Good bad or ugly but try to be real - অভিনয়ের পর্দা বেশিদিন স্থায়ী হয় না।

in Incredible India2 years ago (edited)
1000019137.png

আজকে আমার শীর্ষক বেছে নিয়েছি মানুষের কিছু স্বভাবের ভিত্তিতে।

কাজের জায়গা হোক অথবা ব্যাক্তিগত জীবন অভিনয় কম বেশি সকলেই করে থাকেন।
কেউ করেন অশান্তি এড়াতে, কেউ করেন ভালো সাজতে, কেউ করেন নিজের বিপদ এড়াতে, আবার কেউ অভিনয় করে সম্পর্ক গঠন করে আত্ম স্বার্থ চরিতার্থ করতে। তবে সেটা মিটে গেলে ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ে।

তবে, জানিয়ে রাখি অভিনয় করে সাময়িক সাধু সাজা যায় মানুষের কাছে কিন্তু একদিন অভিনয়ের পর্দা সরে গিয়ে সত্যি বাইরে বেরিয়ে আসবেই।

এটাকেই বলে সময়ের মার আর সত্যের জয়।
কাজেই, কাউকে প্রতারণা করে, কারোর অনিষ্ট করে নিজেরা ভালো থাকা যায় না।

কাক
এই পাখিকে আমরা সকলেই ধূর্ত পাখির বলে গণ্য করি তার স্বভাবগত কারণে, এবং তার কর্কশ স্বর কেউ পছন্দ করে না! অপরপক্ষে
কোকিল
কিন্তু তার মধুর স্বরের জন্য সমাদৃত।

যাদের বাইরে থেকে ধূর্ত মনে হয় বা যারা স্বভাবগত দিক থেকে কোনো লুকোচুরি রাখে না তারা সেই সকল প্রাণীদের চাইতে আমার মনে হয় অনেক বেশি ভালো যারা নাম এর দিক থেকে প্রচার পেলেও আসল স্বভাবে কাকের চাইতে অনেক বেশি ধূর্ত।

আমার কথাগুলো হয়তো একটু জটিল মনে হতে পারে তাই একটি বাস্তব উদাহরণ দিয়ে বিষয়টির যথার্থতা আপনাদের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস করছি।

আপনারা সকলেই জানেন কাকের বাসায় কোকিলের ডিম বেড়ে ওঠে।
কারণ অলসতার কারণে(ডিমে তা দেওয়া দীর্ঘক্ষণ বসে)কোকিল এই কাজ করে থাকে।

যেহেতু কাক আর কোকিলের ডিম দেখতে প্রায় একইরকম তাই মেয়ে কোকিল কাকের বাসার সন্ধানে থাকে যেখানে কাক ডিম পেড়ে রেখেছে।
অপরদিকে পুরুষ কোকিল, ইচ্ছে করে মা কাক কে বিরক্ত করে বাসা ভেঙে দেওয়ার ভয় দেখায়।

মা কাক পুরুষ কোকিলকে তাড়ানোর জন্য বাসা ছেড়ে পুরুষ কোকিলের পিছনে যেই ধাওয়া করে, সেই সুযোগে স্ত্রী কোকিল কাকের কিছু ডিম ফেলে তার কিছু ডিমের মাঝে নিজের ডিম পেড়ে রেখে আসে।

কাক নিজের ডিমের কাছে এসে নিজের ডিমের সাথে ভেদাভেদ করতে না পারায়, সযত্নে কোকিলের ডিম গুলোকেও লালন পালন করে যত্ন সহকারে।

ডিম থেকে বেরিয়ে কোকিল মিশে যায় নিজের দলের সাথে।

এই ঘটনায় কাকে ধূর্ত বলবেন?
যে তার সুমধুর কণ্ঠের জন্য পরিচিত না, যাকে ঝাড়ুদার পাখি নামেও জানা যায় ধূর্তের পাশাপশি, যে সমাজের আবর্জনা পরিষ্কার করে সুস্থ্য রাখে পরিবেশ। তাই আজ শহরে কাক প্রায় বিলীন। কারণ, প্রকৃতি বিষয় বিচারে আজও মানুষ অক্ষম।

এই ঘটনা আমরা সকলেই জানি কিন্তু উপরিউক্ত ঘটনা প্রমাণ করে যাকে আমরা সামনাসামনি যেভাবে দেখি, আসলে সেই মানুষগুলো ভিতর থেকে কিন্তু একইরকম হয় না, ঠিক কোকিলের মতন।

ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে যায় আত্ম স্বার্থে আঘাত লাগলে, পুতুলের মত ইশারায় না নাচলে অথবা কথায় কথায় হ্যাঁ এর সাথে হ্যাঁ না মেলাতে পারলে।

জীবনের পথে পাড়ি দিতে গিয়ে দেখেছি, শতকরা ৯৯.৯% মানুষের ভিতরে দ্বিচারিতা তবে তাদের মধ্যে অনেকেই আজও মানুষকে নিজেদের দাস বানিয়ে রাখতে মজা পান।

আমার হাসি পায় তাদের মুখ থেকে নীতিকথা শুনলে, যারা সময় মত খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছোবল মারতে একমুহুর্ত দেরি করে না।

আমার মনে হয়, আমি স্পষ্টভাষী এবং ভিতরে বাইরে এক্ এটা নিয়ে থাকাই শ্রেয়, অন্ততপক্ষে ছলনা দিয়ে আত্ম স্বার্থ চরিতার্থ করি না কোকিলের মত।

ভালো মানুষ সাজা আর ভালো মানসিকতা বহন করে অন্যের কথা ভাবার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য।
ক্ষতি করতে সিদ্ধহস্ত মানুষগুলো ভুলে যায়, পৃথিবী গোল, আজ যা অন্যের জন্য ভাববে আর করবে, কাল শতগুণে ফেরত পাবে নিজের কর্মফল।

1000019143.jpg

Pixabay

তাই আমার মনে হয় নিজে অন্তর থেকে যেরকম সেটাই সর্বসমক্ষে উপস্থাপন করা উচিত, এতে সবার কাছে প্রিয়ভাজন মানুষ না হলেও একজন নিশ্চই আমাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী আমাদের ফল দেবেন।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কখনো কারোর ক্ষতি করলে তার খেশারদ বইতে হবে আমৃত্যু, এই সত্য কাল ও অপরিবর্তিত ছিল, আজও আছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও থাকবে।

কথায় বলে পাপ ছাড়েনা বাপ কেও, কাজেই আমাদের উচিত কারোর ভালো না করতে পারলেও ক্ষতিসাধন না করা, কথাটা আমি শুধু বহুবার বলি না, দিনশেষে নিজেকে প্রশ্ন করে উত্তর নিয়ে তবেই ঘুমোতে যাই।

অস্থায়ী জীবনে কোনো কিছু নিয়েই বড়াই করা আমাদের সাজে না।
তাই পরিশেষে বলবো, সোজা সাপটা কথা বলা মানুষগুলো হতে পারে কাক, কিন্তু মিষ্টি ভাষী কোকিলের মত সুপ্ত স্বার্থ লুকোনো থাকে না তাদের মধ্যে।

ভেবে দেখবেন কথাগুলো, আর অন্তর আর বাহ্যিক দিক থেকে একরকম থাকার প্রয়াস করবেন। অভিনয় করে বেশিদিন কারোর কাছে ভালো থাকা যায় না, সত্য একদিন না একদিন সামনে চলে আসেই।

আর রইলো বাকি অর্থ আর ক্ষমতার বড়াই, সময়ের চাইতে ধনী কেউ নেই, যে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যার যার সঠিক জায়গা আর সুদ সমেদ বকেয়া মিটিয়ে তবেই ছুটি মেলে।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
Loading...

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

 2 years ago 

দিদি পুরো সমাজ আজ অভিনয়ে ভরে গেছে। এত এত অভিনয়ের ভীরে সত্যিকারের ভালো মনের মানুষকে খুজে পাওয়া বেশ দুস্কর হয় উঠেছে বর্তমান সময়ে। যারা মুখে চাটুকারিতা দেখায় আর অন্তরে বিদ্বেশ পোষণ করে তাদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়া হয়তো বেশি দূরে নয়। কাক আর কোকিলের মতন মানুষ আমাদের সমাজে দুদলে বিভক্ত। জানিনা এসবের শেষ কবে হবে।

ধন্যবাদ দিদি মূল্যবান কিছু কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইলো।

TEAM 5

Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator08.

Curated by : @enamul17
 2 years ago 

আপনার লেখার ক্যাপশনটা নজর কেড়ে নিল। চারপাশে এতো অভিনেতা অভিনেত্রী দেখি যে হাসি পায়। কিন্তু কিছুই বলি না চুপচাপ হজম করে যাই এদের অভিনয়।

কেউ ভালো মানুষের অভিনয় করে,কেউ অতি ধার্মিকের অভিনয় করে, আবার কেউ বা শুভাকাঙ্ক্ষীর অভিনয় করে।মুগ্ধ হতে হয় এদের অভিনয় দেখে।তবে আঁতে ঘা লাগলে হিংস্র দাঁত নখ সহকারে আসল চেহারা বেরিয়ে আসে।
এরা ভাবে এদের অভিনয় কেউ ধরতে পারে না। অনেক সময় অবশ্য আসলেও ধরা যায় না ধাক্কা না খাওয়া পর্যন্ত।
তবে যাই হোক না কেন খুব বেশি দিন স্হায়ী হয় না এই অতি ভালো মানুষী।
স্পষ্টভাষীদের হয়তো মানুষ হয়তোবা খুব একটা পছন্দ করে না, কিন্তু আমার মতে মানুষ হিসেবে এরাই সেরা।
চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপনি।
ভালো থাকবেন সবসময়।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি, ”আমাদের জীবন একটি রঙ্গমঞ্চ” এখানে আমরা সবাই অভিনয় করছি কিন্তু এমন এমন অভিনেতা আছে যাদের মুখে থাকে এক কথা অন্তরে থাকে অন্য কথা ।

আমরা প্রতিনিধি যে আয়নায় আমাদের সৌন্দর্য দেখি সেই আয়নাতে যদি আমাদের অন্তরের প্রতি ছবি দেখা যেত তাহলে হয়তোবা সেই সকল লোক তাদের আসল রূপ দেখে নিজেই ভয় পেয়ে যেত ।

কাক যতই চেষ্টা করুক না কেন সে কিন্তু কোকিলের মত কখনোই মিষ্টি সুরে গান করতে পারে না ।এই কোকিল কন্ঠের পিছনে লুকিয়ে থাকে তা তার চালাকি আমরা কেউ ধরতে পারি না ।কাক ও কোকিলের এই গল্পটা থেকে আমরা আজকে অনেক কিছু শিখলাম ।কথা আছে, “ দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা”। তাদের মিষ্টি কথায় সবাইকে ভুলিয়ে দেয় ।যারা সহজ-সরল তারা মিথ্যাকে সত্য বানাতে পারে না এবং মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে পারে না
আমাদের সমাজে দুমুখি লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। তারা মিথ্যাকে খুব সহজে সত্য বলে দেয় এমনকি তারা মুখে ভালোবাসবে অন্তরে তাদের অনেক তিক্ত থাকবে ।যা বিপদের সময় দেখা যায় তাদের সেই মিষ্টি কথা গুলো নিমিষের ভিতরে তিক্ত তায় পরিণত হতে পার।

সৃষ্টিকর্তা কিন্তু এখন আর পরকালের শাস্তি জন্য অপেক্ষা করেন না ।তিনি ইহকালই ব্যক্তির কর্মফলের শাস্তি দিয়ে থাকেন ।
পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগবে এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম ।নতুন পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম ।

 2 years ago 
  • সরলতা বা বিশ্বাস যাই বলি না কেন,তা কিন্তু কৎষিত কাকের মধ্যে রয়েছে, প্রক্ষান্তরে, মিস্টি বা মুধুর কন্ঠস্বরের অধিকারী কোকিলে কিন্তূ সেই গুন নেই।

  • যেহেতু তার মধ্যে ধৈর্য্য ও সমর্থ কিছু ই নেই,তাই নিজের বিবেক কে বিসর্জন দিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা বোধ করেনি সে।তার এই ছলনার জন্য ই কিন্তূ তার মুধুর কন্ঠস্বরের জন্য সর্বদা সমাদৃত হয়েও তার ছলনার কথা ও কিন্তূ সর্ব লোকে জানে।

  • তাই আমাদের ভালো দিকগুলোর জন্য সমাদৃত হওয়ার জন্য সর্ব প্রথমে যে কাজ টি করতে হবে তা হলো ছলনা পরিহার করতে হবে।
    খুব ভালো লাগলো আপনার শিখন মুলক গল্প
    টি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.033
BTC 116555.50
ETH 4489.25
SBD 0.86