ইট পাথরের শহর ছেড়ে গ্রামের সবুজ প্রকৃতির মাঝে একদিন।।

আমি আবার চলে এসেছি আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আমার আজকের ব্লগ হলো গ্রামের প্রকৃতি নিয়ে। ইট পাথরের শহর ছেড়ে গ্রামের প্রকৃতির মাঝে একদিন হারিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে গ্রামের পরিবেশে গিয়ে আমার অনেক ভাল লেগেছিল। আজকে সেই অনুভূতি নিয়ে কিছু লিখার চেষ্টা করলাম।

কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি গ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার উদ্যেশ্য হলো আমার বন্ধু এবং কলিগ একটি জমি কিনবে। জমির ব্যাপারে কথা বলা এবং স্বচক্ষে দেখার জন্য গিয়েছিলাম। এর আগে নারায়গঞ্জের বন্দর এলাকায় একটি জায়গা দেখেছিল। কিন্তুু সেখানে তাদের দলিলে জামেলা থাকার কারনে আর কিনা হয় নি। তারপর কেরানীগঞ্জে তাদের মামার এক পরিচিত জনের মাধ্যমে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে বর্তমানে ভালই জমাজমি কেনা বেচাঁ হচ্ছে।

প্রথমে আমরা ফতুল্লা বাজারের নৌকাঘাট থেকে নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে পশ্চিম দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। চারপাশে সবুজের সমারোহ দেখতে লাগলাম। হঠাৎ করে গ্রামের পরিবেশে গিয়ে মনটা রিফ্রেশ হয়ে গেল। প্রথমে যাওয়ার পথে জাহাজ নির্মান করার দৃশ্য দেখিছিলাম। তারপর বিশাল বড় মাঠ পেরিয়ে চাষাবাদের জমির আইল দিয়ে হাটতে লাগলাম। আইলের এপাশে ওপাশে অনেক ফসলের জমি দেখলাম। এমন অনেক ফসল দেখেছি যে গুলো আমি আগে কখনো দেখি নাই।

বর্তমানে সব কিছুর দাম বেশি। সবাই যদি নিজেদের খালি জমি ফেলে না রেখে যে কোন পন্যই চাষ করে তাহলে বাংলাদেশে সবজির এত সংকট তৈরী হতো না। আমাদের গ্রাামের দিকে তো কেউ চাষই করতে চাই না। সবাই বিদেশি টাকার আশায় বসে থাকে। কখন বিদেশ থেকে টাকা আসবে আর কখন সেই টাকা দিয়ে বাজার করবে। কেউ চাষাবাদ করতে চাই না। ঐ এলাকায় গিয়ে জমিতে ফসল দেখে মনটা ভরে গেছে।

Device-Redmi Note-8
Location-South Keraniganj, Time-4.30 pm

আইল দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম আমাদের দেশের এক কৃষক ভাই জমিতে কাজ করছে। কৃষক ভাই হাতে একটি ছোট কোদাল নিয়ে তার জমির আগাছা পরিষ্কার করছে। এই কৃষক ভাইদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা আহার পেয়ে থাকে।

Device-Redmi Note-8
Location-South Keraniganj, Time-4.30 pm

এগুলো হলো মসুর ডাল গাছ। বিশাল বড় এরিয়া নিয়ে মসুর ডাল চাষ করা হয়েছে। আমি এই প্রথম মসুর ডাল খেত দেখলাম। দেখে অনেক ভাল লাগলো। বাংলাদেশে যদি এভাবে মসুর ডাল চাষ করা হয় তাহলে বাহির থেকে এক্সপোর্ট করে আনা লাগে না।

Device-Redmi Note-8
Location-South Keraniganj, Time-4.30 pm

এগুলো হলো আলু খেত। বাংলাদেশে বর্তমানে আলুর কেজি চল্লিশ টাকা। কত জাগায় কত খালি জমি পড়ে আছে সে গুলোতে যদি চাষ করা হতো তাহলে দেশে এত আলুর সংকট পড়তো। সবজি চাষ করলে এলাকাটাও দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।

Device-Redmi Note-8
Location-South Keraniganj, Time-4.30 pm

এটা হলো পাম্প। এটা দিয়ে মাটির গভীর থেকে পানি উত্তলন করে জমিতে দেওয়া হয়। জমিতে যে কোন শষ্য চাষ করার প্রধান হলো পানি। পানি ছাড়া কোন কিছু চাষ করা সম্ভব নয়। আপনরা নিচের একটি ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন ধানের জমিতে পানি দেওয়া হয়েছে।

Device-Redmi Note-8
Location-South Keraniganj, Time-4.30 pm

কোন এক কৃষক ভাই তার নিজের পুকুর পাড়ে লাল শাক চাষ করেছে। এগুলো অবশ্য অনেক মানুষ শখ করে চাষ করে থাকে। লাল শাক আমার খুবই প্রিয়। আমি প্রায় সময় বাজার থেকে লাল শাক কিনে থাকি। এখনকার লাল শাকে আগের মত মজা পাওয়া যায় না। আগের লাল শাকের রসে ভাত লাল হয়ে যেত। এখনতো সব কিছুর মধ্যে ফরমালিন,সার,ক্যামিকেল,ঔষুধ দিয়ে ভরে ফেলে। ক্ষতির দিকে কেউ খেয়াল রাখে না।

আজ এপর্যন্তই বন্ধুরা। আবার দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। আজকে প্রকৃতিকে নিয়ে নিজের অনুভূতি শেয়ার করলাম। প্রকৃতিকে ভালবাসলে নিজের শরীর মন,পরিবেশ সব কিছু ভাল থাকে। প্রকৃতিকে অবহেলা করলে কেউ বাচঁতে পারবে না। কৃষি হলো আমাদের প্রাণ। কৃষি ছাড়া বাংলাদেশ বাচঁবে না,কৃষি ছাড়া বাংলাদেশের মানুষ বাচঁবে না। সবাই ভাল থাকেবন,সুস্থ থাকবেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।