তুলনা নয়, উন্নয়নই আসল সাফল্য!
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটাই সবচেয়ে গুুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ সুস্থ্য না থাকলে আপনি কোনো কিছুতেই ফোকাস করতে পারবেন। তো আমাদের জীবনটা এমন হয়ে যাচ্ছে যে সবকিছু এখন তুলনার মানদন্ডে মাপি। কে কার থেকে বেশি এগিয়ে, কে বেশি টাকার মালিক, কার কয়টা ফোন আছে, কে সোস্যাল মিডিয়াতে সফল এসব নিয়ে আমরা নিজেদের সাথে তুলনা করি। আমরা ভাবি ওদের থাকলে আমাদের নেই কেন? কিন্তু এই কেন এর উত্তর যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে আপনি এখনও বুঝতে পারেননি! একলোক কোটি টাকার মালিক। তার কোটি টাকা আছে। আপনি সেটা দেখে আফসোস করছেন। আপনার নেই কেন। কিন্তু কথা হলো আপনার গল্প আর যে ব্যক্তির কোটি টাকা আছে তার গল্প কি একই! সেটা কখনোই একই না। সবাই যার যার গল্পে প্রধান ক্যারেক্টার এর রোল প্লে করছে। আমরা ভেবে বসি আমাদের ওই লোকের মতো টাকা হলো না কেন? আমার জীবনের দোষ কোথায় হলো তাহলে!
তুলনা করতে গিয়ে আমরা নিজেদেরকেই ছোট করে ফেলি আসলে। অথচ আমাদের উচিত ছিল তুলনা না করা! বরং এটা শেখা দরকার ছিল যে আমাদের প্রতিনিয়ত নিজেদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। অথবা নতুন কিছু শিখতে হবে। আপনি কোনো স্কিল শিখেছেন সেটার ছয়মাস পরে আপনার কাজের অগ্রগতি বুঝতে পারবেন। ছোট ছোট যে পরিবর্তন নিজের এটাই প্রকৃত শিক্ষা কাউকে দেখে সেটা আসে না। কাউকে দেখে আত্নউন্নয়ন হয় না আসলে! নিজেকে পরিবর্তন করার মাধ্যমেই সেটা হয়। আর সেটা আপনাকেই করতে হবে। আপনার এটা ভাবতে হবে কেন আপনি অন্যের সাথপ নিজেকে তুলনা দিবেন। যখনই তুলনা দিতে যাবেন তখনই কষ্ট অনুভব করবেন। সে বিদেশে পড়তে যেতে পারলে আমি কেন যেতে পারবো না! তবে তুলনা ব্যপারটা কিন্তু আবার ভালো। কিভাবে ভালো বলছি! ধরুন আপনার এক ফ্রেন্ড পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করে। এখন কথা হলো আপনার বন্ধু যদি পাবলিকে পড়তে পারে তাহলে আপনি পড়তে পারবেন না!
নিজের ভিতরে একটা ক্ষোভ তৈরি হয় পাবলিকে পড়ার। এটা কিন্তু ভালো। বন্ধুর জন্য হলেও পাবলিকে চান্স পাওয়ার চেষ্টা করবো। আপনার ভিতরে পড়াশোনার আগ্রহ তৈরি হলো! যেটা বন্ধুর সাথে তুলনা না করলে হতো না। তবে তুলনাটা তখন হতাশায় রূপ নেয় যখন আপনার অবস্থা আর আরেকজন ব্যক্তির অবস্থানের মাঝে আকাশ পাতাল ব্যবধান থাকে! আর এজন্য তুলনা করতে যাবেন না। বিশেষ করে গ্রামের দিকে একটু বেশি তুলনার ট্রেন্ড টা চলে! গ্রামার চাচা চাচীরা মাঝে মাঝে বলে ওমুকের ছেলে ডাক্তার তুমি এখনও বেকার কেন। ওমুকের ছেলে বিদেশ চলে গেছে তুমি দেশে পরে আছো কেন? মানে তারা একজনের সাথে তুলনা দিবেই! এটার শিকার আমি নিজেও! একজনের সাথে আরেকজনের তুলনা দিতে সবাই ওস্তাদ! কিন্তু কথা হলো তুলনা দিয়ে লাভটা কি। একেকজনের গল্প তো একেক রকম। অন্যজনের গল্পের সাথে আমার জীবনের গল্প যে মিলবে বিষয়টা তো এমন না!
আর আমরা সেই ভুলটায় করি! শুধু শুধু তুলনা করি অন্যের সাথে। কিন্তু তুলনায় কি কোনো লাভ আছে। বরং তুলনায় নয়, উন্নয়নে লাভ! আপনি যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারেন! নিজের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে যেতে পারেন তাহলেই আপনি জীবনে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকে। অন্যদের জীবন থেকে শিক্ষা নেয়া কিভাবে আগাতে হবে নিজেকে। ঠিক সেভাবে নিজেকে তৈরি করা যেতে পারে। এজন্য আমাদের মনে রাখা জরুরি আমরা যখন নিজের জীবনকে লক্ষ্য বানাবো তখনই সবকিছু সম্ভব হবে!
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।



