্ট বিবরণ: 
| শ্রেণী | ফটোগ্রাফি | 
|---|---|
| ডিভাইস | Sumsung Galaxy F16 | 
| অভিবাদন্তে | @green015 | 
| লোকেশন | মেমারী,বর্ধমান | 
| আমার পরিচয় | 
|---|


















টাস্ক প্রুফ:
কমেন্টস লিংক--
https://x.com/green0156/status/1975768419808256473?t=DBjTr1gc8nR_Gt2iHJ1Gfw&s=19
https://x.com/green0156/status/1975769460339581207?t=k6C4XLxDocI0-RIuwP_6qQ&s=19
https://x.com/green0156/status/1975770722376294440?t=jU1-gkgRFvbj5y-jj-ho_w&s=19
টুইটার লিংক