এগ্ চাউমিন
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজ আবারও চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। অনেকদিন হয়ে গেল আপনাদের সাথে কোন রেসিপি শেয়ার করা হয়ে ওঠেনি। আসলে এখন প্রায় প্রতিদিনই কলেজ যেতে হচ্ছে যার ফলে রান্না করার সেরকম সময় হয়ে উঠছে না। মাঝে মাঝে সময় পেলে যা রান্না করি আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি।
ইংলিশ মিডিয়াম স্টুডেন্টদের সদ্য পরীক্ষা শেষ হলো। তাই তারা এক সপ্তাহের জন্য ছুটি নিয়েছে। তাই আমি আজ বিকেলে বাড়িতেই ছিলাম। যেহেতু সচরাচর বিকেলবেলা আমি বাড়ি থাকি না তাই আমার ভাইপো আমাকে বিকেলবেলা বাড়িতে দেখে জিজ্ঞাসা করল, "ও পিন তুমি আজকে পড়াতে যাবা না?" আমি বললাম, "আজকে দাদারা পড়বে না। তাই আজকে আমি বাড়িতেই থাকব।" আমার কথা শুনে দেখলাম আমার ভাইপো বেশ খুশি হল। ইদানিং দেখছি ও আমাকে একটু বেশিই পছন্দ করছে। বাচ্চাদের মন তো, যখন যে একটু বেশি আদর করবে ওরা তাদেরকেই বেশি পছন্দ করবে। যেহেতু ও এখন স্কুলে ভর্তি হয়েছে, তাই স্কুলের হোম ওয়ার্ক করানোর সময় মায়ের কাছ থেকে বেশ ভালোই বকুনি খায় আর আমি মাঝে মাঝে ওকে বকুনির হাত থেকে ওকে বাঁচাই , তাই আজকাল আমাকে খুব পছন্দ করে।
তাই আজকে যখন বাড়িতেই ছিলাম ভাবলাম ওর জন্যই কিছু একটা রান্না করা যাক। ও চাউমিন, পাস্তা এগুলো খেতে খুব ভালোবাসে। যদিও প্রতিদিন দেওয়া হয় না। তবে মাঝে মাঝে তো দেওয়া যেতেই পারে। বাড়িতে চাউমিন ছিল। তাই ভাবলাম ওর জন্যই মানে বাড়ির সকলের জন্যই একটু চাউমিন রান্না করা যাক।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমরা কিভাবে আমি আজকে রেসিপি টা বানিয়েছিলাম----
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | চাউমিন | ১প্যাকেট |
২ | কাঁচা লঙ্কা | পরিমাণ মতো |
৩ | নুন | স্বাদ অনুযায়ী |
৪ | হলুদ | পরিমাণ মতো |
৫ | রিফাইন তেল | পরিমাণ মতো |
৬ | সয়া সস্ | ২ চামচ |
৭ | টমেটো সস | ৩ চামচ |
৮ | পেঁয়াজ | ২ টো |
৯ | বিনস্ | ১০০গ্রাম |
১০ | ম্যাগি মশলা | হাফ প্যাকেট |
১১ | ডিম | ১টা |
ধাপ ১ :
প্রথমেই একটি পাত্রে পরিমাণ মতো জল নিয়ে গরম হতে বসিয়ে দিয়েছিলাম। জল কিছুটা গরম হয়ে এলে তার মধ্যে সামান্য লবণ, হলুদ ও এক চামচ রিফাইন অয়েল দিয়ে দিয়েছিলাম। এর ফলে চাউমিন এর মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ প্রবেশ করতে পারে এবং চাউমিনগুলো অনেক বেশি ঝরঝরে হয়।
ধাপ ২:
অন্যদিকে জল ফুটতে ফুটতে পরিমাণ মতো পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা ও বিনস্ কুচি কুচি করে কেটে নেব।
ধাপ ৩ :
অন্যদিকে জলটা ভালোভাবে ফুটিয়ে নেব।
ধাপ ৪ :
এরপর তার মধ্যে চাউমিনগুলো দিয়ে দেব ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়ার জন্য।
ধাপ ৫ :
অল্প সময়ের মধ্যেই চাউমিনগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে দুই একটা চাওমিন তুলে হাত দিয়ে টিপে দেখতে হবে সেগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়েছে কিনা। খুব নরম করা যাবে না তাতে কড়াইয়ে লেগে যেতে পারে।
ধাপ ৬ :
এরপর চাউমিনগুলো একটা ঝাজরি থালার মধ্যে ঢেলে জল ঝড়িয়ে নেব এবং ঠান্ডা জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেব। ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিলে আঠা আঠা ভাবটা কমে যাবে। তার ফলে পরবর্তীকালে কড়াইতে লেগে যাবে না।
ধাপ ৭:
এরপর তার মধ্যে সামান্য লবণ ও হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নেব। এর ফলে চাউমিনে লবণের পরিমাণটা ঠিকঠাক থাকবে। বাড়িতে চাউমিন রান্না করলে আমি সামান্য হলুদ ব্যবহার করে থাকি। কেউ চাইলে হলুদ টাকে বাদ দিয়ে রান্না করতে পারেন।
ধাপ ৮:
এবার ওভেনে কড়াই চাপিয়ে কড়াই গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে সামান্য রিফাইন অয়েল দিয়ে দিতে হবে। তেল গরম হয়ে এলে তার মধ্যে একটি ডিম ফাটিয়ে দিতে হবে। সামান্য লবন অ্যাড করতে হবে। এরপর ঝুড়ঝুড়ে করে ভেজে নিতে হবে।
ধাপ ৯:
এরপর কড়াইতে পুরো রান্নাটা সম্পূর্ণ করার জন্য যেটুকু তেলের প্রয়োজন দিয়ে দিতে হবে। তারপর তেল গরম হলে তার মধ্যে বিনস্ গুলো দিয়ে একটু ভেজে নেব।
ধাপ ১০:
এরপর তার মধ্যে কেটে রাখা পেঁয়াজ ও লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। তার মধ্যে সামান্য লবণ অ্যাড করেছিলাম। লবণ দেওয়ার ফলে পেঁয়াজগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই নরম হয়ে আসে।
ধাপ ১১:
এরপর পেঁয়াজগুলোকে বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ভালোভাবে ভেজে নেব।
ধাপ ১২:
এরপর লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রাখা চাউমিনগুলো তার মধ্যে দিয়ে দেবো এবং ভালোভাবে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করব।
ধাপ ১৩:
এরপর চাউমিনগুলো একটু ভেজে নিয়ে তার মধ্যে পরিমান মতো সয়াসস্ ও টমেটো সস দিয়ে দেব।
ধাপ ১৪:
এরপর ভালোভাবে নাড়িয়ে সসগুলোকে চাউমিন এর সাথে মিশিয়ে দেবো।
ধাপ ১৫:
এরপর তার মধ্যে সামান্য ম্যাগি মসলা দিয়ে দেব। ব্যক্তিগতভাবে এই ম্যাগি মসলা আমার বেশ ভালো লাগে। তাই পাস্তা হোক বা চাউমিন আমি কিন্তু সামান্য ম্যাগি মসলা ব্যবহার করতে ভালোবাসি। এটা একদমই অপশনাল । আপনারা চাইলে ব্যবহার করতে পারেন বা নাও করতে পারেন।
তাহলেই রেডি হয়ে যাবে আমাদের আজকের এগ চাউমিন।
প্রধানত যার জন্য রান্না করা হয়েছিল সে কিন্তু অনেক তৃপ্তি করে খেয়েছে। যা দেখে মনে হলো আমার রান্না করাটা সার্থক হয়েছে। বাচ্চারা পেট ভরে খেলেই তো ভালো লাগে। তাই না?
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আপনারা সকলে জানাবেন আপনারাও কি এইভাবেই এই চাউমিন রান্না করেন এবং আমার রান্না আপনাদের কেমন লাগলো সে কথাও জানাতে ভুলবেন না। আগামীকাল আবার অন্য কোন গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আপনি যেহেতু সচরাচর বাড়িতে থাকেন না তাই আপনার ভাইপো আপনাকে দেখে জানতে চাইলো আপনি আজকে কেন বাড়িতে যাই হোক আপনি তাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলেছেন ছোট বাচ্চারা আদর যেখানে পাবে সেখানেই তাদের মায়া বাড়িয়ে দেয় আজকাল আপনার প্রতি তার মায়া অনেক বেশি।
আপনি চমৎকারভাবে চাওমিন তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আসলে চাওমিন আমি নিজে অনেক বেশি পছন্দ করি বিশেষ করে মাংস দিয়ে রান্না করলে আমার কাছে বেশ ভালই লাগে অসংখ্য ধন্যবাদ নিজের ভাইপোকে খুশি করার জন্য চাওমিন তৈরি করা এবং তার পদ্ধতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।
ছোট বাচ্চারা যেখানে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা এবং হাসি খুশি পায় সেখানেই তারা থেকে যায়,, বিশেষ করে আপনার পোস্ট পড়ে এটা বুঝতে পারলাম তার মায়ের কাছে সে আজ কয়েক দিন ধরে বকুনি শুনছে,, যে বিষয়ে আপনি তাকে অনেক সহযোগিতা করছেন বলে সে বকুনির হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছে,, তার জন্য আরো আপনাকে বেশি পছন্দ করছে এটাই স্বাভাবিক,, যাই হোক আপনি তার জন্য চাউমিন তৈরি করেছেন এবং তার পদ্ধতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন,, এটা দেখে সত্যিই আমি আনন্দিত এবং এটা খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে বলে আমার মনে হয়,, কারণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর হয়েছে।