হনুমান জয়ন্তীর দিন - দ্বিতীয় পর্ব
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গতকালকে হনুমান জয়ন্তীর পুজো উপলক্ষে প্রথম পোস্ট শেয়ার করেছিলাম, আজকে তারপর থেকে শুরু করছি।
হনুমান জয়ন্তীর দিন অর্থাৎ 12 ই এপ্রিল স্কুল থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে নিয়েছিলাম। জানা ছিল যে সন্ধ্যেবেলার দিকে পুজো দিতে যাব। তাই একটু রেস্ট নেওয়া প্রয়োজন ছিল। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সেজেগুজে তৈরি হয়ে নিলাম। এই গরমের মধ্যে সাজুগুজু করতে বেশি ভালো লাগে না ।শুধুমাত্র একটু কানের দুল ,লিপস্টিক আর চোখে কাজল পড়ে থাকি,এছাড়া আর কিচ্ছুটি নয়।
আমার পাশের বাড়ির ভাই অর্থাৎ শুভ যার কিছুদিন আগে জন্মদিন পোস্টে আমি শেয়ার করেছিলাম ,তার সাথেই আমি বাইকে করে চলে গেলাম হনুমান মন্দিরে। আমার বাড়ি থেকে গাড়িতে মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা। ওর সাথে যাওয়ার পথেই দেখি প্রচন্ড লাইন পড়েছে। প্রথমে লাইন দেখে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।পরে গিয়ে বুঝলাম ওটা প্রসাদ নেওয়ার লাইন।
ভাইয়ের সাথে বাইকে হনুমান মন্দিরের দিকে
মন্দিরের পাশেই দোকান আছে পুজোর জিনিস কেনাকাটার জন্য। সেই দোকান থেকে আমি আর ভাই তিনটে প্যাকেট লাড্ডু কিনলাম। প্রত্যেক প্যাকেট এ বারোটা করে লাড্ডু ছিল। সাথে কিনলাম ধূপকাঠি আর মোমবাতি। তিন প্যাকেট লাড্ডু তিন বাড়ির জন্য। যেহেতু ভাইও পূজা দিচ্ছে তাই । আর আমাদের বাড়ির একটা আর আমার পার্টনারের বাড়ির একটা।
তারপর মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করলাম ।তখনও হালকা হালকা ভিড় ।কিন্তু দেখলাম ব্রাহ্মণ এখনো আসেনি। লোকজনের কাছ থেকে শুনলাম সকাল থেকে ব্রাহ্মণ পূজা করতে করতে ভীষণ ক্লান্ত। তাই এই পুজোটা একটু দেরি করেই শুরু হবে। দেখতে পেলাম ওখানে তখনো জোগাড় চলছে।
পুজোর জন্য মিষ্টি , ধূপকাঠি ,মোমবাতি
মোটামুটি তখন ৬. ৪০ বাজে সন্ধ্যাবেলা। যেহেতু ব্রাহ্মণ আসেনি ।তাই আমি আর ভাই মিলে ঠিক করলাম আমরা বাকি কাজগুলো সেরে আসি ।ওরও কিছু দরকারি কাজ ছিল আর আমারও কাজ ছিল। তাই আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে মার্কেটের দিকে গেলাম।ও আমাকে মার্কেটে নামিয়ে দিয়ে গাড়ির পেট্রোল ভরতে গেল।
এটা আজকের ছবি, আজকে খুব গরম পড়েছে বলে মা ওকে জামা পড়িয়ে রাখেনি
আর এদিকে আমি গোপালের জন্য তিনটে টেপ জামা কিনে নিলাম। গরমে পড়ার জন্য আমার ছোট্ট গোপাল ঠাকুর এর ছোট্ট ছোট্ট জামা দেখে আমার খুবই ভালো লাগছিল ।আসলে জামাগুলো সেদিনকে আমি স্কুল থেকে ফেরার পথে দেখেছিলাম ,কিন্তু সেদিনকে টোটো তে থাকায়, কিনে উঠতে পারিনি। তাই সেদিনকে কিনে নিলাম।। মাত্র ১০ টাকা করে জামাগুলো ।আসলে আমার গোপাল ঠাকুরটা খুব ছোট ।তাই ওর জিরো সাইজ লাগে।
গোপালের জামা ,এরকম আরো কিনেছি অন্য কালারের
এছাড়া আমার দর্জির দোকানে কাজ ছিল। কিন্তু দর্জির দোকান দেখলাম সেদিনকে বন্ধ রয়েছে। তাই ভাইয়ের সাথে আবার চলে গেলাম গোয়ারী বাজারে। হনুমান জয়ন্তীর পরের দিন অর্থাৎ ১৩ই এপিল আবার নীল পুজো ছিল। তাই মা লিস্ট ধরিয়ে দিয়েছিল বাজার থেকে কি কিনতে হবে। এর আগে পূজোর কেনাকাটা নিয়ে গোয়ারী বাজারে যাওয়ার কথা আমি আপনাদের জানিয়েছি, আমাদের কৃষ্ণনগরে সবথেকে পুরনো বাজার এটা। এখানেই সাধারণত আমরা পুজোর জিনিসপত্রের কেনাকাটা করে থাকি।
ভাইকে নিয়ে তাই বাজারে চলে গিয়েছিলাম ।যাওয়ার পরে বাইক একদিকে সাইড করে রাখার সাথে সাথেই দেখলাম রাস্তায় কতজন বসেছে জিনিসপত্র নিয়ে। শিব পূজোতে যা যা সামগ্রী লাগে অর্থাৎ আতা, বেল, কাঁটা ফল, ধুতরা ফুল, আকন্দ ফুলের মালা, শসা, ফুলের মালা ,আম এরকম অনেক কিছু নিয়ে কিছু জন বসেছে। তাদের কাছ থেকে আমি সেরকম নিয়ে নিই নি । বাজারের ভিতর কিছু দোকান আসলে আমার পরিচিত ওখান থেকেই প্রত্যেকবার কিনে থাকি। তাই আমি বাজারে ঢুকে গেলাম ।বাজারে ঢুকে গিয়ে প্রথমে পাঁচ রকম ফল নিয়ে নিলাম ,আর বাকি যাবতীয় সমস্ত কিছুই বাড়িতে ছিল।
বেলটা শুধু কিনেছিলাম ,কিনে নিয়েছিলাম খেজুর, তরমুজ । আর দশকর্মার দোকান থেকে কর্পূর। আসলে কর্পূরটা শুধু নীল পুজো উপলক্ষে নয় ।আমাদের বাড়িতে কর্পূর গাদা গাদা কেনা হয়। সারা বছর চলে যায় একবার কিনলেই। খোলা কর্পূর এর ঢিবি ওরা ওজন করে দেয়। এই কর্পূর গুলোতে একেবারে ভেজাল থাকে না।।
দশকর্মার দোকানে প্যাকেটের মধ্যে যে ছোট্ট চৌকো মত কর্পূর দেয় ,সেটা কিন্তু একচুয়ালি কর্পূর নয় ,ওটা মোম। এরকম টুকিটাকি কেনাকাটা হয়ে যাওয়ার পর আমি ভাইয়ের সাথে আবার বাজার থেকে বেরিয়ে আসলাম। তারপরে আবার হনুমান মন্দিরের দিকে চলে গেলাম। আজকে এখানেই শেষ করছি, আগামীকাল হনুমান জয়ন্তী নিয়ে শেষ পোস্ট করব।
অনেকদিন পর আপনার সুন্দর পোস্ট দেখতে পেরে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে দিদি। আমি অনেকদিন আপনার কথা স্মরণ করতাম কিন্তু আপনি এখানে কাজ করেন দেখে ভালো লেগেছে। এখানে বাংলাদেশীরা কি কাজ করতে পারে? জানাবেন।