নড়াইল ভ্রমণ পর্ব-১
আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভাল আছেন। প্রতিবারের ন্যায় এবারও আমি হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমার ইচ্ছে আছে নড়াইল ভ্রমণ নিয়ে কয়েকটা পর্বের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে শেয়ার করার। আশা করি প্রতিটা পর্ব আপনাদের কাছে খুবই ভালো লাগবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
কিছু ভ্রমণ এমন হয় যা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য নয় পথটা উপভোগ করার জন্য। কয়েকদিন আগেই এমন এক ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম আমি আর আমার বন্ধু। গন্তব্য ছিল নড়াইল কিন্তু মনে ছিল কেবল একটা ইচ্ছে চেনা পথ ছেড়ে নতুন পথে চলার। ভোরবেলা এখনো সূর্যের আলো পুরোপুরি উঠেনি হালকা ঠান্ডা বাতাস মুখে লাগছে। বাইকের হেডলাইটের সামনে দেখা যাচ্ছে একফালি ফাঁকা রাস্তা। আমরা দুইজনই পুরো উদ্যমে বাইক স্টার্ট করে বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য অনেক দূর কিন্তু মনটা যেন আগেই উড়ে গেছে গ্রামের ভেতরের সবুজের দিকে। প্রথমেই আমরা উঠলাম কুষ্টিয়া রাজবাড়ী হাইওয়েতে। এই রাস্তাটা আগেও অনেক গেছি তবে এবার ভাবলাম কিছুটা ভিন্নভাবে যাওয়া যাক। নতুন রাস্তা নতুন অভিজ্ঞতা এই ভাবনায়ই রওনা দিলাম। রাজবাড়ী থেকে যখন কালুখালী পাওয়ার আগে ডান দিকে একটা রাস্তা দেখলাম আমরা ভাবলাম এই তো এটাই সেই নতুন পথ রাস্তাটা তুলনামূলক সরু কিন্তু পাশের সবুজ গাছপালা আর নিরিবিলি পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছিল ঠিক পথেই আছি। সামনের রাস্তা সোজা গিয়ে ফরিদপুর কাঁচপুর ব্রিজে উঠবে এমনটাই শুনেছিলাম। কিন্তু কে জানতো এই রাস্তাই আমাদের এমন এক অভিজ্ঞতা দেবে যা কখনো ভোলা যাবে না। কিছুটা এগিয়ে যেতেই পিচঢালা রাস্তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে লাগল। তার জায়গায় দেখা দিল মাটির পথ একেবারে গ্রামবাংলার খাঁটি মেঠোপথ। দুপাশে ধানক্ষেত মাঝখানে সোজা লালচে মাটির রাস্তা। শুকনো মৌসুম হওয়ায় কাদা ছিল না তাই বাইক চালাতে কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না। বরং মনে হচ্ছিল যেন প্রকৃতির বুক চিরে আমরা চলছি একটা সিনেমার দৃশ্যের মতো।
বাতাসে কাঁচা ঘাসের গন্ধ দূরে দেখা যায় ছোট ছোট খাল তার ওপরে কাঠের সাঁকো বা পুরনো ব্রিজ। মাঝে মাঝে গ্রামের ছোট বাচ্চারা আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছিল কেউ কেউ হাত নাড়ছিল। শহরের কোলাহল থেকে এই নীরব প্রকৃতি যেন এক অন্য জগৎ। মাটির রাস্তা ধরে অনেক দূর যাওয়ার পর অবশেষে আবার পাকা রাস্তার দেখা পেলাম। সামনে লেখা ফরিদপুর মাগুরা হাইওয়ে। একটু থেমে পানি খেলাম হেলমেট খুলে চারপাশটা দেখলাম চারদিক জুড়ে সবুজ যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। তারপর চলতে থাকলাম। কিছুক্ষণ পরেই সামনে চোখে পড়ল এক বিশাল লোহার ব্রিজ কাঁচপুর লোহার ব্রিজ। সেতুর লোহার কাঠামো সূর্যের আলোয় চকচক করছিল নিচে বয়ে চলেছে নদী। ব্রিজের ওপর দিয়ে ট্রাক, প্রাইভেট কার, রিকশা, মোটরসাইকেল সবই যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমরাও ধীরে ধীরে ব্রিজে উঠলাম। ওপরে নীল আকাশ নিচে শান্ত জলধারা পাশে দূরের সবুজ গাছপালা সব মিলিয়ে মনটা ভরে গেল। মনে হচ্ছিল আমরা যেন কোনো পুরনো ভ্রমণ কাহিনির অংশ হয়ে গেছি। এটাই ছিল আমার আজকের পর্বের গল্প। তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে আবার অন্য কোন গল্পে অন্য কোন পোস্টের। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনাই রইল।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

গ্রামীন প্রকৃতি গ্রামীণ সৌন্দর্য আর সবুজ প্রকৃতি প্রত্যেক মানুষকেই বরাবরই অত্যন্ত মুগ্ধ করে তোলে। যা আপনার ক্ষেত্রেও হয়েছে। নড়াইল ভ্রমণের প্রথম পর্বে বেশ সুন্দর কিছু দৃশ্য দেখতে পেলাম আশা করি পরবর্তী পর্বগুলোতে আরো চমৎকার কিছু দেখতে পারবো।
গ্রামীণ পরিবেশ আমার ও ভীষণ পছন্দ। সবুজের সমারোহ দেখলে মনটা কেমন যেনো শীতল হয়ে যায়।আর গ্রামের ছোট ছেট বাচ্চাদের উৎসুক দৃষ্টি তাও যেনো অনেক বেশি ভালো লাগে।দুই বন্ধু মিলে চমৎকার এক ভ্রমনে সূর্য উঠার আগে রওনা দিয়ে প্রকৃতির স্নিগ্ধ সতেজ মন মাতানো পরিবেশ বেশ উপলব্ধি করেছেন তা বেশ বুঝতে পেরেছি।ধন্যবাদ জানাচ্ছি সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য।