বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের উপর অনলাইন গেইমের আসক্তি।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বর্তমান যুগ প্রযুক্তিনির্ভর। স্মার্টফোন, ট্যাব, ইন্টারনেট, এবং বিভিন্ন ডিজিটাল গেইম এখন তরুণদের হাতের নাগালে। কিন্তু বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে শুরু হওয়া অনলাইন গেইম এখন অনেকের জন্য নেশায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই গেইম আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, যা তাদের শিক্ষা, মানসিক স্বাস্থ্য, এবং সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে PUBG Mobile, Free Fire, Clash of Clans, Call of Duty, Mobile Legends, ও Ludo King-এর মতো গেইমগুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তরুণদের অনেকেই দিন-রাত ঘণ্টার পর ঘণ্টা এসব গেইম খেলে সময় নষ্ট করছে। ২০২4 সালের এক জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৬৫% তরুণ নিয়মিত অনলাইন গেইম খেলে, যার মধ্যে প্রায় ৩০% গেইমিং আসক্তিতে ভুগছে। গেইম কোম্পানিগুলোর আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স, র্যাংক সিস্টেম, রিওয়ার্ড ও টুর্নামেন্ট সবকিছুই তরুণদের আরও বেশি আকৃষ্ট করছে।
অনলাইন গেইমের আসক্তি শুধু বিনোদনের কারণে নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে যথা-
প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব: গেইমে জয়ী হওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা তরুণদের মধ্যে উত্তেজনা ও আত্মতৃপ্তি তৈরি করে।
সামাজিক সংযোগ: অনেক তরুণ গেইমের মাধ্যমে ভার্চুয়াল বন্ধু তৈরি করে, যা বাস্তব সামাজিকতা থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।
মানসিক প্রশান্তি: পড়াশোনা বা পারিবারিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই গেইমকে ‘স্ট্রেস রিলিফ’ হিসেবে ব্যবহার করে।
সহজ প্রাপ্যতা: সস্তা ইন্টারনেট প্যাকেজ ও স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা তরুণদের আরও বেশি আকৃষ্ট করছে।
অনলাইন গেইমের আসক্তি তরুণদের জীবনে নানা ক্ষতি বয়ে আনছে যথা
শিক্ষার অবনতি: অনেকেই পড়াশোনায় মনোযোগ হারাচ্ছে, পরীক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে।
মানসিক সমস্যা: দীর্ঘ সময় গেইম খেলার ফলে রাগ, হতাশা, ঘুমের সমস্যা, ও একাকিত্ব দেখা দিচ্ছে।
শারীরিক ক্ষতি: চোখের সমস্যা, ঘাড় ব্যথা, ও স্থূলতার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক দুর্বল হচ্ছে, বাস্তব জীবনের যোগাযোগ কমে যাচ্ছে।
অপরাধ প্রবণতা: কিছু ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল চরিত্র বা গেইমের প্রভাব বাস্তব জীবনে সহিংসতা বা অপরাধে পরিণত হচ্ছে।
এই সমস্যার সমাধানে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ও সরকারকে একসাথে কাজ করতে হবে।
প্যারেন্টাল কন্ট্রোল: বাবা-মাকে সন্তানের মোবাইল ব্যবহারে সীমা নির্ধারণ করতে হবে।
সচেতনতা সৃষ্টি: স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে গেইম আসক্তি নিয়ে সচেতনতামূলক ক্লাস ও ক্যাম্পেইন চালানো উচিত।
বিকল্প বিনোদন: খেলাধুলা, বই পড়া, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তরুণদের বাস্তব জীবনের আনন্দের সঙ্গে যুক্ত করা দরকার।
আইনি নিয়ন্ত্রণ: অনলাইন গেইমের সময়সীমা নির্ধারণ ও বয়সভিত্তিক গেইম ফিল্টার চালু করা প্রয়োজন।
অনলাইন গেইম খারাপ নয়, এটি বিনোদনের একটি মাধ্যম। কিন্তু অতিরিক্ত আসক্তি সবকিছুর মতোই ক্ষতিকর। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম যদি সময়ের সঠিক ব্যবহার না শেখে, তবে এই গেইম আসক্তি ভবিষ্যতের সমাজে এক ভয়াবহ সংকট তৈরি করবে। তাই এখনই দরকার সচেতনতা, নিয়ন্ত্রণ, এবং বিকল্প ইতিবাচক পথ খোঁজা। যাতে প্রযুক্তি আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে, আমরা প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server