ভয়! (Fear!)

in Incredible India8 days ago
1000050921.png

আজকের শীর্ষক দেখে কেউ ভেবে বসবেন না আমি ভূত প্রেত ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হাজির হয়েছি!

বরঞ্চ আজকে একজনের সাথে কথা বলে যেটা উপলব্ধি করলাম সেটাই শীর্ষক হিসেবে বেছে নিয়েছি।

মানুষের জীবনে অনেক ধরনের শত্রু অথবা শত্রুতার সন্মুখীন হতে হয় বিভিন্ন কারণে, তবে আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন মানুষের সবচাইতে বড় শত্রু কি?

  • উত্তরে আমি বলব ভয়!

দৈনন্দিন জীবনে পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হলো আমাদের মধ্যে উপস্থিত ভয়।

আর এই একটি অনুভূতি যেটা আমাদের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় বাধা সৃষ্টি করে।

একটু লক্ষ্য করে দেখবেন বেশ কিছু মানুষ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীল, কারণ তারা সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান।

এরকম আরো উদাহরণ আছে, সেগুলো আজকে লেখার মাধ্যমে তুলে ধরবার প্রয়াস করবো, তবে অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না, কোন ভয় আপনার জীবনের সবচাইতে প্রতিবন্ধকতার কারণ!

Fear(ভয়)

  • শৈশবে মাতা পিতাকে ভয়!

  • একটু বড় হবার পর পরীক্ষার ভয়!

  • আরেকটু বড় হলে, জীবনের আগামী পথ সঠিক নির্বাচন করতে গিয়ে ভয়!

  • নিজের আগে পরিচিত বন্ধু বান্ধব জীবনে সফল হয়ে গেলে, বাড়িতে খোঁচা শোনার ভয়!

  • আরো বড় হলে কিছু মানুষের সংস্পর্শে এসে তাদের সাথে আগামী পথ সুগম হবে কি হবে না? সেই ভয়!

  • অবশেষে কিছু মানুষ কথার খোঁচার ভয়! যেখান থেকে জীবনের অন্ত পর্যন্ত নিস্তার নেই!

1000050937.jpg
ভয় নয়, উৎসাহ দিয়ে একটি শৈশবের ভিত মজবুত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করুন!

এত কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে যেটা নিয়ে কথা বলবো সেটা হলো, সেই মানুষদের সবচাইতে ভয় পাওয়া উচিত যারা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবার পরিবর্তে প্রতিনিয়ত এটা বোঝানোর প্রয়াস করেন, অপর ব্যাক্তির মধ্যে গুণের অভাব, তার দ্বারা কিছুই হবে না,
অন্যরা অনেক বেশি যোগ্য ইত্যাদি।

মুশকিল হয় তখন যখন উপরিউক্ত কথাগুলো কোনো কাছের মানুষের থেকে আসে!

ভয় মানুষের সবচাইতে বড়ো শত্রু!
আর যেসকল মানুষ ভয়কে জয় করবার প্রয়াস না করে, কিছু মানুষের নঞর্থক কথাকে বেদবাক্য মনে করে নিজেদের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন, তাদের জন্য আজকের এই লেখা।

ভয়ের সবচাইতে বড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো, এটি আমাদের আত্মবিশ্বাসের উপর সবচাইতে বেশি আঘাত হানে!

কালকে পর্যন্ত আপনি যে বিষয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, শুধুমাত্র কাছের মানুষের নঞর্থক প্রতিক্রিয়ার কারণে আজকে আপনার মানসিকতার আমূল পরিবর্তন হয়েছে।

যেদিন, আমরা ভয়কে জয় করতে শিখবো, সেদিন দেখবেন কেউ আপনাকে কোনো বিষয়ে হারাতে পারবেন না।

আমি কোনো বিতর্কিত বিষয় উল্লেখ করতে চাই না, তবে অনেক সময় দেখেছি, তুলনা, ঈর্ষা, এবং কটূক্তি ইত্যাদি যেগুলো আমাদের মানসিক দিকগুলোর উপরে প্রভাব ফেলতে পারে, কাছের পরিচিত মানুষ সেই বিষয়গুলোর উপর অধিক আঘাত হানে।

একটা উদাহরণ এখানে না দিলেই নয়, তাই নাম না করে বিষয়টি উল্লেখ করছি।

আমার খুব কাছের একজন আমাকে ফোন করে তাদের সাথে বেশকিছু অলৌকিক ঘটনার কথা জানালেন।
মানে ওই ভূত প্রেত ইত্যাদি সম্পর্কে(তারা তাদের কাছের মানুষের উপস্থিতি উপলব্ধি করেন), এবং ফোন রাখার আগে আমাকে জানাতে ভুললো না, আমি একলা থাকি, রাতে আমার কি ভয় করে না? তাদের বেশ অবাক লাগলো আমি কিভাবে একলা থাকি!

তার মানে আমিও তো অনেক আপনজন হারিয়েছি, সেটা সে ভালই জানে!
সেদিন আমার বেশ হাসি পেয়েছিল, কারণ এই ধরনের মানুষ নিজেদের সর্বজ্ঞানী ভাবেন, তাই অন্যের উন্নতিতে বাধ সাধেন প্রায়শই বিভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু নির্বাচন করে, ভয় দেখিয়ে! এগুলো আসলে ঈর্ষার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া আমার অন্য কিছু মনে হয় না!

আমি জীবনের একটা দর্শন মেনে আগেও চলেছি আর এখনও চলছি, যেটি ভবিষ্যতেও অপরিবর্তিত থাকবে।
সেটা হলো, আমি যদি সজ্ঞানে কারোর কোনো ক্ষতি সাধন না করি, সৃষ্টিকর্তা আমাকে রক্ষা করবেন নিশ্চই।

আরেকটি বিষয় আমি কি পারি, কতটা পারি, সেটা নিশ্চই অন্য কেউ নির্ধারণ করে দিতে পারে না, তাই না?

1000050842.jpg
অন্যের পরামর্শে সূর্য্য উদিত এবং অস্তাচলে যায় না!

আমাদের মধ্যে যদি সফলতার ক্ষিদে থাকে তাহলে প্রতিকূলতাকে জয় করবার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
আজকেও আমাকে অন্য একটি বিষয় নিয়ে ভয় দেখিয়ে আত্মবিশ্বাস ক্ষুণ্ন করবার প্রয়াস করেছেন সেই পরিচিত মানুষ!

আমকে নড়ানো একটু কষ্টসাধ্য, সেটা খুব কম মানুষ জানেন, তাই অবনমন আমার উপরে চেপে বসতে পারে না ততক্ষণ যতক্ষণ আমি নিজে না চাইছি।

আজকের লেখাটি লিখছি কারণ, প্রতিবেশী যাদের সমাজের অঙ্গ বলে আমরা মনে করি, তাদের চাইতেও ঘরের পরিচিত মানুষগুলো আমাদের উৎসাহ দেবার পরিবর্তে ভয় বেশি দেখিয়ে থাকেন, একটু লক্ষ্য করে দেখবেন!

1000050841.jpg
বৃক্ষের ন্যায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, ভয় নামক ঝড় তুফান কে উপেক্ষা করে!

সেই ভয়কে আমরা কতখানি গ্রহণ করবো আর কতখানি বর্জন সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে নিজেদের উপরে।

পরিশেষে বলবো, নিজেকে নিজের চাইতে বোধহয় কেউ বেশি চিনতে পারে না, তাই কর্ম সঠিক রেখে, নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়ে যান, যদি হেরে যান তাহলে শিখবেন, আর জিতে গেলে অন্যদের শেখাতে পারবেন।

তবে, উভয় ক্ষেত্রেই ভয়কে নিজের মধ্যে জায়গা দিলে চলবে না।
না হারলে জেতার গুরুত্ব হারিয়ে যাবে, তাই কখনও কখনও হেরে যাবার প্রয়োজন আছে!

আপনার চেষ্টাকে সৃষ্টিকর্তা পরীক্ষা করছেন এটা মনে করেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, তবেই ভয়কে জয় করা সম্ভব।

একবার ভেবে দেখবেন, জীবনে ভয় পেয়ে কত সুযোগ হাতছাড়া করেছেন অন্যের কথার ভিত্তিতে, অন্যের থেকে সাজেশন নিতে গিয়ে, অন্যের কথা বিশ্বাস করে!

এর চাইতে যদি ভয় পেটে পিছিয়ে না গিয়ে লড়াই করে হেরে যাওয়া যেত তাহলে মনকে সান্তনা দেবার জায়গা থাকতো অন্ততঃপক্ষে আমি চেষ্টা করে হেরেছি, আর সেই হার আমাদের অভিজ্ঞতার জোগান দিয়েছে।

তাই ভয়কে জয় করা শিখুন, দেখবেন আত্মবিশ্বাসে ভর করে সফলতা একদিন ধরা দেবেই।
সেদিন উচিত জবাব দিতে পারবেন তাদের, যারা আপনাকে ভয় দেখিয়ে আপনার আত্মবিশ্বাস ক্ষুণ্ন করেছিলেন।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 7 days ago 

এই পোস্টটি পড়ে যতটুকু বুঝতে পারলাম, ভয় এবং আত্মবিশ্বাসের শক্তি নিয়ে খুবই প্রেরণাদায়ক একটি লেখা। আপনে খুব সুন্দরভাবে ভয়ের নানা ধরন এবং তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ভয়কে জয় করা এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যা আমার কাছে পড়ে খুব ভালো লেগেছে।

আপনার পোস্টটিতে বলা ছিল কে কোন ধরনের ভয় পায় তা লেখার জন্য।

আরেকটু বড় হলে, জীবনের আগামী পথ সঠিক নির্বাচন করতে গিয়ে ভয়!

আপনি উপরের যে ভয়ের কথাটি লিখেছেন, আমার কাছে মনে হয় আমি এই ভয়েতেই ভুক্তভোগী।

আমি আপনার মতন জিন ভুতের কোন ভয় পাই না কেননা আমি বিশ্বাস করি মানুষই সবচাইতে বড় ভূত, ভয় এবং আত্মবিশ্বাসের এই সংলাপ খুবই অনুপ্রেরণামূলক। সত্যিই, জীবনে কোন প্রতিবন্ধকতা যখন আসে, তখন নিজের আত্মবিশ্বাসই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। আপনার জন্য শুভকামনা রইল দিদি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন!

Loading...
Loading...
 7 days ago 

একদম সত্য কথা বলেছেন দিদি। ভয় মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু, যা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে দেয় এবং জীবনে বড় কিছু করার পথে বাধা সৃষ্টি করে। ছোটবেলা থেকেই সমাজ, পরিবার ও আশপাশের মানুষ আমাদের মধ্যে নানা রকম ভয় ঢুকিয়ে দেয়—পরীক্ষার ভয়, ব্যর্থতার ভয়, অন্যের মতামতের ভয়। অথচ, যারা সত্যিকার অর্থে জীবনে সফল হয়েছেন, তারা ভয়কে জয় করেই এগিয়ে গেছেন।

আপনার লেখার প্রতিটি বাক্যে বাস্তবতার ছোঁয়া আছে। বিশেষ করে, কাছের মানুষের নেতিবাচক মন্তব্য কতটা গভীর প্রভাব ফেলে, সেটা দারুণভাবে তুলে ধরেছেন। অনেকেই এই পরিস্থিতির শিকার হন, কিন্তু সবাই সেটা বুঝতে পারেন না।

সত্যি বলতে, ভয় আমাদের থামিয়ে রাখার জন্য নয়, বরং নিজেকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ তৈরি করে। যে মুহূর্তে আমরা ভয়কে জয় করতে শিখবো, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা নিজের লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে পারবো।আপনার এমন বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে আসা কথাগুলো মানুষকে নতুনভাবে ভাবতে শেখায়। আপনার এই লেখা অনেককে সাহসী করে তুলবে।

 22 minutes ago 

আপনার শীর্ষ দেখে প্রথম অবস্থায় আমি নিজেও মনে করেছিলাম, হয়তোবা এই ধরনের কোন লেখা আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। তবে যখন আপনার পোস্ট পরিদর্শন করা শুরু করলাম, তখন বুঝতে পারলাম আসলে ভয় নিয়ে আপনি আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন। আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের সমাজ কিংবা আমাদের পরিবারের মানুষগুলো, আমাদেরকে উৎসাহ দেয়ার চাইতে ভয় দেখায় অনেক বেশি।

বেশ কিছু কারণ আপনি আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। আসলে ভয় হচ্ছে আমাদের মনের একটা অন্যরকম অনুভূতি, অনেকে চাইলে এটা অনুভব করে আবার অনেকে চাইলে অনুভব করে না। আমি আগে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জিনিস নিয়ে অনেক বেশি ভয় পেতাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এখন আর ভয় পাই না। এখন চিন্তা করি যা হবে সেটা সামনে দেখা যাবে। অন্তত আরেকবার এগিয়ে দেখি কি হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.22
JST 0.030
BTC 83230.04
ETH 1871.63
USDT 1.00
SBD 0.79